নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে রোগ বালাই বেশি হয়ে থাকে। মানুষ, হাঁস- মুরগি, গরু-ছাগলের সুস্থ থাকা নির্ভর করে মূলত যত্নের উপর। পোল্ট্রি খাতে খামারিরা বাড়তি যত্ন নিতেই অবকাঠামো উন্নয়নের দিকে নজর দিচ্ছেন বেশি। আধুনিক খামার ব্যবস্থাপনায় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও মুরগি সুস্থ রাখতে ব্যবহার করছেন আনোয়ার সিমেন্ট শীট।

নওগাঁর মহদেবপুর উপজেলার রাইগাঁ ইউনিয়নের সারতা এলাকার খামারি মো: শাজাহান আলী। ২৮ হাজার সোনালী মুরগি রয়েছে তার খামারে। খামারে ব্যবহার করেছেন আনোয়ার সিমেন্ট শীট। তিনি বলেন, মুরগিকে ঠান্ডা লাগলে ঘড়-ঘড় করে, কাশি দেয়, হা করে নিশ্বাস নেয়। শীতকালে মুরগির ঠাণ্ডাজনিত রোগ প্রতিরোধ আর গরমে হিট স্টোক থেকে রক্ষা করতেই আনোয়ার সিমেন্ট শীট লাগিয়েছি। মুরগি তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না, আবার অধিক ঠান্ডায় মারা যায়।

অভিজ্ঞ এ খামারি বলেন, গরমে ও শীতে উভয় সময়ই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে খুব ভালো কাজ করে এই শীট। আমার খামারে এর আগে গরমে ৪ হাজার মুরগি মারা গিয়েছিল। পরে বন্ধুর পরামর্শে আনোয়ার সিমেন্ট শীট লাগিয়েছি। আল্লাহর রহমতে ভালো ফল পাচ্ছি। আবার দামে স্টিলের শীটের চেয়ে খুব বেশি নয়। এটি ব্যবহারে নিশ্চিত সফলতা আসবে। কারণ রোগ না হলেই লাভ হবে। আমার ভাস্তে দুলালও ৩ হাজার মুরগির খামার করেছে এই আনোয়ার সিমেন্ট শীট দিয়ে।

ইউনিয়নের কুড়াইল সরদারপাড়া গ্রামে পোল্ট্রি খামারি বায়োজিদ বোস্তামি। পোল্ট্রি খাতে যুক্ত আছেন ১০ বছর। ১০৫ ফিট দৈর্ঘ্য ও ২৫ ফিট প্রস্থের খামারে ব্যবহার করেছেন আনোয়ার সিমেন্ট শীট। ঠান্ডা ও অতিরিক্ত গরম থেকে মুরগিকে রক্ষা করতেই সিমেন্ট শীট লাগিয়েছেন বলে জানান এই খামারি।

বায়োজিদ বলেন, “আনোয়ার সিমেন্ট শীট ১০ বছরের গ্যারান্টি দিয়ে দিছে। আমার মনে হয় ৫০ বছরেও কিছু হবে না। এই টিনের কিছু কাজ আছে। বৃষ্টির সময় খামারের ভেতর থেকে কোন শব্দ পাওয়া যায় না। ঠান্ডার সময় ঠান্ডা কম আবার গরমের সময় সাধারণ টিনের ঘরের মতো গরম হয় না। টেকসই বলে মনে হচ্ছে। আর সবচেয়ে বড় কাজ হয়- টিনের ঘরে পাল্লা (শিশির) পড়ে। মুরগির পায়ের নিচে দেওয়া লিটার ভিজে যায়। কিন্তু এই সিমেন্ট শীটে একফোটা শিশির পড়ে না। মুরগির রোগ বালাইও কম হয়।

একই এলাকার খামারি সোবহান। ৮ বছর ধরে সোনালী মুরগি পালন করছেন। আনোয়ার সিমেন্ট শীট সম্পর্কে জানতে চাইলে সোবহান বলেন, আগে তো এতো প্রযুক্তি ছিল না। আগে জানলে আনোয়ার সিমেন্ট শীট লাগাতাম ঘরে। গতবারের শীল পড়ে টিন ফুটে হয়ে গেছে। সিমেন্ট শীট লাগালে খামারে মুরগিগুলো ভালোভাবে থাকতে পারে। না শীত- না গরম। সবসময়ই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। মুরগির রোগবালাই কম হয়। আর পোল্ট্রির সবচেয়ে বড় সমস্যা রোগ। ঠান্ডা লাগলে সর্দি হয়, মুরগি মারা যায়। টেকসই সিমেন্ট টিন লাগালে বেশিদিন টিকে। আর এটা লাভজনক বটে।

প্রবাস ফেরত খামারি বাবলু আনোয়ার সিমেন্ট শীট বিষয়ে বলেন, খামার তৈরিতে অবকাঠামোগত দিক বিবেচনা করলে পোল্ট্রি ব্যবসায় লাভবান হওয়া যায়। স্টিলের টিন মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। আমি আমার খামারে সিমেন্ট শীট লাগাব। আনোয়ার সিমেন্ট শীট খুবই ভালো, মজবুত। টিকে বেশিদিন। আমার এক ভাস্তে লাগিয়েছে। আমিও খামার বাড়ানোর চিন্তা করছি। সেই খামারে পুরোটাই আনোয়ার সিমেন্ট শীট লাগাব। সিমেন্ট শীটে শীতের সময় পাল্লা (শিশির) পড়ে না। আবার গরমের সময় বেশি গরম হয় না।

মহাদেবপুরে ক্রমাগত বাড়ছেই পোল্ট্রি মুরগির খামার। নতুন এসব খামারে ব্যবহার হচ্ছে আনোয়ার সিমেন্ট শীট। মহাদেবপুর বকের মোড়ের বাজারের আনোয়ার সিমেন্ট শীট ডিলার মনছুর আলী বলেন, প্রতিনিয়ত আনোয়ার সিমেন্ট শীট বিক্রি বাড়ছে। আগামীতেও বাড়বে। গতবছর যতখানি বিক্রি হয়েছে এবছর তার দ্বিগুণ- তিনগুণ বেশি বিক্রি হচ্ছে।

সনি এন্টার প্রাইজের মালিক আরোও বলেন, আনোয়ার সিমেন্ট শীট কয়েকটি ক্যাটাগরির রয়েছে। আর এসব শীট সাধারণ শীটের চাইতে বেশি টেকসই,মজবুত। খামারিরা সুফল পাচ্ছে বিধায় বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ