শীর্ষ চাল আমদানিকারক হতে

ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বিশ্বের চতুর্থ শীর্ষ চাল উৎপাদনকারী দেশ ইন্দোনেশিয়া ।এক বছরের ব্যবধানে দেশটিতে চাল উৎপাদন কমেছে সাত লাখ টন। মৌসুমের শুরুতে তীব্র খরা সেইসাথে নভেল করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) দেশটিতে আগের তুলনায় কমে ১ কোটি ৬১ লাখ টন চাল উৎপাদন হয়েছে। খবর এগ্রিমানি ও জাকার্তা পোস্ট।

জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে ইন্দোনেশিয়ায় সব মিলিয়ে ১ কোটি ৬১ লাখ টন চাল উৎপাদন হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ দশমিক ২ শতাংশ কম। ২০১৯ সাল থেকেই ইন্দোনেশিয়ার চাল উৎপাদনকারী এলাকাগুলোয় খরা দেখা দেয়, যা চলতি বছরের প্রথমার্ধেও অব্যাহত ছিল। সময়মতো বৃষ্টির দেখা মিলেনি। খরার কারণে এবার ইন্দোনেশিয়ায় ধান-চাল উৎপাদন বিঘ্নিত হতে পারে, আগেই এমন পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছিল ডব্লিউএফপি। সেই সঙ্গে বলা হয়, বর্ষার শেষ ভাগে ইন্দোনেশিয়ায় বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে। ওই সময় ধান ক্ষেতে থাকলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। একদিকে খরার কারণে আবাদ মৌসুম দেরিতে শুরু হওয়া, অন্যদিকে বন্যার পূর্বাভাস—স্বাভাবিকভাবেই এবার দেশটিতে ধান উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কমে আসতে পারে চাল উৎপাদনও।

একদিকে মৌসুমের শুরুতে তীব্র খরা, অন্যদিকে ফসল সংগ্রহের সময়ে বন্যার পূর্বাভাস—বিপরীতমুখী এ দুই পরিস্থিতি ইন্দোনেশিয়ার কৃষিতে ভয়াবহ রকমের চ্যালেঞ্জের জন্ম দিয়েছে। বছরের শুরু থেকে চাল উৎপাদন ১৩ শতাংশের বেশি কমে গেছে। ডব্লিউএফপি বলছে, বৈরী পরিস্থিতির কারণে চলতি বছরের অবশিষ্ট ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ইন্দোনেশিয়ায় আরো ১ কোটি ২৫ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ১ কোটি ৫০ লাখ টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, পরপর দুই বছর ধরে ইন্দোনেশিয়ায় চাল উৎপাদনে মন্দা ভাব বজায় রয়েছে। ২০১৭ সালে দেশটিতে ৩ কোটি ৭০ লাখ টন চাল উৎপাদন হয়েছিল, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি। পরের বছর দেশটিতে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ কমে খাদ্যপণ্যটির বার্ষিক উৎপাদন ৩ কোটি ৪২ লাখ টনে নেমে আসে। আর গত বছর ইন্দোনেশিয়ায় সব মিলিয়ে ৩ কোটি ৩৫ লাখ টন চাল উৎপাদন হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ কম। এক বছরের ব্যবধানে দেশটিতে খাদ্যপণ্যটির উৎপাদন কমেছে সাত লাখ টন।

প্রতিকূল আবহাওয়া পরিস্থিতির পাশাপাশি বছরের শুরু থেকে নভেল করোনাভাইরাসের মহামারী ইন্দোনেশিয়ার ধান-চাল উৎপাদন খাতে নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়। ভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে শ্রমিক সংকটে ব্যাহত হয় উৎপাদন কার্যক্রম। তবে নানামুখী চ্যালেঞ্জ ছাপিয়ে চলতি বছর শেষে ইন্দোনেশিয়ায় সব মিলিয়ে ৩ কোটি ৪৯ লাখ টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইউএসডিএ।

এক বছরের ব্যবধানে ইন্দোনেশিয়ায় চাল উৎপাদন কমেছে সাত লাখ টন শিরোনামে সংবাদের তথ্য বণিক বার্তা থেকে নেওয়া হয়েছে।