অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: গত ৮ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার ভাঙা চাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। দেশটি গত বছর আন্তর্জাতিক বাজারে রেকর্ড পরিমাণ চাল রফতানি করেছিল। তবে এ বছর প্রায় অর্ধেকে নেমে আসতে পারে বলে জানিয়েছে মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিস (এফএএস)।

এক দশকের বেশি সময় ধরে স্থিতিশীল চালের আন্তর্জাতিক বাজার। কিন্তু সম্প্রতি ভারত চাল রফতানি বন্ধ ঘোষণা করার পর থেকে সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তা চরম আকার ধারণ করেছে। ফলে শস্যটির বৈশ্বিক দাম আকাশচুম্বী হয়ে ওঠার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

গ্লোবাল এগ্রিকালচারাল ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক শীর্ষক প্রতিবেদনে এফএএস জানায়, ২০২২-২৩ মৌসুমে ভারত ১ কোটি ৭০ লাখ টন চাল রফতানি করতে সক্ষম হবে। গত বছর রফতানি করা হয়েছিল ২ কোটি ১৫ লাখ টন।

সে সময়ে অন্যান্য চাল রফতানিতে ২০ শতাংশ রফতানি শুল্কও আরোপ করা হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে অসন্তোষ দেখা দেয় আমদানি ও রফতানিকারক পর্যায়ে। ক্রেতারা অতিরিক্ত শুল্ক পরিশোধে অস্বীকৃতি জানালে বন্দরগুলোয় আটকা পড়ে অন্তত ১০ লাখ টন চাল।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

সোনালী মুরগির নামে আমরা কি খাচ্ছি!

ব্রয়লারে ১০ সোনালী মুরগির কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা

লেয়ারে ৬০ লাখ টাকা বিনিয়োগে হতাশ প্রবাস ফেরত মালেক

সর্বশেষ সরকারি পরিসংখ্যানের তথ্যানুসারে, ২০২১-২২ বিপণন মৌসুম শেষে চালের মজুদ ৩ কোটি ৫০ লাখ টনে দাঁড়িয়েছে। ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুম শেষে চালের মজুদ কমে ৩ কোটি ২০ লাখ টনে দাঁড়াবে। রফতানি কমলেও স্থানীয় ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে মজুদ নিম্নমুখী হয়ে উঠছে।

বিশ্লেষকরা জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে বৈরী আবহাওয়ার কারণে চাল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে চালের পর্যান্ত সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ভারত রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চালের বৈশ্বিক চাহিদা। এতে শিগগিরই চালের বাজারে উল্লম্ফন দেখা দিতে পারে।

সরকার জানায়, ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে ধান রোপণ ও খরিপ চালের উৎপাদন কম হওয়ায় স্থানীয় বাজারে চালের মূল্য বেড়েছে। তবে চলতি সপ্তাহের শুরুতে ভারত সরকার জানায়, দেশে চাল ও গমের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। প্রয়োজনে স্থানীয় বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে সরকার।

ভারসাম্যহীন বৃষ্টিপাতের কারণে ভারতে ধান আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণেই সেপ্টেম্বরে দেশটি রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। অন্যদিকে ভয়াবহ বন্যার কারণে পাকিস্তানে চাল উৎপাদনে বিপর্যয় নেমেছে। ঠিক উল্টো দিকে প্রধান ব্যবহারকারী দেশ বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনে ব্যবহার বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।

এ কারণেই ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে চালের বৈশ্বিক চাহিদা উৎপাদনকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। বিষয়টি এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোর জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কারণ এসব দেশের প্রধান খাদ্যশস্যই চাল। আবার কিছু দেশ চালের মোট চাহিদার ৬০ শতাংশই আমদানির মাধ্যমে পূরণ করে। সেসব দেশের সরবরাহ বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ