নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: গবেষণার অভিজ্ঞতায় নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় করতে হবে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু।

আজ বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) কর্তৃক আয়োজিত ‘‘Experience Sharing on Research Achievement of Scavenging (Deshi) Poultry Conservation and Development Project’’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, মেধাবী জাতি গড়তে হলে প্রাণিজ আমিষের বিকল্প নেই আর এ জন্য গবেষণা কার্যক্রমকে আরো জোরদার করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ কৃষি ও প্রাণিসম্পদের উপর নির্ভরশীল। এই মাধ্যমে ২০% প্রত্যক্ষ এবং ৫০% লোকের পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়নের পাশাপাশি তারা আর্থিকভাবে সাবলম্বী হচ্ছে। গবেষণা অভিজ্ঞতা মাঠপর্যায়ে গুরুত্বের সাথে সম্প্রসারণ করার জন্য বিএলআরআই তথা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ এনামুর রহমান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ রইছউল আলম মন্ডল। সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাঃ হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক, মহাপরিচালক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, ঢাকা।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডা. মোঃ এনামুর রহমান বলেন, এই কর্মশালায় উপস্থিত দেশী বিদেশী পোল্ট্রি বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গের মূল্যবান মতামতের আলোকে এ দেশে পোল্ট্রি সেক্টরের উন্নয়নের জন্য দিক নির্দেশনামূলক একটি গ্রহণযোগ্য সুপারিশমালা তৈরী হবে।

তিনি বলেন, প্রণীত দিকনির্দেশনা ও সুপারিশমালার আলোকে এ দেশে পোল্ট্রি উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আমরা মনে করি। বাস্তবসম্মত গবেষণা প্রকল্পপ্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে খামারিদের সমস্যানিরূপণের জন্য টেকসই ও যুগোপযোগী প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও হস্তান্তর বিষয়ে গুরুত্ব দেয়ার জন্য তিনি প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সচিব মোঃ রইছউল আলম মণ্ডল বলেন, খাদ্যে স্বয়ম্পূর্ণ হলেও প্রাণিজ আমিষের চাহিদা এখনো ঘাটতি রয়েছে। তাই গবেষণার অভিজ্ঞতার মাধ্যমে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আন্ত:ইনস্টিটিউট গবেষণা কার্যক্রমের সমন্বয় থাকা একান্ত জরুরি।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক বলেন, পোল্ট্রি সেক্টরের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। ইতোমধ্যে বিএলআরআই কর্তৃক উদ্ভাবিত বেশকিছু প্রযুক্তি আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে যা আমরা মাঠপর্যায়ে সম্প্রসারণ করছি। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।

সভাপতির ভাষণে ড. নাথু রাম সরকার বিএলআরআই এর সংক্ষিপ্ত কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পোল্ট্রি সেক্টরের উন্নয়নের জন্য আমরা গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছি এবং আরো প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য আমরা গবেষণাকার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। আমাদের উন্নয়নকৃত দেশী মুরগীর জাতসমূহ ডিম ও মাংসের চাহিদাপূরণে ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরো বলেন, স্বল্প জায়গায় অধিক নিরাপদ আমিষের উৎপাদনবৃদ্ধির লক্ষ্যে অঞ্চলভিত্তিক সমস্যানিরুপন করে নতুন নতুন গবেষণাকার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে, যা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত জরুরি ও প্রয়োজনীয়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার শিক্ষক, বিজ্ঞানী ও সম্প্রসারণকর্মীসহ প্রায় ১৫০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বিএলআরআই।