ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: আন্তঃফসল হিসেবে কলার সঙ্গে ফুল ও বাঁধাকপি চাষ করেছেন কৃষক হাফিজার রহমান। জয়পুরহাট জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল সদর উপজেলার কোচকুড়ি গ্রামের কৃষকরা এক জমিতে একসঙ্গে ছয় ফসল চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। আন্তঃফসল চাষ করে সফলতার হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে।

৬৬ শতাংশ জমিতে আন্তঃফসল হিসেবে কলার সঙ্গে ফুল ও বাঁধাকপি চাষ করেছেন হাফিজার রহমান। এছাড়াও বেগুনেরর সঙ্গে মরিচ, মরিচের সঙ্গে তিল, ডাটা, লালশাক, কলমি, ঢেঁড়স, পুঁইশাক রয়েছে। এমনিভাবে এক ফসলের মধ্যে আরেক ফসল চাষ করে বাড়তি আয় করছেন প্রান্তিক কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা এক ইঞ্চি জায়গাও যেন পতিত না থাকে, সরকারের এ ঘোষণা বাস্তবায়নে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে ২০২১-২০২২ খরিপ মৌসুমে (চৈত্র থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত সময়কে খরিপ মৌসুম) জেলায় এক হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে আন্তঃফসলের চাষ হয়েছে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার ৬৮৭ মেট্রিক টন সবজিসহ অন্যান্য ফসল।

প্রতিবেশী আমেনা বেগম ও মাহমুদা বেগম বলেন, হাফিজার রহমানকে দেখে আমরাও আন্তঃফসল হিসেবে নানা ফসল চাষ করছি। আগে জমিতে একটি ফসল চাষ করা হতো। এখন সংসারে বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে এক ফসলের সঙ্গে একাধিক ফসল চাষ করছেন। এর নাম দেওয়া হয়েছে আন্তঃফসল চাষ।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

মিশ্র ফসলে লাভবান হচ্ছেন রাজশাহীর চাষিরা

নতুন ফসল মুসলি চাষে হতে পারেন লাখপতি, কেজি ১২’শত টাকা

নতুন ফসল চিয়ার কেজি ৫’শ টাকা, ভাগ্য বদলাচ্ছে কৃষকের!

দেশে এবার ভোজ্য তেলের যোগান দিতে নতুন ফসল ‘সাউ পেরিলা-১’

পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান জানান, আন্তঃফসল চাষ হিসেবে এ উপজেলায় প্রায় ৫৫০ হেক্টর জমি রয়েছে। এর মধ্যে আলুর সঙ্গে ভূট্টা, আলুর সঙ্গে মিষ্টি কুমড়া, আখের সঙ্গে পেঁয়াজ, বেগুনের সঙ্গে মরিচ আবার একই সঙ্গে লাল শাক, কলমি, পালং শাক, সিম।

আক্কেলপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন বলেন, আন্তঃফসল হিসেবে আক্কেলপুর উপজেলায় আলুর সঙ্গে মিষ্টি কুমড়া ৮৫ হেক্টর, আলুর সঙ্গে ভূট্টা ৪৫ হেক্টরসহ অন্যান্য ফসল রয়েছে।

সদর উপজেলার সহকারি কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অমল চন্দ্র মন্ডল জানান, সদর উপজেলায় ১৩০ বিঘা জমিতে আন্তঃফসল হিসেবে ভুট্টার সঙ্গে মিষ্টি কুমড়া ও আখের সঙ্গে পেঁয়াজ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচি বিশেষ সহায়ক হিসেবে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

ভাদসা ইউনিয়নের পাথুরিয়া এলাকার কৃষক সাগর হোসেন, দুর্গাদহ এলাকার কৃষক তসলিম উদ্দিন, প্রফুল্ল চন্দ্র আন্তঃফসল চাষে সফলতার কথা জানান।

স্থানীয় জাকস ফাউন্ডশনের নির্বাহী পরিচালক মো. নূরুল আমিন জানান, এক ইঞ্চি জায়গাও যেন পতিত না থাকে, এ ঘোষণা বাস্তবায়নে পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে বাড়ির আশ-পাশে পতিত জমিতে সবজিসহ নানা ফসল চাষে গ্রামীণ পর্যায়ে নারীদের সার, বীজসহ আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। আন্তঃফসল চাষে হাসি ফুটছে চাষিদের সংবাদের তথ্য ইত্তেফাক থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ