বশিরুল ইসলাম, শেকৃবি থেকে, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: শেরেবাংলাকৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে(শেকৃবি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষাশান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ওইপরীক্ষায় ইলেক্ট্রনিকডিভাইসের মাধ্যমেজালিয়াতির অভিযোগে ৪ পরীক্ষার্থীকে আটককরে পুলিশেএ সোপর্দকরেছে কর্তৃপক্ষ।

আটক পরীক্ষার্থীরা হলেন, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে মো: ইকবাল মাহাবুব, রোল নং-১২১৫৯, পিতা: হামিদুর রহমান, রানীশংকৈল, ঠাকুরগাঁও।

মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে মোছা: রাশিদা আক্তার রজনী, রোল-২১১৯৯, পিতাঃ মোঃ রবিউল ইসলাম, বড়ভিটা, ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমি কেন্দ্র থেকে জয় পাল, রোল নং-১৩৫৪৭, পিতা-জিতেন পাল, ভোড়ালিয়া, বাজশাহী। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে মাহিম খান, রোল নং-৪১৭৪৬, পিতাঃ মো: মহিউদ্দিন খান, মাতুয়াইল, কেরানী পাড়া, ঢাকা।

আজ শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর ১৫ টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলো। ওই সময় ৪ জন শিক্ষাথীকে আটক করা হয়। পরীক্ষার হলে ক্যালকুলেটর, ঘড়ি, মোবাইল ফোনসহ যোগাযোগ করা যায়- এমন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল।

আর ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি, অসদুপায় ও অনিয়ম ঠেকাতে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ টি মোবাইল টিম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ টি অনুষদে ৬২০ আসনের বিপরীতে চলতি শিক্ষাবর্ষে আবেদন করেছিল ৩৩ হাজার ৩ শত ০১ জন প্রতিযোগী। একটি আসনের বিপরীতে ছিল ৫৪ জন শিক্ষার্থী।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, কোনো ধরনের অনিয়ম ছাড়া সকলের সার্বিক সহযোগিতায় উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ কৃষিতে নারীদের অংশগগ্রণ বাড়ছে উল্লেখ করে বলেন, এবারের পরীক্ষায়ও অধিকাংশ মেয়ে। ছেলেদের সংখ্যা তুলনামূলক একটু কম। প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশই মেয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এর আগে পরীক্ষায়ও একই চিত্র দেখা গেছে।

আটককৃত ভর্তিচ্ছুদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুই থেকে চার লক্ষ টাকার বিনিময়ে তারা জালিয়াতি চক্রের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। আটক হওয়া মাহিম খান বলেন, আমার এ কাজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম অয়নব আমাকে বলেন, যারা চান্স পায়, তারা এভাবেই চান্স পায় এবং ডিভাইসে উত্তর পাঠানোর পর যদি চান্স পাও তবেই ৪ লক্ষ টাকা নিব।

কর্তৃপক্ষ ৪ পরীক্ষার্থীকে জালিয়াতির অভিযোগে আটক করে শেরেবাংলা নগর এবং মোহাম্মদপুর থানার কাছে হস্তান্তর করেছে। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত ম্যাজিস্ট্রেট মিজ ওয়াদিয়া শাবাব। প্রশ্ন ফাঁসের মূল হোতাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. সেকেন্দার আলী বলেন, শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রে প্রবেশের সময় মেটাল ডিটেক্টর ও আর্চওয়ে ব্যবহার বাধ্যতামূলক ছিল। এ মধ্যে তিনজন শিক্ষার্থী মেটাল ডিটেক্টর ও আর্চওয়ে ব্যবহার সময়ই ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস সহকারে ধরা পড়ে।

তিনি আরও বলেন, পরীক্ষায় ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ও ফোন নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বও এক শিক্ষার্থী এর মাধ্যমে উত্তরপত্র সংগ্রহ করা চেষ্টা করেছিল। তাই আমরা তাকে সহ ৪ জনকে আটক করেছি। এদের কাছ থেকে অনেক মূল্যবান তথ্য পাওয়া গেছে। তাদেরকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

ভর্তি পরীক্ষার্থী শাকিলা আক্তার বলেন , অনেক জায়গায় পরীক্ষা দিলাম এখন পর্যন্ত কিন্তু এরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা আমি দেখিনি, এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কে ধন্যবাদ। অন্যান্য জায়গায় পরীক্ষার আগেই শুনতাম প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে, কিন্তু এখানে এমন কোন কিছুই শুনিনি আমি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা জান্নাত চৌধুরী জানান শেকৃবি পরিবার একটি সুষ্ঠু সুন্দর পরীক্ষা উপহার দিতে সক্ষম হয়েছে, কেউ কোন অভিযোগ উঠাতে পারেনি , যা আমাদের জন্য গর্বের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সেকেন্দার আলী, ট্রেজারার অধ্যাপক মোঃ আনোয়ারুল হক বেগসহ ৪ টি টিম পরীক্ষার হল পরিদর্শন করেন। ভর্তি পরীক্ষা ফলাফল এবং ভর্তি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট www.sau.edu.bd পাওয়া যাবে।