ইউসুফ আলী সুমন, নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে চলতি আমন মৌসুমে ধানের পোকা দমনে ‘আলোক ফাঁদ’ কৌশল ব্যবহার করছেন কৃষকরা। ক্ষেতে পোকা মাকড় চিহ্নিত ও নিধনের জন্য এ কৃষিবান্ধব পদ্ধতির দিকে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন তাঁরা।

ক্ষতিকর বাদামী ঘাস ফড়িং পোকা, ব্লাস্ট রোগসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকা ও রোগের হাত থেকে কৃষকের স্বপ্ন ধানকে রক্ষার্থে চলছে সচেতনতা মূলক নানা কর্মকান্ড।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আমন ধানকে বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকা ও রোগের হাত থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে আগে থেকেই কৃষকদের সচেতন করতে এবং ধান ক্ষেতে সঠিক সময়ে সার ও প্রয়োজন মাফিক বালাইনাশক প্রয়োগ করতে নানা কর্মকান্ড গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে আসছে।

সন্ধ্যার পর কৃষকদের নিয়ে ধানের আইলের পাশে আলোক ফাঁদ পেতে ধানে আক্রমণ করতে এমন ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি নিশ্চিত করে পরে কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুসারে বালাইনাশক প্রয়োগ করা। গ্রামে গ্রামে গিয়ে সমাবেশ করা, বিভিন্ন হাট-বাজারে দল ভিত্তিক ও কৃষকদের ঘরে ঘরে গিয়ে আলোচনা করা, কৃষকদের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরন করাসহ নানা কর্মকান্ডগুলো কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা বাস্তবায়ন করে আসছেন।

এতে করে কৃষকরা সহজেই তাদের ধানের ক্ষেতে আক্রমণকারী ক্ষতিকর পোকা ও রোগকে চিহ্নিত করতে পারছেন এবং কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে উপযুক্ত বালাইনাশক প্রয়োগ করে ধানকে বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারছেন। প্রতিদিনই উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের কোন না কোন গ্রামে গিয়ে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা ধানকে রক্ষা করার এই সব কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন করছেন।

আরোও পড়ুন: কৃষকের মাঝে আলোক ফাঁদে ক্ষতিকর পোকা উপস্থিতি নির্ণয় উপস্থাপন

ধানে গান্ধি পোকার আক্রমণ ও প্রতিকার

উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মোতালেব বলেন কৃষি বিভাগের সহায়তায় কয়েকদিন পর পর আমি ধানের ক্ষেতের আইলে আলোক ফাঁদ পেতে ধান ক্ষেতে ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি জানতে পারছি। পরে কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুসারে জমিতে প্রয়োজন মাফিক বালাইনাশক প্রয়োগ করছি। এতে করে ধানকে আমি ক্ষতিকর পোকার বড় ধরনের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, চলতি আমর মৌসুমে উপজেলায় মোট ১৮হাজার ১শত ৪০হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। আমরা কৃষকদের জমি প্রস্তুত করার সময় থেকে ধানের ক্ষতিকর পোকা যেমন বাদামী ঘাস ফড়িং ও বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন ব্লাস রোগসহ অন্যান্য বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে আসছি।

তিনি আরো বলেন একাধিক বন্যার পরও বর্তমানে মাঠে ধানের অবস্থা খুবই ভালো। তাই দিন-রাত পরিশ্রম করে এখন আমরা প্রতিজন কৃষকের হাতে সচেতনতামূলক লিফলেট পৌছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। এছাড়াও তো অন্যান্য কর্মকান্ডগুলো অব্যাহত রয়েছে। তাই বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা না দিলে চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার কৃষকরা বাম্পার ফলন পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

রাণীনগরে ধানের পোকা দমনে ‘আলোক ফাঁদ’ কৌশলে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। ক্ষতিকর পোকা দমনের ফলে অতিরিক্ত বালাইনাশক ক্রয়ে অর্থ বিনষ্ট হয় না, ফলে আর্থিকভাবে সাশ্রয় সম্ভব হয়।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ