আবু হাসাদ, পুঠিয়া (রাজশাহী): কর্তৃপক্ষের নজরদারীর অভাবে সার ডিলাররা গোপনে খুচরা বাজারে বেশী দামে সার বিক্রি করছেন। আর নানা অজুহাত দেখিয়ে বাজারে সব রকম সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন। তবে তিনগুন টাকা দিলে খোলা বাজারে সেই সার পাওয়া যাচ্ছে। এমনই অভিযোগ উঠেছে রাজশাহীর পুঠিয়ায়।

কৃষকরা বলছেন, রোপা-আমন মৌসুমের শুরুতে রাসায়নিক সারের ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। ধানে সার প্রয়োগ করতে পারছেন না তারা। অন্যদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, সাময়িক সময়ের এই সল্প সংকট কৃষি কাজে কোনো বাধা হবে না। কিংবা উৎপাদনে কোন প্রভাব ফেলবে না।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় বিসিআইসির ডিলার রয়েছেন ৮ জন ও বিএডিসির ডিলার রয়েছেন ১৩ জন। আর সাব-ডিলার আছেন আরো তিন শতাধিক।

পড়তে পারেন: সার বিষয়ে যে কোন তথ্য জানতে কল দিন

মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কোনো ডিলারের দোকানে এমওপি ও টিএসপি সার নেই। ডিএপি সার কিছুটা থাকলেও কৃষকদের চাহিদার তুলনায় বিক্রি করছেন অনেক কম। এতে করে সার কিনতে আসা চাষিরা চরম ক্ষােভ প্রকাশ করছেন।

রোপা-আমন চাষিরা বলছেন, এমপিও সারের সরকারি মূল্য ৭৫০ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার টাকা। আটশত টাকা করে। টিএসপি সার ডিলারদের নিকট না থাকলেও খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৮০০ টাকা দরে।

বেলপুকুর ইউনিয়নের কৃষক আবুল হোসেন এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা সঠিকভাবে সারের বিষয়টি দেখভাল করেন না। যার কারণে এখানে এতে সারের সংকট দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ডিলারের নিকট কৃষক সার পাচ্ছেন না। অথচ পুকুর মালিকদের নিকট ডিলাররা বেশী দামে টিএসপি সার বিক্রি করছেন।

পড়তে পারেন: সারের দাম বেশি নিলে নাম পাঠান, বাতিল হবে লাইসেন্স

স্থানীয় এক সার ব্যবসায়ী এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, মন্ত্রনালয়ের কথিত সচিবের নাম ভাঙ্গিয়ে একটি সিন্ডিকেট চক্র গড়ে উঠেছে। চক্রটি ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুঠিয়াসহ পার্শ্ববতী উপজেলায় বিসিআইসি ও বিএডিসি ডিলারদের নিকট থেকে সার সংগ্রহ করে বাড়িতে মজুদ করছে। পরে ওই চক্র বেশী দামে খুচরা বাজারে সেই সার বিক্রি করছে। অথচ কৃষি অফিস বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করছেন।

রাজশাহী জেলা সার ডিলার সমিতির সাবেক সভাপতি ওসমান আলী এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, পুঠিয়াতে বিএডিসি ও বিসিআইসি ডিলাররা কখনোই সরকার নির্ধারিত দামে সার বিক্রি করেন। তবে ডিলাররা বর্তমানে টিএসপি সারের বরাদ্দের পরিমান খুবই কম পাচ্ছেন। আর এমপিও সার এখন সরবরাহ নেই। তিনি বলেন, ডিলারদের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা নেয়া কখনোই উচিত নয়।

পড়তে পারেন: সার নিয়ে কারসাজি করলে লাইসেন্স বাতিল

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুনাহার ভূঁইয়া এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, এই উপজেলায় এমপিও সার বাদে কোনো রাসয়ানিক সারের সংকট নেই। তবে কৃষক পর্যায়ে এমপিও ও টিএসপি সারের চাহিদা আছে। কিন্তু বর্তমানে রাজশাহী বিএডিসির ডিপোতে সেই সার নেই।

অতিরিক্ত দামে খোলা বাজারে দ্বিগুন দামে সার বিক্রি হচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কোথাও কোনো সিন্ডিকেট নেই। আমরা সব সময় বাজার মনিটরিং করছি। এমপিও সারের সাথে টিএসপি সংকটের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই সারের এখন কোনো প্রয়োজন নেই।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ