সহজেই চাষযোগ্য লেটুসপাতার যত

ফসল চাষাবাদ ও করণীয় ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: নানা গুণে সমৃদ্ধ লেটুস দেশের সব জায়গাতেই চাষ করা যায়। জেনে নেয়া যাক সহজেই চাষযোগ্য লেটুসপাতার যত গুণ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য।

লেটুস চাষে রোগ বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণের তেমন কোন সমস্যা নেই। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত জাত বারি লেটুস-১ খুব সহজেই চাষ করা যেতে পারে।

এ জাতের বৈশিষ্ট্য: ১। পাতা, পাতার বোঁটা ও কান্ড সবুজ, নরম হয়। ২। পাতা ২০ সেমি লম্বা ও ২২ সেমি প্রশস্ত হয়ে থাকে। ৩। প্রতি গাছের গড় ওজন ৩০০-৩৫০ গ্রাম। ৪। ফলন ২৭-২৯ টন/হেঃ। মাড়াইয়ের সময়:  বীজ বোনার ৪০-৫০ দিনের মধ্যে খাওয়ার উপযোগী হয়।

লেটুস পাতার যত গুণ: লেটুসপাতা সোডিয়াম ভিটামিন-বি ওয়ান, বি টু থ্রি শরীরের যে কোনো অঙ্গে পানি জমে যাওয়া রোধ করে।

এ পাতায় নিয়মিত খেলে বার্ধক্য আসে দেরিতে ত্বকের বলিরেখাও পড়ে না। ঠাণ্ডাজনিত অসুখ হাঁচি, কাশি, কফ, হাঁপানি ও ফুসফুসের ইনফেকশন দূর করতে সালাদে প্রতিদিন লেটুসপাতা খেতে পারেন।

কাঁচা বা ভাজা লেটুসপাতার সালাদ রক্ত পরিষ্কার করে, হৃৎপিণ্ডের শিরা-উপশিরার দেয়ালে চর্বি জমাট বাঁধতে বাধা দেয়।

লেটুসপাতায় ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে। ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে লেটুসপাতার গুরুত্ব অনেক বেশি। এছাড়া ওজন কমাতে এ পাতা দারুন কাজ করে। ফাস্ট ফুড, সালাদ কিংবা রান্নাতেও ব্যবহার করা হয়।

ত্বকের কোথাও কেটে বা ছিঁড় গেলে এ পাতা থেঁতলে ব্যথার স্থানে লাগালে ব্যথা কমে যায়। লেটুসপাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিতে সহায়তা করার কারণে অ্যামোনিয়া বা রক্তশূন্য রোগীদের জন্য লেটুসপাতা উত্তম খাবার।

এর ভিটামিন কে হাড়র মেটাবলিজম বাড়ায়। লেটুসপাতা দ্রুত হাড় ক্ষয় হওয়া থেকে শরীরকে রক্ষা করে। লেটুসপাতার পুষ্টি উপাদান হাত-পা ফুলে যাওয়া, কিডনির পাথর, কিডনির কার্যহীনতা, মূত্রথলির ইনফেকশন ও কিডনির ব্যথায় লেটুসপাতা উপকারী।

লেটুসপাতা খুশকি কমাতে সাহায্য করে। শ্যাম্পুতে লেটুসপাতা গুঁড়া ব্যবহার করা হয়। রোদে পোড়াভাব দূর করতে লেটুপসাতা থেঁতলে ত্বকে দিলে ত্বকের উপকার হয়।

গর্ভবতী নারীরা কাঁচা লেটুসপাতা খেলে মা ও শিশু উভয়ের শরীরেই রক্তের মাত্রা বাড়ে। চোখের ইনফেকশনজনিত সমস্যা কমায় লেটুসপাতা।

লেটুস (Lactuca sativa) ডেজি (daisy) পরিবারের এস্টেরাসি গোত্রের একটি বার্ষিক উদ্ভিদ লেটুস গাছের পাতা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তরকারি হিসেবে জন্মানো হয়, তবে মাঝে মাঝে এর ডাটা এবং বীজও ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

প্রাচীন মিশরীয়রা আগাছা থেকে সর্বপ্রথম লেটুস আবিষ্কার করে যার বীজ ব্যবহার করে তেল তৈরী করা হয় এবং এর সরস পাতাগুলো খাবার উদ্ভিজ্জে পরিণত হয়। তেলসমৃদ্ধ বীজের কারণে এই উদ্ভিজ্জ গ্রিক এবং রোমানদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। যারা পরবর্তীতে এর নামকরণ করেন ল্যাকটুকা, যার ইংরেজী আধুনিক নামকরণ ‘লেটুস’।

সহজেই চাষযোগ্য লেটুসপাতার যত গুণ সংবাদটি তৈরিতে বারি ও অর্থসূচক সংবাদ মাধ্যমের তথ্য সহযোগিতা নেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: শিমের শোষক পোকা ও মাইটের আক্রমণের প্রতিকার