পোল্ট্রি ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বাণিজ্যিকভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে হাঁস পালন করা হচ্ছে। হাওর অঞ্চলে হাঁস পালনের সুবিধা থাকায় বেশ জনপ্রিয়। তবে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাঁস মারা যায়। হাঁসের এসব রোগের অন্যতম হচ্ছে প্লেগ।হাঁসের প্লেগ রোগ বা মড়ক রোগ একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ।

এ রোগকে ডাক ভাইরাস এন্টারাইটিসও বলা হয়। ১৯২৩ সালে বাউডেট নামে এক বিজ্ঞানী নেদারল্যান্ডে হাঁসের মড়ক হিসেবে চিহ্নিত রোগটি প্রথম আবিষ্কার করেন। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই হাঁসের প্লেগ রোগ দেখা যায়। প্রাকৃতিক নিয়মেই সব বয়সী গৃহপালিত ও বন্যহাঁস, রাজহংসী এই ভাইরাসের প্রতি সংবেদনশীল।

পড়তে পারেন: এক দিন থেকে ১ মাস পর্যন্ত হাঁসের বাচ্চার পরিচর্যা পদ্ধতি

আক্রান্ত পাখির সংস্পর্শে, দূষিত খাদ্যদ্রব্য ও পানির সাহায্যে সুস্থ পাখিতে এ রোগের ভাইরাস সংক্রমিত হয়। আমাদের দেশে হাট-বাজারে রুগ্ন হাঁস কেনা-বেচার মাধ্যমে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় এ রোগটি ছড়ায়। আবার কীট-পতঙ্গের মাধ্যমেও এ রোগের জীবাণু সংক্রমিত হতে পারে। তবে ডিমের মাধ্যমে রোগের সংক্রমই হয় না।

প্লেগ রোগের লক্ষণ বোঝার অনেক উপায় আছে। আক্রান্ত হাঁসের ক্ষুধা কমে যায়। কিন্তু বারবার পানি পান করে। চোখ ও নাক দিয়ে তরল পদার্থ নিঃসৃত হয়। আলো দেখলে ভয় পায়। চোখের ঝিল্লির প্রদাহের কারণে চোখ বন্ধ করে রাখে। ডিম পাড়া হাঁসের ডিম দেয়া কমে যায়। মাথা নিচু করে রাখে।

পড়তে পারেন: কিভাবে শুরু করবেন? ৫০০ ডিম পাড়া হাঁস পালনের খরচ কত?

চলাফেরায় অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয়। আক্রান্ত পাখিতে ডায়রিয়া হয়। পাতলা পায়খানা লেজের আশেপাশে লেগে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত হাঁসের হঠাৎ করে মৃত্যু হয়। এ রোগে ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী বয়স্ক হাঁসেরও মৃত্যু ঘটে। মৃত্যুহার ৫ থেকে ১০০% হয়ে থাকে।

চিকিৎসা হিসেবে রোগাক্রান্ত হাঁসের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাকটিরিয়ার সংক্রামণ থেকে রক্ষা করার জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এন্টিবায়োটিক যেমন, এনরোফ্লক্সাসিন, নরফ্লক্সাসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন ইত্যাদির যেকোনো একটি দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে।

ভাইরাসজনিত রোগের কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তাই রোগ যাতে না হয় সেজন্য হাঁসকে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে ফার্মের হাঁস প্লেগ রোগ থেকে রক্ষা পাবে।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ