অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ১১ সপ্তাহের সর্বনিম্নে নেমেছে ভুট্টা ও সয়াবিনের দাম। অন্যদিকে প্রায় ২ শতাংশ কমেছে শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে (সিবিওটি) গমের ভবিষ্যৎ সরবরাহ মূল্য। ভুট্টা ও সয়াবিনের দাম কমার বিষয়ে খবর প্রকাশ করেছে বিজনেস রেকর্ডার।

তথ্য বলছে, সিবিওটিতে গমের ভবিষ্যৎ সরবরাহ মূল্য আগের কার্যদিবসের তুলনায় ১ দশমিক ৯০ শতাংশ কমেছে। প্রতি বুশেলের মূল্য স্থির হয়েছে ১০ ডলার ১৪ সেন্টে। ৪ এপ্রিলের পর দাম সর্বনিম্নে নেমেছে। ওই সময় পণ্যটির দাম ১০ ডলার ১৩ সেন্টে নেমেছিল।

ইউরোপের বিভিন্ন প্রান্তে এবং উত্তর আমেরিকায় উৎপাদন ও ফসল সংগ্রহ শুরু করেছেন কৃষকরা। ফলে বাজারে স্থিতি ফিরতে শুরু করেছে। দেশের বাজারে কমতে পারে প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর দাম।

পড়তে পারেন: বিশ্ববাজারে কমলো দাম, দেশে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন

এদিকে ভুট্টার দাম ১ দশমিক ৪০ শতাংশ কমেছে। প্রতি বুশেল লেনদেন হয়েছে ৭ ডলার ৭৩ সেন্টে। সয়াবিনের দাম ১ দশমিক ১০ শতাংশ কমে বুশেলপ্রতি ১৬ ডলার ৮৩ সেন্টে স্থির হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর থেকেই কৃষ্ণ সাগরীয় অঞ্চল থেকে গমের সরবরাহ সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে লম্বা সময় ধরেই বিশ্ববাজারে শস্যটির ঘাটতি চলছে। এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় উৎপাদিত গম সংগ্রহ সরবরাহজনিত উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

অন্যদিকে আর্জেন্টিনা বিশ্বের শীর্ষ গম রফতানিকারক। দেশটিতে ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে গমের উৎপাদন কমতে পারে বলে জানিয়েছে বুয়েন্স আয়ার্স গ্রেইনস এক্সচেঞ্জ। এছাড়া আগের দুই মৌসুমেও আবাদ নিম্নমুখী ছিল।

সংস্থাটির দেওয়া তথ্য বলছে, গত বছর থেকেই ভয়াবহ খরায় বিপর্যস্ত আর্জেন্টিনার কৃষি খাত। প্রধান প্রধান উৎপাদন অঞ্চলে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে  দেশটিতে গমের আবাদ কমে যেতে পারে। এছাড়া সয়াবিন তেল ও সয়ামিল রফতানিতেও নেতৃস্থানীয় লাতিন আমেরিকার এ দেশ।

এক্সচেঞ্জের দেয়া তথ্যমতে, আর্জেন্টিনায় গম আবাদি জমির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৬৪ লাখ হেক্টর। এক মাস আগে দেয়া পূর্বাভাসে জমির পরিমাণ ধরা হয়েছিল ৬৬ লাখ হেক্টর। এ নিয়ে টানা তিন মৌসুমে দেশটিতে গমের আবাদ কমতে যাচ্ছে।

পড়তে পারেন: রেকর্ড গড়তে পারে গম-ভুট্টার দাম

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে খাদ্যশস্য সরবরাহে দেশটির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দরগুলো অবরুদ্ধ থাকায় তলানিতে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রফতানি। অন্যদিকে পশ্চিমা দেশগুলোর একের পর এক নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রতিবন্ধকতার মধ্যে রাশিয়ার রফতানিও।

কিন্তু গম আবাদের ক্ষেত্রে খুব খারাপ সময় পার করছে আর্জেন্টিনার কৃষক। মাটিতে আর্দ্রতার পরিমাণ কম থাকায় উপযুক্ত সময়ে আবাদ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। তার ওপর সারের আকাশছোঁয়া দাম পরিস্থিতিতে আরো জটিল করে তুলেছে। এসব চ্যালেঞ্জ উৎপাদন বৃদ্ধির সক্ষমতায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।