কৃষি যন্ত্রপাতির দাম কমবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দেশজুড়ে ৫১ হাজার কৃষি যন্ত্রে মিলবে ভর্তূকি। এর ফলে দেশে যেমন কৃষি যান্ত্রিকীকরণে বিপ্লব ঘটবে অপরদিকে কৃষিতে বাণিজ্যকরণও কয়েকধাপ এগিয়ে যাবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কৃষি খাতে ভাল মানের কর্মসংস্থান নিশ্চিতের পাশাপাশি কৃষিতে বাণিজ্যিকিরন করতে যান্ত্রিকিকরনের কোন বিকল্প নেই। এ প্রেক্ষিতে সরকার দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিণিয়োগ প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

যার মাধ্যমে প্রায় ৫১ হাজার ৩০০ টি যন্ত্রে ভর্তূকি দিবে কৃষি মন্ত্রনালয়। সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীরন প্রকল্পের মাধ্যমে এসব যন্ত্র চাড়াও অনান্য সব খরচ মিলে ব্যয় হবে প্রায় ৩ হাজার ২০ কোটি টাকা।

পরিকল্পনা মন্ত্রনালয় সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে সাধারণ অঞ্চলে ৫০ শতাংশ এবং হাওড় অঞ্চলে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তূকি দেওয়া হবে।

প্রকল্পের মাধ্যমে ধান ও গমের জন্য ১৫ হাজার ৫০০ টি কম্বাইন হারভেস্টার, ৪ হাজার রিপার, ২ হাজার রিপার বাইন্ডার এবং ৩ হাজার রাইস ট্রান্সপস্নান্টার, ৫ হাজার সিডার বা বেড পস্নান্টার, ৫ হাজার পাওয়ার থ্রেসার, ৫ হাজার মেইজ শেলার, ৫ হাজার ড্রায়ার যন্ত্র রয়েছে।

পাশাপাশি ২ হাজার পাওয়ার স্প্রেয়ার, ৫০০ পাওয়ার উইডার, ৩ হাজার পটেটো ডিগার, ৩০০ টি ক্যারেট ওয়াসার এবং ১ হাজার আলুর চিপস তৈরির যন্ত্র কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করা হবে। এসব যন্ত্র বাবদ খরচ হবে প্রায় ২ হাজার ৫৮৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা। যা প্রকল্পের প্রায় ৮৬ শতাংশ।

এসব যন্ত্রপাতি ক্রয়ের ক্ষেত্রে যৌক্তিকভাবেই কেনাকাটার ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে বলে পরিকল্পনা কমিশনের মূল্যায়নে উঠে এসেছে। তবে মাত্র ৬১ লাখ টাকার কিছু তৈষজপত্র কেনাকাটায় সাম্প্রতিক সময়ে প্রশ্ন এসেছে। সেখানে পণ্য কেনাকাটায় দাম নির্ধারন যৌক্তিভাবে ও যাচাই বাচাই করেই করা হয়েছে। ভূলবুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে।

মূলত ভোক্তা দামের সঙ্গে সরকারী কেনাকাটায় বিশেষ কিছু খরচ যুক্ত থাকার কারনে দামের পার্থক্য তৈরি হয়েছে। সরাকারী বা প্রাতিষ্ঠানিক কেনাকাটায় ভ্যাট, ট্যাক্স, পরিবহন ব্যয় এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মুনাফা যুক্ত থাকে।

ফলে এক্ষেত্রে ব্যয় আরো ৩০-৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ফলে একটি যন্ত্র ভোক্তা যদি বাজার থেকে ১০০ টাকা দিয়ে কিনে সেই যন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সেটি কিনতে খরচ হবে ১৩০-১৩৫ টাকা।

তেমনটি দেখা গেছে বিভিন্ন সাইজের মাছ কাটাসহ উন্নত মানের কাঠের ফ্রেম দিয়ে তৈরি বটি ও উন্নত মানের পানির ড্রাম কেনাকাটার দাম নির্ধারণে। যা দুই শতাধিক মানুষের জন্য আবাসিক প্রশিক্ষনের ডরমেটরিতে ব্যবহার করা হবে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাধারনভাবে বাজারে বড় সাইজের বটির দাম প্রায় ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা। এর সঙ্গে ভ্যাট ট্যাক্স ও অনান্য খরচ যুক্ত করলে খরচ পড়ে প্রায় সাড়ে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। অন্যদিকে ভাল মানের বড় সাইজের পানির ড্রামের দাম বাজারে সাড়ে চার থেকে ৫ হাজার টাকা।

এর পাশাপাশি ড্রামের জন্য একটি স্টান্ডসহ নিয়ম অনুসারে কিনতে খরচ হবে সাড়ে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। প্রকল্পের ডিপিপিতে সর্বোচ্চ খরচ রাখা হয়েছে ১০ হাজার টাকা। যা আগামী দুই থেকে তিন বছর পর কেনা হবে। সামনের দিনে দাম বৃদ্ধি ও অনান্য খরচ যুক্ত করেই তা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সংশিস্নষ্টরা বলছেন, এসব জিনিসগুলো এগুলো এখনও কেনা হয়নি। এসব তৈষজপত্র কেনা হবে ওপেন দরপত্রে। ফলে তখন সর্বনিম্ন দরদাতাকে বাছাই করা হলে অবশ্যই যৌক্তিক দামে পন্য কেনা সম্ভব হবে।

এখানে দূর্নীতি বা অসাধুতার কোন সুযোগ নেই। ব্যক্তি দাম আর প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটার দাম কখনই একই ধরনের হবে না। কেননা ব্যক্তি কেনাকাটায় আলাদাভাবে ভ্যাট, ট্যাক্স, আয়ের উত্স কর, প্রাতিষ্ঠানিক মুনাফা এবং সরবরাহ খরচ যুক্ত করা হয় না। এগুলোই দামের পার্থক্য করে দিচ্ছে।

৫১ হাজার কৃষি যন্ত্রে মিলবে ভর্তূকি এর ফলে কৃষিতেও বিপ্লব ঘটবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কৃষকের হাতের গোড়ায় এসব যন্ত্র পৌঁছে দিতে হবে, তবেই মিলবে সুফল।

আরও পড়ুন: কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণে উৎপাদন খরচ কমছে, বাড়ছে ফসলের নিবিড়তা