অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: একদিনের ব্যবধানে অর্থ্যাৎ রাতারাতি বেড়েছে মালয়েশিয়ান পাম অয়েলের দাম। আগের দিন ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ কমার পর আবার ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়েছে। বাড়ার হিসেবে দেখা যায় ৯০ রিঙ্গিত বেড়েছে।

দাম বাড়ার কারণে মালয়েশিয়ায় ফের পাম অয়েল রফতানি কমেছে। বাজারে চলমান সংকট ও ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে প্রধান আমদানিকারক দেশগুলো তুলনামূলক কম দাম ও সহজলভ্য ভোজ্যতেলের ক্রয় বাড়িয়েছে। এ কারণে পণ্যটির চাহিদা কম।

এছাড়া জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে মিলগুলো পাম অয়েল থেকে জৈব জ্বালানি উৎপাদন বাড়িয়েছে। এ বিষয়গুলো রফতানি কমে যাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা পালন করছে।

পড়তে পারেন: পাম অয়েল আমদানি কমেছে ভারতের

পাশাপাশি প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ইন্দোনেশিয়া রফতানি নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার পর থেকে মালয়েশিয়ার রফতানি বাজারে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। খবর বিজনেস রেকর্ডার।

পণ্যবাহী কার্গো তথ্য বলছে, ১-২৫ জুন পর্যন্ত মালয়েশিয়ার পাম অয়েল রফতানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ থেকে ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিদ্বন্দ্বী ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধি এক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। তবে নিম্নমুখী রফতানির কারণে দাম বাড়ার মাত্রা ছিল সীমিত।

গতকাল বুরসা মালয়েশিয়া ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জে সেপ্টেম্বর সরবরাহ চুক্তিতে পাম অয়েলের দাম ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ বা ৯০ রিঙ্গিত বেড়েছে। প্রতি টনের মূল্য স্থির হয়েছে ৪ হাজার ৭৫৪ রিঙ্গিতে (১ হাজার ৭৯ ডলার ৪৭ সেন্ট)। এর আগের কর্মদিবসে পণ্যটির দাম ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ কমে গিয়েছিল।

২৭ জুনের হিসেবে ১৫ শতাংশ কমেছিল মালয়েশিয়ান পাম অয়েলের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এই দাম কমেছে। বিজনেস রেকর্ডার জানিয়েছে, গত মার্চের পর এবারই সর্বোচ্চ কমল পণ্যটির বাজারদর।

কারন হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলত সয়াবিন তেলের দাম কমে যাওয়া ও উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে।

তথ্য বলছে, বুরসা মালয়েশিয়া ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জে সেপ্টেম্বর সরবরাহ চুক্তিতে বাজার আদর্শ পাম অয়েলের দাম ৮৮ রিঙ্গিত বা ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ কমেছে। প্রতি টনের মূল্য স্থির হয়েছে ৪ হাজার ৬৫৬ রিঙ্গিতে (১ হাজার ৫৮ ডলার ১৮ সেন্ট)। কার্যদিবসের শুরুতে পণ্যটির দাম ৪ দশমিক ৭ শতাংশ কমে গিয়েছিল। এদিকে চলতি পাম অয়েলের দাম ১৪ দশমিক ৬০ শতাংশ কমেছে। এ নিয়ে টানা তিন সপ্তাহ পণ্যটির দাম কমল।

পড়তে পারেন: সর্বনিম্নে নেমেছে মালয়েশিয়ান পাম অয়েলের দাম

সম্প্রতি মালয়েশিয়ান পাম অয়েল অ্যাসোসিয়েশন জানায়, ১-২০ জুন পর্যন্ত দেশটিতে পাম অয়েল উৎপাদন গত মাসের একই সময়ের তুলনায় ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। এদিকে ডালিয়ান এক্সচেঞ্জে সয়াবিন তেলের ভবিষ্যৎ সরবরাহ মূল্য ৩ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। যেখানে পাম অয়েলের দাম কমেছে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ।

শীর্ষ উৎপাদক ইন্দোনেশিয়া রফতানি শুল্ক কমিয়ে আনায় মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ীরা বিক্রি কমে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর আগে চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইন্দোনেশিয়ার বিদ্যমান পাম রফতানি শুল্ক সর্বোচ্চ ৩৭৫ ডলার থেকে কমিয়ে ২০০ ডলার নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া রফতানি বৃদ্ধি প্রোগ্রামের জন্য বিশেষ রেটও নির্ধারণ করা হয়।

১৬ জুন একদিনের ব্যবধানে মালয়েশিয়ান পাম অয়েলের দাম ২ শতাংশ কমেছে। বুরসা মালয়েশিয়া ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জে আগস্টে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন পাম অয়েলের দাম ১৩৪ রিঙ্গিত বা ২ দশমিক ২৯ শতাংশ কমেছে। কার্যদিবসের মাঝামাঝিতে প্রতি টন লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২৯৩ ডলার ২০ সেন্টে। ছয় অধিবেশনের পাঁচটিতেই দাম কমেছে, যা ৫ এপ্রিলের পর সর্বনিম্ন।

পড়তে পারেন: দাম বেড়েছে পেঁয়াজ তেল চিনি ডিম মুরগির

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যমতে, নতুন শুল্কহার মঙ্গলবার থেকেই কার্যকর হয়েছে। আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত পাম অয়েল রফতানিতে এ হারেই শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। তবে ১ আগস্ট থেকে সর্বোচ্চ রফতানি শুল্ক বাড়িয়ে টনপ্রতি ২৪০ ডলারে উন্নীত করা হবে। এ সময় প্রতি টন পাম অয়েলের রেফারেন্স দাম ১ হাজার ৫০০ ডলারে অবস্থান করবে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ