চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি: করোনা সংক্রমণ রোধে সারাদেশের মত রাজশাহীর চারঘাটেও (১লা জুলাই) থেকে চলছে কঠোর লকডাউন। এই কঠোর লকডাউনে আম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন রাজশাহীর চারঘাটের আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

আজ শনিবার বানেশ্বর বাজারে ফজলি আমের ব্যাপক দরপতন দেখা গেছে। এক মণ ফজলি আম বিক্রি হয়েছে ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা দরে।

আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা জানান, পাইকাররা ও ক্রেতারা আসতে না পারায় এবার ফজলি আমের দাম অনেকটাই কম। আবার লকডাউন খোলার অপেক্ষায় থাকলে গাছেই পঁচে নষ্ট হবে ফজলি আম। এছাড়াও এমনিতেই ফজলি আম গাছেই অনেকটা পঁচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই কম দাম জেনেও বাগান থেকে আম পেড়ে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। চলতি মৌসুমে আমের বাম্পার ফলন হলেও নায্য মূল্য পাচ্ছেন না চাষীরা আবার লোকসানের কবলে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে (৩ জুলাই) দেশের বিখ্যাত হাট বানেশ্বরে ঘুরে দেখা গেছে ফজলি আমের যেন ক্রেতাই মিলছে না। প্রতিবার সর্বোচ্চ চাহিদা আম্রপালির থাকলেও এবার তেমন বিক্রি নেই। ল্যাংড়া বিক্রি হচ্ছে একেবারে সস্তায়।

ভ্যানচালকরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রতি কেজি আম বিক্রি করছেন ১০ থেকে ২০ টাকায়। চাষিরা বলছেন, এত অল্প দামে এর আগে তাঁরা কখনোই আম বিক্রি করেননি। এবার মাথায় হাত পড়েছে আম চাষি ও ব্যবসায়ীদের।

বানেশ্বর বাজারে (৩ জুলাই) এক মণ ফজলি আম বিক্রি হয়েছে ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা দরে। এর আগে কখনোই ৮০০ টাকার নিচে ফজলি আম বিক্রি হয়নি । এছাড়াও লকনা বিক্রি হয়েছে ৬০০-৮০০ টাকায় এবং আম্রপালী ১৭০০-২০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

শুধুমাত্র কঠোর লকডাউন এর কারনে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকার ব্যবসায়ীরা না আসার ফলেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

উপজেলার চামটা গ্রামের আম চাষী মিঠুন ইসলাম বলেন, এবার আম বিক্রি করে উৎপাদন খরচ,কীটনাশক খরচ কিছুই উঠবে না। কিন্তু এই সারা বছর বাগানের জমিতে অন্য ফসল চাষ করলেও এর চেয়ে বেশি টাকা আসত।’

তবে আমের দামে চাষি ও ব্যবসায়ীরা হতাশ হলেও পছন্দের আম কম দামি কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা।

আম চাষি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘অন্যবার এই সময়ে বাজারে এলে আমের ঝুড়ি নিয়ে ব্যবসায়ীরা টানাটানি শুরু করতেন। এবার বসে থেকেও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না।’কিন্তু ক্রেতা কিংবা ব্যাপারী না থাকায় এই আমের বাজারে কোনো ধরনের হাঁকডাকই শোনা যায় না।

আম চাষিরা বলছেন, কঠোর লকডাউনের কারণেই বাজারে ক্রেতা নেই। পাইকাররা আম কেনার সাহস পাচ্ছেন না।

চারঘাট উপজেলায় আমবাগান রয়েছে ৩ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে। সারাদেশে চারঘাটের আমের আলাদা সুনাম রয়েছে। এ উপজেলায় এবার আমের বাম্পার ফলন হলেও ‘লকডাউন আতঙ্কে’ বাজারে ধস নেমেছে।গত বছরের তুলনায় বাজারে এবার আমের দাম অর্ধেকেরও কম।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ