নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজশাহীতে ইলিশ মাছের কেজিতে বেড়েছে একশ থেকে দেড়শ টাকা। ইলিশ যতটা সস্তা ছিল, ঠিক ততটা সস্তা এখন আর নেই। বাজারে এককেজি ওজনের ইলিশ কিনতে গুণতে হচ্ছে ১৪’শ টাকা।

অপেক্ষাকৃত ছোট ইলিশের কেজিতেও বেড়েছে দাম। এক হালিতে এককেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭’শ টাকায়। অথচ এক সপ্তাহ আগে এসব মাছ ১৫০ থেকে ১৮০ টাকার কমে পাওয়া যেত বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

রাজশাহীর সাহেবাজার মাস্টারপাড়া, নিউমার্কেট কাঁচা বাজার, লক্ষীপুর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, আড়ত থেকে ইলিশ কিনে খুচরা বিক্রি করছেন। সেইসাথে ভ্রাম্যমান খুচরা বিক্রেতারা ফুটপাতে বসে বিক্রি করছেন। এমনকি আড়তের কর্মীরাও ঝুড়িভর্তি ইলিশ নিয়ে বসছেন নগরীর নিউমার্কেটের পেছনের গলিতে, শপিংমলের সামনে।

গতকাল শনিবার এক কেজির বেশি ওজনের বড় ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৪’শ টাকা। এক কেজির কিছুটা কম ওজনের ইলিশ ১২’শ টাকা। আধা কেজি ওজনের একেকটি ইলিশ ৩০০ টাকার কাছাকাছি দরে। সবচেয়ে ছোট (চারটি কিংবা পাঁচটিতে ১ কেজি) ইলিশের কেজি ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

নিউমার্কেট আড়ত থেকে ইলিশ কিনে সাহেববাজার মাস্টারপাড়া এলাকায় ইলিশ বিক্রি করেন আরিফ হোসেন। তিনি বলেন, ইলিশের কেজিতে দাম বেড়েছে দেড়’শ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও এমন দাম ছিলনা।

দাম বাড়ার কারন জানতে চাইলে আরিফ বলেন, কয়েক দিন আগে ইলিশ আরও সস্তা ছিল। এখন কিছুটা বেড়েছে। গতকাল তাঁকে মাঝারি আকারের ইলিশ কমপক্ষে ১০০ টাকা বেশি দরে কিনতে হয়েছে। ভারতে ইলিশের এলসি শুরু হয়েছে তাই দেশে দাম বেশি। ভারতে নাকি ২ হাজার টন ইলিশ পাঠাবে তাই দেশের বাজারে টান পড়েছে।

দাম বেড়েছে বলে দাবি করেন আরেক বিক্রেতা করিম। তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে যে হারে ইলিশ আসত, এখন তারচেয়ে কিছুটা কম আসছে। পাশাপাশি মাংস থেকে স্বাদ বদলের জন্য মানুষ ইলিশ বেশি কিনছে। রেফ্রিজারেটর খালি হয়েছে বলে অনেকে বেশি করে কিনেও রাখছেন। এ সবই ইলিশের দাম বাড়ার কারণ।

বিক্রেতারা বলেন, এখন ইলিশ বেশি আসছে বরিশালের পাথরঘাটা ও চাঁদপুর থেকে। বরিশালের ইলিশের চেয়ে চাঁদপুরের পদ্মা নদীর ইলিশের দাম বেশি। নিউমার্কেট বাজার আড়তের বিক্রেতা দিলু বলেন, আড়তে এক কেজি ওজনের চাঁদপুরের ইলিশ ১ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। বরিশালের ইলিশ ১ হাজার টাকায়। চট্টগ্রামের ইলিশের দাম কম অন্যান্য জায়গার তুলনায় চট্টগ্রামের মাছের স্বাদ কম। মাছের কালারও চকচকে থাকে না।

এদিকে নিউমার্কেট ও লক্ষীপুর কাঁচাবাজারের বিক্রেতারাও ইলিশের দাম বাড়ার কথা জানান। তবে তাঁরা বলেন, অন্যান্য সময়ে যে দরে ইলিশ বিক্রি হয়, তার চেয়ে বলতে গেলে কম দরেই এখন বিক্রি হচ্ছে। ফলে দাম কিছুটা বাড়লেও ইলিশকে এখনো সস্তাই বলা যায়।
এদিকে আরেক মাছ ব্যবসায়ী সুমন হোসেন জানান, রুই কেজি প্রতি ২২০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল ১৬০ থেকে ৬৫০ টাকা, চিতল ৪৫০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকা, সিলভর ও অন্যনো কার্প জাতীয় মাছ ১৩০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে ইলিশ মাছের দাম। অন্যদিকে কমেছে দেশি ও নদীর মাছের দাম। ৫০ থেকে ১৫০ টাকা কমে দেশি ও নদীর মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ শ’ থেকে ৮০০ টাকা

মুরগি দোকানী রেজাউল করিম মিঠু জানান, প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫২০ থেকে ৫৫০ টাকায়, খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি ১৪০ টাকা, সোনালী মুরগি ২৬০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ