নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: এই প্রথম দেশের পটোল-পেঁপে যাচ্ছে ইউরোপের বাজারে। শুধু পটোল-পেঁপে ইতালি ও ইংল্যান্ডে যাচ্ছে না, সাথে রয়েছে কচুরলতি ও কাঁচকলাও।

গত শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ভিলেজ সুপারমার্কেট থেকে এসব সবজি পাঠানো হয়। এর আগে যশোর থেকে সবজি ও সাতক্ষীরা থেকে আম ইউরোপে রপ্তানি শুরু হয়। এবারই প্রথম খুলনা থেকে উৎপাদিত সবজি ইউরোপে গেল।

পড়তে পারেন: যেভাবে পটল চাষে শতভাগ সফলতা আসে

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ সবজি রপ্তানিতে সার্বিক সহযোগিতা করছে। আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে ‘সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া’ নামের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। এই সংস্থার ‘সফল’ নামের একটি প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হয়। মূলত ‘সফল’ প্রকল্পের আওতাভুক্ত কৃষকদের কাছ থেকেই সবজিগুলো নেওয়া হয়েছে।

সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া সংস্থার ফুডস অ্যান্ড ভেজিটেবলস বিভাগের ম্যানেজার নাজমুন নাহার বলেন, ২০১৩ সাল থেকেই খুলনা ও এর আশপাশের বিভিন্ন জেলার কৃষকদের নিরাপদ সবজি উৎপাদন নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এতদিন এসব সবজি ঢাকাসহ বড় বড় সুপারশপে পাঠানো হতো। এ বছর ১২০ টন সবজি রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

পড়তে পারেন: পটলে মাছি পোকা দমনে কার্যকরী উপায়

প্রথম চালানে এক টন সবজি রপ্তানি করা হয়েছে। এনএইচবি করপোরেশন ও আরআর এন্টারপ্রাইজ নামের দুটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এসব সবজি রপ্তানি করছে। এর মধ্যে এনএইচবি করপোরেশন ইতালি এবং আরআর এন্টারপ্রাইজ ইংল্যান্ডে সবজি রপ্তানি করবে। সকালে সবজিগুলো প্রক্রিয়াজাত করার পর তা পিকআপে করে পাঠানো হয় ঢাকায়। সেখান থেকেই উড়াল দেবে ইউরোপে।

সংশ্নিষ্টরা বলছেন, রপ্তানি বাজার খুলে যাওয়ায় আম ও সবজির প্রায় দ্বিগুণ দাম পাচ্ছেন কৃষকরা। এতদিন খুলনার কৃষকরা তা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। নিজেদের ঘাম ঝরানো সবজি বিদেশে যাচ্ছে শুনে খুশি কৃষকরাও। বেশি দাম পাওয়ার সম্ভাবনার কথাও বলছেন তারা।

পড়তে পারেন: পটলের মিলডিউ ও কাণ্ডের রস ঝরা রোগ দমনে করণীয়

শুক্রবার সকাল থেকেই ভিলেজ সুপারমার্কেটে ছিল অন্যরকম পরিবেশ। কেউ পটোল বাছাই করছেন, কেউ ধুয়ে পরিস্কার করছেন কচুরলতি। কেউবা কাঁচকলা প্যাকেটজাত করছেন। সবার মধ্যেই খুশির আমেজ। যারা কাজ করছেন তাদের গায়ে সবুজ গাউন, হাতে গ্লাভস পরা ছিল। খুব যত্ন করে ও সতর্কতার সঙ্গে কাজগুলো করছিলেন তারা।

ডুমুরিয়ার আটলিয়া ইউনিয়নের বরাতিয়া গ্রামের তাপস সরকার রপ্তানির জন্য সেখানে তিন মণ পটোল নিয়ে এসেছিলেন। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, সম্পূর্ণ বিষমুক্ত ও নিরাপদভাবেই সবজি উৎপাদন করা হয়েছে। বরাতিয়া গ্রামে থাকা ক্ষেত থেকে পেঁপে সংগ্রহ করে সেখানেই প্যাকেটজাত করছিলেন নিখিল নন্দী। তিনি বলেন, রপ্তানির জন্য উপযোগী করেই সবজি উৎপাদন করা হয়েছে।

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, ইউরোপের বাজারে আমাদের দেশের সবজি রপ্তানি হবে এটি সুখবর। রপ্তানি সফল হলে খুলনার কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে বলে মনে করছি।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ