ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে আবহাওয়া অফিসের

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট একটি লঘুচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে যাচ্ছে। এ ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘অশনি’। সোমবার (২১ মার্চ) প্রবল শক্তি নিয়ে এটি ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে বলে  জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর সমুদ্রবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দিয়েছে।

এজন্য শনিবার (১৯ মার্চ) থেকেই ভারতের মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে চলাচলে সতর্কবার্তা দিয়েছে। সমুদ্র তীরবর্তী পর্যটন কেন্দ্রগুলোর তৎপরতাও আপাতত বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।

এদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো আব্দুল মান্নান এ্রগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপে আরও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় ৯.৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২.৫ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আজ ২০-০৩-২২ সকাল ছয়টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে তেরোশো ৮০ কিলোমিটার দক্ষিনে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিনে, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১৪৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ পূর্ব এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১৩৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে। উত্তর উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।

তিনি আরোও বলেন, চট্টগ্রাম কক্সবাজার ও মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর সমূহকে এক নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে সেইসাথে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ করতে না করা হয়েছে।

অন্যদিকে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত গভীর নিম্নচাপটি ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে। রোববারের মধ্যে তা সুস্পষ্ট নিম্নচাপ হিসেবে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে যাবে। আর সোমবার সকালের মধ্যেই তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে আছড়ে পড়বে। তারপর উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবারের মধ্যে তা উত্তর মিয়ানমার ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ উপকূলে পৌঁছাবে।

যদিও এই ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি কোনো প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে পড়বে না। তবে শনিবার থেকেই আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বৃষ্টি শুরু হবে। রোববার তা আরও বাড়বে। আর সোমবার তা ভারী থেকে অতিভারী আকারে বর্ষিত হবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর। যে কারণে শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়া নিষেধ করা হয়েছে। বন্ধ রাখা হচ্ছে সমস্ত পর্যটন কেন্দ্রও।

এদিকে বাংলোদেশ আবহাওয়া দপ্তর আরো জানায়, নিরক্ষীয় সাগর ও তত্সংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।

গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গল ১৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২৪ ঘন্টায় ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি ও সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা ১৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অফিস আরও জানায়, ঢাকায় বাতাসের গতি দক্ষিণ-পূর্ব/দক্ষিণ দিক থেকে ঘন্টায় (০৬-১২) কিঃ মিঃ । আজ সকাল ৬ টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আদ্রতা ছিল ৬৯ শতাংশ। আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬ টা ১০ মিনিট আর আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৬টা ০২ মিনিটে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ