আবু খালিদ ও এম হাসান, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দেশ-বিদেশের খামারি ও উদ্যোক্তাদের উপস্থিতিতে মিলনমেলায় পরিণত হওয়া পোল্ট্রি প্রদর্শনী শেষ হয়েছে। এক ছাদের নিচে  পোল্ট্রি শিল্পের যুগপোযোগী সব প্রযুক্তিসহ নানা বিষয়ে সেবা পাওয়ায় মুগ্ধ সবাই।

তিনদিনব্যাপী রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শো-১৯ নামে এ মেলা গত বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) শুরু হয়ে শনিবার (৯ মার্চ) শেষ হয়।

ওয়ার্ল্ড সায়েন্স পোল্ট্রি এসোসিয়েশন’স (ওয়াপসা, বিবি) বাংলাদেশ শাখা ও বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ মেলায় দেশ-বিদেশের প্রায় এক লাখ দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে।

উদ্যোক্তা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও খামারিদের কুশল ও মতবিনিময়, সমস্যার সমাধানে পরামর্শ, প্রযুক্তির সাথে সেলফি এবং ছবি তোলা, অপরিচিতদের সাথে পরিচিত হওয়াসহ নানা দৃশ্যে প্রাণবন্ত ছিলো তিনদিনের এ প্রদর্শনী।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা খামারিরা নিজেদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির সাথে পরিচিতির পাশাপাশি পূর্ণ ধারণা নিয়ে খুশি মনে বাড়ি ফিরেন। বিভিন্ন প্রতিষ্টানের পক্ষ থেকে ছোট ছোট উপহার পেয়েও খুশি তারা।

বিভিন্ন সাজে সাজানো ছিলো পোল্ট্রি শিল্পে সেবাদানকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্যাভিলিয়ন। স্মার্ট কর্মীরা যেন মিশে গেছিলেন দর্শনার্থীদের সাথে।

বিদেশী উদ্যোক্তা ও দর্শনার্থীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতিও ছিলো চোখে ধরার মতো দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাওয়া পোল্ট্রি শিল্পের মেলায়। ছোট ছোট আকারে সেমিনার ও বিভিন্ন প্যাভিলিয়নে দেশি উদ্যোক্তা ও খামারিদের সাথে মিশে গিয়েছিলেন ২২ দেশের বিদেশীরা।

প্রদর্শনীতে ময়মনসিংহ থেকে আসা খামারি কামরুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারলাম। অনেকের সাথে মতবিনিময় হলো। খুবই ভালো আয়োজন। পোল্ট্রি শিল্পে এতো প্রযুক্তি মেলায় না আসলে জানাই হতো না।

খামারিদের দক্ষ করতে বিভিন্ন কর্মসূচির উদ্বোধন, সেলফি কনটেস্ট, কুকিং কনটেস্টসহ নতুন নতুন নানা আয়োজন মেলাকে আরও বেশি প্রাণবন্ত করে তোলে। শিশু থেকে সব বয়সিদের উপস্থিতি বাড়িয়ে দেয় মেলার প্রাণশক্তি। উৎসবে রুপ নেয় মেলা।

শনিবার (৯মার্চ) সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা পোল্ট্রি শিল্পের সম্ভবনা, সমস্যা ও প্রতিকারের নানা দিক তুলে ধরেন। এ শিল্পকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যে সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে মেলায় অংশ নেয়া প্যাভিলিয়নের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাগে তিন প্রতিষ্ঠানের প্যাভিলিয়নকে পুরুস্কৃত করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব পুরুস্কার বিতরণ করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু।

ওয়াপসা-বিবি’র সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ রইছউল আলম মন্ডল।

বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য প্রফেসর ড. মো. আলী আকবর, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক, প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. নাথুরাম সরকার, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) সভাপতি মসিউর রহমান, ওয়াপসা বাংলাদেশ শাখার সাধারন সম্পাদক মো. মাহাবুব হাসান।

গত বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। মেলা শুরুর আগে দুইদিন (৫ ও ৬ মার্চ) অনুষ্ঠিত হয় দেশ বিদেশের পোল্ট্রি বিজ্ঞানী, গবেষক, উদ্যোক্তা, খামারিদের উপস্থিতিতে আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি সেমিনার।