যন্ত্র আমের বোটা পঁচা রোগ প্রতিরোধ করবে

এগ্রিকেয়ার প্রতিবেদক: প্রচলিত পদ্ধতিতে গাছ থেকে আম সংগ্রহ কর‍তে গিয়ে বোটা ছিড়ে যাওয়ায় বোটা পঁচা রোগে আক্রান্ত হয় আম। ফলে আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হন।

এছাড়া বড় গাছ থেকে আম সংগ্রহ করতে গিয়েও চাষিদের হিমশিম খেতে হয়। খরচও পরে যায় অনেক। এরকম নানা সমস্যায় পরতে হয় চাষি ও ব্যবসায়ীদের।

 

তবে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি মিলছে চলতি বছর হতেই। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট’র (বারি) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের উদ্ভাবিত আম পারা যন্ত্র ব্যবহার করে সহজেই গাছ থেকে আম সংগ্রহ করতে পারবেন চাষিরা। এটি ব্যবহারে প্রতিরোধ হবে বোটা পঁচা রোগ।

বারি’র ফার্ম মেশিনারিজ অ্যান্ড পোস্ট হার্ভেস্ট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ঊর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নুরুল আমীন বলেন, প্রতিবছর প্রায় তিন থেকে চার শতাংশ আম বোটা পঁচা রোগে নষ্ট হয়। এতে সবচেয়ে বেশি আর্থিক ক্ষতির শিকার হন ব্যবসায়ীরা।

তিনি জানান, চাষিরা যখন প্রচলিত পদ্ধতিতে গাছ থেকে আম সংগ্রহ করেন তখন বোটা ভেঙ্গে যায়। যার ফলে বোটার কষ আমের গায়ে লেগে থাকে। এই কষ আঠালো হওয়ার কারণে ধুলাবালি, বায়ু প্রবাহিত জীবাণুও আমের শরীরে সহজেই লেগে যায়। আক্রান্ত হয় বোটা পঁচা রোগে।

এসব দিক বিবেচনা করেই এই যন্ত্রটি উদ্ভাবন করা হয়েছে। যন্ত্রটি দিয়ে আম সহজেই বোটাসহ সংগ্রহ করতে পারবেন চাষিরা। আমের গায়েও কোনো আঘাত লাগবে না। ফলে আমটি অক্ষত বা সতেজ থাকবে। এতে চাষি ও ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে আমগুলো সংরক্ষণ করতে পারবেন।

এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জানান, যন্ত্রটি শ্রমিক ও কষ্ট সাশ্রয়ী। ও কম হবে। এতে একদিকে যেমন খরচ কমবে অন্যদিকে কৃষকরা ও ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। এছাড়া বোটাওয়ালা আম দেখে ক্রেতারাও আকৃষ্ট হন।

বারি সূত্র জানায়, কেউ যন্ত্রটি পেতে চান তাহলে বারি’র ফার্ম মেশিনারিজ অ্যান্ড পোস্ট হার্ভেস্ট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে যোগাযোগ করতে পারেন। এখান থেকে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়। তবে যন্ত্রটি যে কেউ যে কোনো জায়গা থেকে তৈরি করতে পারবেন।

একটি যন্ত্র তৈরি করতে খরচ দুই হাজার দুই’শত টাকা। যন্ত্রটি কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয় বছর ব্যবহার করতে পারবেন।

১২ ফিট লম্বা অ্যালুমিনিয়াম পাইপের মাথায় একটি হার্ডওয়্যারে তৈরি একটি রিংয়ের মধ্য ব্লেট বা কাচি লাগানো থাকে যন্ত্রটিতে। হাডওয়্যার রিংয়ের সঙ্গে লাইলনের একটা ঝুড়ি লাগানো থাকে। ব্লেটটি লিভারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আর লিভারটি পাইপের গোড়ার অংশে লাগানো আছে।

যন্ত্রটি উদ্ভাবনে মূল দায়িত্ব পালন করেছেন ‌বারি’র বারি’র ফার্ম মেশিনারিজ অ্যান্ড পোস্ট হার্ভেস্ট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নুসরাত জাহান। তার সঙ্গে যোগাযোগ করেও এ বিষয়ে পরামর্শ পাওয়া যাবে।