অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চলতি খরিপ মওসুমে ভারতের রাজ্যগুলোর চটের বস্তার চাহিদা ছিল ২৪ লাখ বেল (১ বেল ৫০০টি বস্তা)। সেইসাথে আগামী রবি মওসুমে উৎপাদিত খাদ্যশস্য প্যাকেটজাত করতে চটের বস্তার চাহিদা আরোও প্রায় ২৫ লাখ বেল। চাহিদা থাকলেও বস্তা যোগান দিতে পারছেনা চটকলগুলো। ফলে শস্য গুদামজাত করতে বস্তা সংকটে ভারত।

চটকলগুলো ১৪ লাখের বেশি বস্তা দিতে পারবেনা বলে জানিয়েছিল। অপরদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ডাকা এক বৈঠকে রাজ্যগুলো জানায়, আসন্ন রবি মওসুমে খাদ্যশস্য প্যাকেটজাত করতে বস্তা লাগবে আরও বেশি । বিপরীতে চটকলগুলোর দাবি, প্রথমে লকডাউনের ধাক্কা, তার পরে শ্রমিকের অভাব, পাশাপাশি কাঁচা পাটের ঘাটতি ও চড়া দামের কারণেই বস্তা উৎপাদন মার খাচ্ছে।

চটকলগুলির সংগঠন আইজেএমএ বৈঠকেই সরকারকে জানিয়েছে, খরিফের বকেয়া বস্তা তৈরির পরে রবির জন্য বড়জোর ১১ লাখ বেল দেওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট মহলের জানিয়েছে, খরিপ মৌসুমের মতো রবিতেও বড় ব্যবসা হাতছাড়া হতে চলেছে চটশিল্পের। নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষত খাদ্যপণ্য সরবরাহেও যার কিছুটা আঘাত লাগার আশঙ্কা রয়েছে।

খরিফে বস্তার টানাটানিতে ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের ধান কেনার কাজ ধাক্কা খেতে শুরু করেছে। সম্প্রতি আরও বেশি বস্তা চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছে রাজ্যের খাদ্য দফতর। যে সমস্ত চটকল বরাত মেটাতে পারছে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জুট কমিশনারের অফিসকে আর্জি জানিয়েছে বেশ কিছু রাজ্য।

যদিও বিভিন্ন সূত্রের খবর, চটকলগুলিকে তাদের চাহিদা মতো খরিফের বস্তা জোগাতে হবে বলে খাদ্য মন্ত্রকের ওই বৈঠকে ফের দাবি তুলেছে বিভিন্ন রাজ্য। জুট কমিশনার মলয়চন্দন চক্রবর্তী জানান, বরাত পূরণে আরও সময় দেওয়ার কথাও আলোচনা হয়েছে সেখানে।

• খাদ্যশস্য রাখতে ১০০% ও চিনির জন্য ২০% চটের বস্তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক।

• বিভিন্ন রাজ্যের চাহিদা বুঝে চটকলগুলিকে বস্তার বরাত দেয় কেন্দ্র।

• এ জন্য বছরে তাদের খরচ হয় প্রায় ৭৫০০ কোটি টাকা।

• প্রায় সব চটকলেরই আয় এই সরকারি বরাত নির্ভর।

সমস্যা

• এ বার খরিফ শস্যের ফলন ভাল হওয়ায় মোট ২৪ লক্ষ বেল (১ বেল=৫০০ বস্তা) বস্তা চেয়েছে রাজ্যগুলি। কিন্তু চটকলগুলির একাংশের দাবি, কাঁচা পাটের জোগান কম, করোনাকালে কর্মী কম, ফলে চাহিদা মতো অত বেশি জোগানো সম্ভব নয়।
• এর জেরে খাদ্যশস্য ভরে সরবরাহের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছে বিভিন্ন রাজ্য।
• আয়ের সুযোগ হারাবে চটকলগুলি।
• রবি মওসুমেও বস্তার ঘাটতি বহাল থাকার আশঙ্কা।
• যে সমস্ত চটকল বরাত অনুযায়ী বস্তা দিতে পারছে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জুট কমিশনারের অফিসকে আর্জি বেশ কিছু রাজ্যের। কেন্দ্রের হস্তক্ষেপও দাবি।

উল্লেখ্য, ডিসেম্বর থেকেই রবি মওসুমের জন্য বস্তা উৎপাদনের কাজ শুরু করে দিতে হয় চটকলগুলিকে। ১৫ মে-র মধ্যে তা সরবরাহ করার নিয়ম। কিন্তু এ বছর চাহিদা মতো খরিফ মরসুমের জন্য প্রয়োজনীয় বস্তাই এখনও জোগান দিয়ে উঠতে পারেনি অনেক চটকল। ফলে রবিতে ঘাটতি আরও ভয়ানক হতে পারে বলে আশঙ্কা দানা বেঁধেছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের সংশ্লিষ্ট মহলে।

শস্য গুদামজাত করতে বস্তা সংকটে ভারত শিরোনামে সংবাদের তথ্য আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ