নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাজশাহী রেশম কারখানার রেশমের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে ৬১টি লুম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী-২ (সদর) আসনের এমপি ও বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সিনিয়র সহসভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা।

এমপি বাদশা বলেছেন, রাজশাহী রেশমের নগরী। তাই এই শিল্পকে বাঁচাতে হবে। আমি রেশম কারখানার দায়িত্ব নিয়েছি। এরই মধ্যে এখানে ১৯টি লুম চালু হয়েছে। আমি ৬১টি লুমই চালু করব। তা হলে রাজশাহীতে নতুন করে আরো ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।

গতকাল শনিবার (২১ নভেম্বর ২০২০) দুপুরে রাজশাহী নগরীর মালদা কলোনির আটকোশী উচ্চবিদ্যালয়ের এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বর্তমানে কারখানাটিতে রেশম কাপড়ের উৎপাদনসহ ১৯টি লুম চালু রয়েছে। এর আগে ১৮ নভেম্বর গত বুধবার কারখানা পরিদর্শন করেন তিনি এবং সে সময় বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক আবদুল হাকিমসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও গবেষকেরা উপস্থিত ছিলেন।

কারখানা পরিদর্শন শেষে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, আমরা পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে ছয়টি লুম চালু করেছিলাম। পরে সেটি ১৯টিতে গিয়ে দাঁড়ায়। আমরা এখন আরও বেশি সংখ্যক লুম চালু করতে চাই। বেশি লুম চালু করে আমরা ছোট শো-রুমটি বড় করতে চাই। এর পাশাপাশি অনলাইনে রেশম পণ্য বিক্রির একটা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। রেশম বোর্ডের আগামী বোর্ডসভায় সব চূড়ান্ত হয়ে যাবে। রেশমের হারানো ঐতিহ্য আমরা আবারও ফিরিয়ে আনতে চাই।

উল্লেখ্য, লোকসান হচ্ছে এমন কারণ দেখিয়ে ২০০২ সালে তৎকালীন সরকার এই রেশম কারখানা বন্ধ করে দিয়েছিল। তখন এই কারখানার ঋণের বোঝা ছিল ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এরপর বর্তমান সরকার কারখানাটি চালু করে। ২০১৮ সালে কারখানাটিতে প্রথম ছয়টি লুম চালু করা হয়। ধীরে ধীরে মোট ১৯টি লুম চালু করা হয়েছে। এখন আরও বেশি সংখ্যক লুম চালুর ব্যাপারে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানা যায়।

রাজশাহী নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় ১৯৬১ সালে সাড়ে ১৫ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত হয় এই রেশম কারখানা। কারখানাটি বন্ধ করে দেয়ার সময় সেখানে মোট ৬৩টি লুম ছিল। এর মধ্যে উৎপাদন চলতো পুরনো ৩৫টি লুমে। নতুন ২৮টি লুম চালুর আগেই কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। বন্ধের আগে কারখানাটি বছরে এক লাখ ৬ হাজার মিটার রেশম কাপড় উৎপাদন করতো।

কারখানায় ৬৩টি লুম চালু করা গেলে বছরে কাপড় উৎপাদন হবে দুই লাখ ৮৭ হাজার মিটার। বর্তমানে কারখানাটিকে সেই স্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।রেশমের হারানো ঐতিহ্য ফেরাতে রাজশাহী রেশম কারখানায় আরও কিছু লুম চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে কারখানাটিতে ১৯টি লুম চালু রয়েছে। রেশমের কাপড়ও উৎপাদন করা হচ্ছে। এখন উৎপাদন বৃদ্ধি করতে আরও বেশি সংখ্যক লুম চালুর চেষ্টা করা হচ্ছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ