নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: এক একর জমিতে ৭৪ জাতের ধান চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন রাজশাহীর কৃষক নূর মোহাম্মদ। ক্ষেতজুড়ে শোভা পাচ্ছে ছোট ছোট অনেকগুলো সাইন বোর্ড। তার্ নিজস্ব ধান গবেষণা প্রদর্শনী প্লটে দেখা যাবে লাল, বেগুনি, সোনালী, সবুজ, খয়েরি, সাদাগুঠিসহ নানা প্রকার ধান।

আরও পড়ুন:  রোপা আমনে স্বপ্ন দেখছেন রাজশাহীর চাষিরা

নূর মোহাম্মদ রাজশাহীর তানোর পৌর এলাকার গোল্লাপাড়া গ্রামের আদর্শ কৃষক। চলতি রোপা আমন মৌসুমে বিলকুমারী বিল সংলগ্ন গোল্লাপাড়ার এক একর জমিতে ৭৪ প্রকার জাতের ধান রোপন করেছেন তিনি। নিজেকে আজন্ম কৃষক পরিচয় দেয়া এই প্রান্তিক আদর্শ কৃষক নুর মোহাম্মদ তার উদ্ভাবনী নতুন নতুন জাতের ধান সংখ্যা প্রায় ২শ’রও বেশি। তার নতুর জাতের ধানের উদ্ভাবনের স্বীকৃতি স্বরুপ একাধিকবার পেয়েছেন স্বর্ণ পদকও। রাষ্ট্রীয় স্বর্বচ্চ সম্মাননায় পদক পাওয়া এই ধান বিজ্ঞানীর সংগ্রহে রয়েছে বিলুপ্ত প্রায় ৩শ’ প্রকার ধান বিজ। এবছরও তিনি চিন্তা ও গবেষনায় আরো একটি নতুন ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন।

স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, নূর মোহাম্মদ দীর্ঘদিন থেকেই ধান নিয়ে গবেষনা করে আসছেন, তার চিন্তা ও গবেষনায় একের পর এক নতুন নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন করে এলাকার কৃষকদের মাঝে ঝড়িয়ে দিয়েছেন। তার উদ্ভাবনী ধান এখন অনেক কৃষক চাষাবাদ করছেন। তার উদ্ভাবনী ধান চাষ করে কৃষকরা কম খরচে কম সময়ে অধিক ফসল ঘরে তুলতে পারছেন। ফলে নুর মোহাম্মদ স্থানীয় কৃষি বিভাগসহ এলাকায় ধান বিজ্ঞানী হিসাবে বেশ পরিচিত।

কৃষক নূর মোহাম্মদ জানান, চলতি রোপা আমন মৌসুমে ১ একর জমিতে ৭৪ জাতের ধান সঙ্করায়ণের মাধ্যমে উদ্ভাবন করছেন, এর মধ্যে নতুন প্রজাতির একটি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। তিনি বলেন, সবগুলো ধানই পাঁক ধরেছে, এর মধ্যে কিছু ধান কর্তন করা হয়েছে, বাঁকি গুলোও প্রদর্শনের পর কাটা হবে। তিনি আরো বলেন ধানের নম্বর প্লেট দেয়া হেেয় ক্ষেতের এসব ধান কৃষি কর্মকর্তারা দেখে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করবেন। কোন কোন জাতকে স্বীকৃতির দেয়া হবে।

তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শামিমুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, নূর মোহাম্মদ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ধানের বীজ সংগ্রহ করে ধান চাষ করেন। সরকার অনুমোদিত না হওয়ায় ধানের জাত সম্পর্কে বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

আরও পড়ুন: বাড়িতে আমন ধানের বীজ সংরক্ষণের কৌশল

তিনি বলেন, নূর মোহাম্মদ ধান জাতের অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছেন । হয়তো বা সময় সাপেক্ষে অনুমোদ পেয়েও যাবেন। জমিতে ধান চাষ করতে গিয়ে যখন সমস্যার সম্মুখীন তখন আমরা বিভিন্নভাবে তাকে পরামর্শ দিই। এই ধান গবেষক নূর মোহাম্মদ দেশের সম্পদ ও গর্ব।

এগ্রিকেয়ার / এমবি