নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: উন্নতমানের বীজ কৃষকের মাঝে সরবরাহ করার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেছেন, প্রত্যেক সংস্থাকে (বিএডিসি, ডিএই ও বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সী) বীজের চাহিদা নিরুপন করে উন্নতমানের বীজ কৃষকের মাঝে সরবরাহ করতে হবে।

বুধবার (২০ মার্চ) রাজধানীর ফার্মগেটের বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) অডিটরিয়ামে ‘বাংলাদেশে মানসম্পন্ন বীজের গবেষণা, উন্নয়ন ও উৎপাদন’ শীর্ষক দুই দিনের জাতীয় কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বললেন, মানুষ আস্তে আস্তে পুষ্টিকর খাদ্যের দিকে যাচ্ছে। এক সময় শুধু ভাতের ওপরই নির্ভরশীল ছিলো। এখন মানুষ বেশি করে শাক-সবজি খাচ্ছে বলে মাথাপিছু চালের কনজাম্পশন দিন দিন কমছে।

আগে যেখানে ১৮০ কেজি ছিলো, যেখানে বর্তমানে ১৫৬ কেজি লাগে। যে পরিমান ধান উৎপন্ন হচ্ছে তা মানুষের চাহিদা পূরণে সক্ষম বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।

তিনি আরও বললেন, এখন অন্যান্য অর্থকরী ফসলের দিকে নজর দিতে হবে। যেমন খেজুরের বাজার মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক বেশি। আমাদের শতকরা ২৬ ভাগ বীজ প্রাইভেট সেক্টর থেকে আসে। এক্ষেত্রে তিন সংস্থার সমন্বয়ে কৃষকের মাঝে ভালো, উন্নতমানের বীজ সরবরাহ করতে হবে।

কৃষিমন্ত্রী বললেন, বীজের স্বাস্থ্যের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। যেসব ফসল আন্তার্জাতিক বাজারে রপ্তানী করা যায় না, সেসব ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি কমিয়ে চাহিদা মোতাবেক উৎপাদন করতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের যেসব অঞ্চলে যেসব ফসল উৎপাদন বেশি হয়, সেসব অঞ্চলে সেই ফসল উৎপাদন করতে হবে। সবাই মিলে কাজ করলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব কোন অংশে কমবে না।

উন্নতমানের বীজ কৃষকের মাঝে

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মোঃ কবির ইকরামুল হকের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ ময়নুল হক।

এ সময় বিশষ অতিথি হিসেবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নাসিরুজ্জামান ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ফজলে ওয়াহেদ খোন্দকার উপস্থিত ছিলেন।

বিভিন্ন সংস্থা প্রধান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয় ও নার্সভুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এ কর্মশালায় অংশ নিচ্ছেন।

কর্মশালায় মূল বক্তব্যসহ নার্সভুক্ত প্রতিষ্ঠান হতে ১৬টি, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হতে ৩টি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সেী, বিএডিসি ও কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে মোট ২৬টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে।

কারিগরী সেশনে প্রথম পর্বের ৪টির মধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক ড. মো: আবদুর মুঈদ, বিএডিসির জেনারেল ম্যানেজার (বীজ) আশুতোষ লাহিড়ী, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সীর পরিচালক মোঃ খায়রুল বাশার ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের বীজ উইংয়ের প্রধান বীজতত্ববিদ মোঃ আজিম উদ্দিন  প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

আরও পড়ুন: এলাকা উপযোগী ফসল আবাদের আহ্বান

ব্রাসেলস স্প্রাউট নতুন ফসল নতুন সম্ভাবনা

ভোজ্য তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির আহ্বান

কারিগরী সেশনে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচলক ড. ওয়ায়েস কবীরের সভাপতিত্বে কো-চেয়ারম্যানের বক্তব্য দেন ভূঁইয়া। এ সময় উপস্থাপিত ৪টি প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক, কৃষি মন্ত্রণালয়ের এপিএ এক্সপার্ট পুলের সদস্য মোঃ হামিদুর রহমান।

কর্মশালায় বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণবিদ, শিক্ষক, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ২৫০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহন করে।