মো. বাতেন আহমেদ, রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহীতে গাছ থেকে আম সংগ্রহের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে জেলা প্রশাসন একটি নির্দিষ্ট সময় সীমা বেঁধে দিয়েছে। এতে চলতি মাসের (মে) ২০ তারিখের আগে এ অঞ্চলে গাছ থেকে আম সংগ্রহ এবং বাজারজাত করা যাবে না।

বুধবার (০৯ মে) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আম চাষি ও আম ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক এসএম আবদুল কাদের।

তিনি জানান, সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২০ মে’র পরে গাছ থেকে গোপালভোগ জাতের আম নামানো যাবে। আর হিমসাগর, খিরসাপাত ও লক্ষণভোগ নামানো যাবে ১ জুনের পরে। ল্যাংড়া নামানো যাবে জুনের ৬ তারিখ থেকে।

এছাড়া আমরুপালি ও ফজলি ১৬ জুন এবং আশ্বিনা জাতের আম ১ জুলাইয়ের আগে চাষিরা গাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারবে না।

জেলা প্রশাসক এসএম আবদুল কাদের বলেন, বিভিন্ন জাতের আম নামানোর জন্য সাম্ভাব্য সময় ঠিক করে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে চিঠির ঠিক করে দেওয়া সময় নয়, স্থানীয় চাষি ও ব্যবসায়ীদের মতামত নিয়েই আম পাড়ার সময় ঠিক করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক জানান, রাজশাহীর আমে কখনও ফরমালিন মেশানো হয় না। কৃত্রিমভাবেও আম পাকানো হয় না। কিন্তু যখন বাজারে অনেক আগে কিংবা পরে আম পাওয়া যায়, তখন অনেকেই মনে করেন যে আমে কেমিক্যাল দেওয়া আছে।

ক্রেতাদের এই ভীতি দূর করতেই আম পাড়ার একটা নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে নেওয়া হলো। এতে কেউ মনে করবেন না যে, এই আম এখন গাছে থাকার কথা নয়। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় সবার আগে চাষিদের স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী আম সংগ্রহ হচ্ছে কি না তা মনিটরিং করা হবে। এ জন্য প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যান ও কৃষি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের আগে আম পাড়া হলে এই কমিটি ব্যবস্থা নেবে। আর চাষি ও ব্যবসায়ীদের সব সুযোগ-সুবিধা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন কাজ করবে।

জেলা প্রশাসক জানান, জেলার সবচেয়ে বড় আমের হাট পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে অস্থায়ী অফিস খুলবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। বানেশ্বরে থাকা বিভিন্ন ব্যাংকের শাখাগুলো শনিবারও খোলা থাকবে। এছাড়া জেলা প্রশাসন থেকে তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিনে আট ঘণ্টা করে ২৪ ঘণ্টা সেখানে দায়িত্ব পালন করবেন। আর আম পরিবহনে যেন কোনো সমস্যা না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করবে পুলিশ।

সভায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত পাল, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুর রাজ্জাক খান, রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জিএম মোরশেদুল বারী, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালি, বিএসটিআই’র রাজশাহীর উপ-পরিচালক খাইরুল ইসলাম, বাঘার আম চাষি জিল্লুর রহমান ও আম ব্যবসায়ী আজমল হোসেন প্রমূখ।