নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার শত শত তরমুজ চাষি লাভের আশায় তরমুজ চাষ করে বিপাকে পড়েছেন। রোজায় বেশ ভালো দামে বিক্রি হলেও বর্তমানে ৩০ টাকায় মিলছে ১০ কেজি তরমুজ!

বর্তমানে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে তরমুজের যথেষ্ট চাহিদা থাকলেও পাইকারি ক্রেতারা তরমুজ কেনায় তেমন আগ্রহই দেখাচ্ছেন না। ফলে অসংখ্য খেতে বিপুল সংখ্যায় চরম অবহেলায় পড়ে আছে গরমের এই আকর্ষণীয় ফল।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিন কয়েক’শ ট্রাক প্রবেশ করছে এলাকায়। অনেক কৃষক সব হারানোর চেয়ে ‘পানির দরে’ তরমুজ তুলে দিচ্ছেন তাদের হাতে। খুলনার কদমতলা আড়তে গিয়ে দেখা যায়, পাইকারিতে তারা ১০ কেজি ওজনের প্রতি পিস তরমুজ কিনছেন মাত্র ৩০ টাকায়।

পড়তে পারেন: তরমুজের জিলাপিতে মেতেছে ময়মনসিংহ

প্রতি পিস তরমুজের দাম ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যেই ধরছেন তারা। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে পিস হিসেবে তরমুজ কিনে প্রতি কেজি ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। অর্থাৎ ১০ কেজি ওজনের একটি তরমুজ তাদের কাছ থেকে খুচরা ক্রেতারা কিনছেন প্রায় ২০০ টাকায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন গ্রামের রাস্তার পাশে তরমুজ স্তূপ করে রাখা হয়েছে বিক্রির আশায়। সেখানে অবহেলায় হয়তো পচে যাচ্ছে, কিংবা গরু-ছাগলে খেয়ে যাচ্ছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা আগ্রহ দেখালে নামমাত্র মূল্যে তাদের হাতে তুলে দিচ্ছে। যারা রোজার মধ্যে আগাম তরমুজ তুলতে পেরেছেন তারা বেশ দাম পেয়েছেন।

পড়তে পারেন: তরমুজে বিঘায় লাখ টাকা মুনাফা লোকমানের 

তরমুজচাষি উপজে’লার ফুলতলা গ্রামের সুব্রত মণ্ডল বলেন, পচন ধরার ভয়ে নিজেই ট্রাক ভাড়া করে খুলনার কদমতলা বাজারে দেড় হাজার পিস তরমুজ নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে বিশাল বিশাল তরমুজ মাত্র ২০/৩০ টাকা পিসে বিক্রি করতে হয়েছে। গঙ্গারামপুর ইউনিয়নের ঝড়ভাঙ্গা গ্রামে তরমুজ চাষ করেছিলেন বিজয় মণ্ডল, সুকুমা’র মণ্ডলসহ বহু লোক। বিজয় মণ্ডল বলেন, তিনি তিন বিঘা জমিতে তরমুজের চাষ করেছেন। ফলনও হয়েছে অনেক ভালো। তবে দাম না পাওয়ায় খেতেই পড়ে আছে।

খুলনার বাজারে তরমুজ কিনতে আসা ক্রেতা নাজমা সুলতানা বলেন, রোজার সময় তরমুজের দাম এত বেশি ছিল যে তখন কিনতে সমস্যা হয়েছে। এখন কিনছি মাত্র ১৫ টাকা কেজি দরে।

খুলনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে জানান, চলতি বছর জেলায় ১৩ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। তরমুজের উৎপাদন অন্যান্য বছরের তুলনায় ভালো, তবে, দাম পড়ে গেছে। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় হেক্টরপ্রতি গড়ে ৫০ মেট্রিক টন ফলন হয়েছে।

দাম বিষয়ে বলেন, আগাম যেসব তরমুজ বিক্রি হয়েছে তার দাম ভালোই পেয়েছেন। এখন চাহিদা কমে যাওয়ায় দাম কমে গেছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ