আন্তর্জাতিক কৃষি ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ভারত বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ গম উৎপাদক দেশ। চলতি মাসে দেশটিতে সর্বনিম্নে নেমেছে গমের মজুদ। এতে বাজারে গমের দাম বাড়তি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাণিজ্য সংশ্লিষ্টরা।

বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গমের সরবরাহে টান পড়ার। পাশাপাশি বাজারদর ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। এরই মধ্যে স্থানীয় বাজারে বাড়তি চাহিদার কারণে শস্যটির দাম হয়ে উঠেছে আকাশচুম্বী।

মঙ্গলবার ভারতের সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের দেয়া তথ্যে দেখা গেছে, চলতি মাসের শুরুতে শস্যটির মজুদ ১ কোটি ৯০ লাখ টনে নেমে এসেছে। গত বছরের একই সময় মজুদের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৫০ হাজার টন, যা ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

সম্প্রতি ভারত সরকার গমের বাজার নিয়ন্ত্রণে রফতানিতে বিধিনিষেধ ও তদারকিসহ নানা পদক্ষেপ নেয়। তবে এ মাসে মজুদ কমে যাওয়ায় এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দেশটির ব্যবসায়ীরা জানান, নতুন গম বাজারে উঠতে এখনো চার মাসের মতো সময় লাগবে। এ অবস্থায় দাম নিয়ন্ত্রণ সরকারের জন্য অনেকটাই কঠিন হয়ে উঠেছে। সরকার চাইলেই দাম নিয়ন্ত্রণ করতে প্রতি মাসে ২০ লাখ টনের বেশি গম সরবরাহ করতে পারবে না।

এদিকে ইউক্রেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ গম উৎপাদক ও রফতানিকারক। কিন্তু রাশিয়ার একের পর এক হামলার মুখে দেশটির গম রফতানি ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে আবারো কমেছে ইউক্রেনের গম রফতানি। রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি চার মাসের জন্য সম্প্রসারণ করা হলেও রফতানিতে গতি ফিরছে না।

নভেম্বরে রফতানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৮০ হাজার টনে। অক্টোবরে দেশটি ১৯ লাখ ৮০ হাজার টন গম রফতানি করেছিল। সে হিসাবে রফতানি কমেছে চার লাখ টন। ইউক্রেনিয়ান গ্রেইন ট্রেডার্স ইউনিয়ন গতকাল এ তথ্য জানিয়েছে।

এ বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ সামরিক বাহিনী ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর থেকে ছয় মাস পর্যন্ত সমুদ্রপথে দেশটির শস্য রফতানি বন্ধ ছিল। ছয় মাস অবরুদ্ধ থাকার পর গত জুলাইয়ের শেষ দিকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় এ চুক্তির মাধ্যমে আবারো সমুদ্রপথে শস্য রফতানি শুরু করে ইউক্রেন। দেশটির তিন কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর থেকে অবরোধ উঠিয়ে নেয়া হয়।

ইউক্রেনিয়ান গ্রেইন ট্রেডার্স ইউনিয়ন নভেম্বরে ৫০ লাখ টন খাদ্যশস্য ও তেলবীজ রফতানির ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু এ মাসে রফতানি করা হয় ২৩ লাখ টন। অক্টোবরের তুলনায় রফতানি কমেছে ১২ লাখ টন।

এক বিবৃতিতে ইউনিয়ন জানায়, কৃষ্ণসাগরীয় খাদ্যশস্য রফতানি চুক্তি চার মাসের জন্য সম্প্রসারণ করা হয়েছে। কিন্তু রাশিয়া রফতানি জাহাজ যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ করছে। এ কারণে রফতানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ