ইউক্রেনে গমের রফতানি মূল্য

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও গম আমদানিতে সংকটে পড়ে। এই সংকট কাটাতে রাশিয়া থেকে ৫ লাখ টন গম আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।

দেশের বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রতি টন ৪৩০ ডলার দরে এ গম আমদানি করা হবে। গমের এ দামের সঙ্গে পরিবহন খরচ, বীমা ও খালাসের খরচ যুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও রাশিয়ার সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে গতকাল রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

এরই মধ্যে গত মে মাসে বাংলাদেশে গমের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী দেশ ভারত রফতানি বন্ধ করে দিলে সংকট আরো ঘনীভূত হয়।

তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসমাইল হোসেন বলেন, এটি নিয়ে এখনই চূড়ান্ত কিছু বলা যাবে না। বিষয়টি এখন দরকষাকষি বা আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। তিন লাখ থেকে সাড়ে তিন লাখ টন আমদানির বিষয়ে আলোচনা শুরু হলেও আমাদের আসলে আরো বেশি গম দরকার। সেজন্য আরো বেশি পরিমাণে আমদানির চেষ্টা চলছে। তাই চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত কিছু বলা সম্ভব না।

বাংলাদেশের এক সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে গম আমদানির ব্যাপারে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি সই হবে। এরপর জানুয়ারির মধ্যেই ধারাবাহিকভাবে চালান শুরু হবে। দাম পরিশোধের বিষয়ে আরেক কর্মকর্তা জানান, রুবলে নয় মার্কিন ডলারেই গমের দাম পরিশোধ করবে বাংলাদেশ। দুজন কর্মকর্তাই নাম প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ রাশিয়ার কাছ থেকে খাদ্যশস্য ও সার কিনছে বলে ব্রিটিশ এ সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য তিনি দেননি।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বের ২৪টি ব্যাংকের মাধ্যমে ডলার দিয়ে রাশিয়ার কাছ থেকে খাদ্যশস্য ও সার আমদানি করতে পারব, এ ধরনের আমদানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

জানা গেছে, চলতি বছরের শুরুতে গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন মজুদ ছিল। ভারত রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে মজুদ বাড়ানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু বিশ্ববাজারে অস্থিরতার কারণে কিছু দরপত্র বাতিল করতে হয়।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ক্রেমলিনের অভিযান শুরুর পর রাশিয়া থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর ব্যাংকিং লেনদেনসহ বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফলে ঋণপত্র খোলা, পণ্যের চালানের নিশ্চয়তা পাওয়ার মতো বিষয়গুলো ঝুলে ছিল। এর পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞার কারণে লেনদেনের ধরন নিয়েও অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কৃষ্ণ সাগরে জাহাজ চলাচল এখনো নিরাপদ ছিল না। তবে সম্প্রতি রাশিয়ার কৃষি ও খাদ্যপণ্য আমদানি থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।