আবু খালিদ, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বিশ্বব্যাপী এন্টিবায়োটিক এর ব্যবহার কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও এর ব্যবহার কমছে।

এন্টিবায়োটিক এর ব্যবহার কমাতে হলে এর বিকল্প নন-এন্টিবায়োটিক পণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি করতে হবে। যা স্কয়ার এগ্রোভেট করছে। কয়েকদিন আগেই স্কয়ার এগ্রোভেট এর পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি নন-এন্টিবায়োটিক পণ্য বাজারে সরবরাহ শুরু হয়েছে।

কথাগুলো বলছিলেন দেশের অন্যতম বৃহৎ ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এর এগ্রোভেট ডিভিশন’র সিনিয়র ম্যানেজার (সেলস) এ.টি.এম সাদেকুল ইসলাম তালুকদার।

রাজধানীতে তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি প্রদর্শনী-১৯তে প্রতিষ্ঠানটির প্যাভিলিয়নে এগ্রিকেয়ার২৪.কম এর সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এদিকে উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ এ পোল্ট্রি প্রদর্শনীতে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী স্কয়ার এগ্রোভেট এর প্যাভিলিয়নসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্যাভিলিয়ন ও মেলা পরিদর্শন করেন।

স্কয়ার এগ্রোভেট এর পণ্যসহ দেশের খামারিদের দিকনির্দেশনাসহ নানা দিক নিয়ে কথা বলেন গুণী বিক্রয় কর্মকর্তা এটিএম সাদেকুল ইসলাম তালুকদার।

এ সময়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র ম্যানেজার (মার্কেটিং) বিপ্লব কুমার সেন, গ্রুপ প্রডাক্ট ম্যানেজার মো. রুবায়েত নুরুল হাসান, ফিল্ড ম্যানেজার মো. মনিরুল ইসলাম, সেলস কোঅর্ডিনেটর মো. মিজানুর রহমানসহ অনেকে।

প্রাণি, পোল্ট্রি, মাছে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমে যাওয়ার পেছনে অগ্রণী ভূমিকায় রয়েছে স্কয়ার উল্লেখ করে সাদেকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, কিছুদিন আগে আমরাই বিশেষ একটা পদক্ষেপ নিয়েছি। এন্টিবায়োটিক বাদ দিয়ে নন-এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটার বেশ কয়েকটি প্রোডাক্ট বাজারে সরবরাহ শুরু করেছি।

‘এসব নন-এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটারগুলো নিয়ে আসছি ইউরোপিয়ান সোর্স থেকে। বিশেষত, এক্সভেট জার্মানী কোম্পানী থেকে বেশ কয়েকটি প্রোডাক্ট আনা হয়েছে।’ যোগ করেন তিনি।

সাদেকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, মাত্র দুই মাস আগে থেকে বাজারজাত শুরু করেছি। ইতোমধ্যেই আমরা দেশব্যাপী বেশ সাড়া পাচ্ছি। এই প্রোডাক্টগুলোর ব্যবহারকারীরা সতঃস্ফুর্তভাবে জানাচ্ছে যে, তারা উপকৃত হচ্ছেন। আমার বিশ্বাস এই প্রোডাক্টগুলো ব্যবহারের পাশাপাশি খামার ম্যানেজমেন্ট ঠিক থাকলে খামারিগণ লাভবান হবেন।

‘নন-এন্টিবায়োটিক প্রমোটার যদি ব্যবহার হয় তাহলে এন্টিবায়োটিক এর ব্যবহার অনেক কমে যাবে। এন্টিবায়োটিকের রেসিডিউয়াল ইফেক্ট থাকবে না, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী হবে। শুধু তাই নয়, এতে খামারীরা লাভবান হবে এবং ভোক্তারাও উপকার পাবে।’

এরকম প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে রয়েছে ওরিগো প্লাস Orego Plus, এ্যারোম্যাক্স (Aromax), টারবোটক্স (turbo Tox) নবোভাইটাল (Novovital), ইউকামেক্স (Yuccamax)। এই প্রোডাক্টগুলো আমরা এক্সভেট জার্মানী কোম্পানী থেকে নিয়েছি।

স্কয়ার এগ্রোভেট’র শুরুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০ বছর ধরে স্কয়ার এগ্রোভেট দেশের কৃষিতে সেবা দিয়ে আসছে। এখানে আমরা সব ধরণের পোল্ট্রি ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বড় বড় প্রতিষ্ঠান, ফিড মিল, নানা শ্রেণির উদ্যোক্তাদের সাথে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি।

স্কয়ারের পণ্যের প্রতি আস্থা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দক্ষ এ কর্মকর্তা প্রতিষ্ঠানটির উন্নত ও গুণগত মানসম্মত পণ্যের পাশাপাশি কমিটমেন্টকে এগিয়ে রাখেন।

তিনি বলেন, আমাদের প্রতিটি পণ্যেই উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি। ফলে মানের দিকদিয়ে শতভাগ উন্নত। আর আমরা ক্রেতাদের যে কমিটিমেন্ট করি তা শতভাগ পালন করি। এতে ক্রেতারা সন্তুষ্ট থাকার পাশাপাশি লাভবানও হন। ফলে তারা অনেকেই আমাদের পণ্যের বাইরে বিকল্প খুঁজতে যান না।

এছাড়া আমরা প্রত্যন্ত খামারি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করি খোঁজ খবর নেই। কোন সমস্যা বা পরামর্শ দরকার তা সঙ্গে সঙ্গে সরবরাহ করি। আমাদের টেকনিক্যাল টিম সবসময় এ নিয়ে কাজ করে। এ কারণে কিন্তু প্রতিবছরই আমাদের কলেবর ও বিক্রি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কৃষি খাতে স্কয়ারের সেবা দেয়ার উদ্দেশ্যে কী এমন প্রশ্নের উত্তরে এ কর্মকর্তা জানান, অনেক আগে থেকেই স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড বাংলাদেশে এক নম্বর ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানী। হিউম্যান মেডিসিনে আমরা শুধু দেশে নয় বিশ্বব্যাপী সুনাম কুড়িয়েছি। আমাদের প্রোডাক্ট বাংলাদেশ তো বটেই, অনেক দেশে রপ্তানী হচ্ছে।

‘এ থেকেই আমাদের কোম্পানীর প্রতিষ্ঠাতা এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর স্যার চিন্তা করলেন যে, একেবারে রুট লেভেলে যারা কাজ করে তাদের কীভাবে সার্ভিস প্রোভাইড করা যায়, কোয়ালিটি পণ্য দেয়া যায়।’

কারণ এখানে যারা একেবারে রুট লেভেলে কাজ করে তারা কিন্তু জেনে, না জেনে, বুঝে, না বুঝে অনেকের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরণের পণ্য নিয়ে থাকেন। কোথাও কোথাও তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এই ধরণের ক্ষতির শিকার যেন না হয়, তাদের হাতে যেন মানসম্মত একটি পণ্য যায়। এসব চিন্তা-ভাবনা থেকেই ম্যানেজমেন্ট এর পক্ষ থেকে কৃষিতে আসা।

মূলত সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে উন্নত মানের গুণগত মানসম্মত পণ্য যেন কৃষকরা পায় সেই লক্ষ্য নিয়েই স্কয়ারের এগ্রোভেটে আসা।

খামারীদের উদ্দেশ্যে এটিএম সাদেকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, প্রত্যেক খামারীকে সচেতন হওয়াটা জরুরি। পোল্ট্রি খামারী হোক আর বড় এনিমেল অথবা মাছের খামারি হোক সবাইকে আগে জানতে হবে খামার ব্যবস্থাপনা।

‘যিনি খামারটা করতে যাবেন তাকে আগে সে বিষয়ে পূর্ণ ধারণা ও জ্ঞান নিতে হবে। সবকিছু জেনেই খামার শুরু করা উচিৎ। তাহলে কোনো সময়ই খামার করে লোকসানের শিকার হবেন না।’