শীর্ষ চাল আমদানিকারক হতে

আন্তর্জাতিক কৃষি ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: মহামারী করোনায় এগিয়ে যাচ্ছে কম্বোডিয়ার চাল রফতানি। করোনা ভাইরাসের কারণে চাল রফতানিতে কপাল খুলছে দেশটির।

চলতি বছরের শুরু থেকে নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী দেশটির চাল রফতানি খাতে কিছুটা আশঙ্কা তৈরি করেছিল। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে সামনের দিকে আগাচ্ছে কম্বোডিয়ার চাল রফতানি। চলতি বছর শেষে দেশটির চাল রফতানিতে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

আজ (১৮ জুন, ২০২০) থেকে ঠিক পাঁচ বছর আগে কম্বোডিয়া সরকার বছরে ১০ লাখ টন চাল রফতানির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। সময়সীমা ধরা হয়েছিল ২০২০ সালকে। সেই অনুযায়ী লক্ষ্য পূরণে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছিল দেশটি।

মূলত করোনা মহামারীতে বিভিন্ন দেশে আমদানি চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দেশটির চাল রফতানি খাতে প্রবৃদ্ধির এ সম্ভাবনা দেখছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। তবে ১০ লাখ টন রফতানির লক্ষ্য পূরণ করতে আরো দুই বছর সময় লাগতে পারে। খবর রয়টার্স ও খেমার টাইমস।

কম্বোডিয়ার কৃষি, বন এবং মৎস্যবিষয়ক মন্ত্রী ভেন সাখোন বলেন, নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী আমাদের চাল রফতানি খাতের জন্য সাপেবর হয়েছে। দেশে দেশে চালের চাহিদা বাড়তির দিকে রয়েছে। এরই মধ্যে অনেক দেশ বাড়তি চাহিদার চাপ সামলাতে খাদ্যপণ্যটির আমদানি বাড়িয়ে দিয়েছে। আর এতেই কপাল খুলছে কম্বোডিয়ার চাল রফতানিকারকদের।

তাদের কাছে প্রচুর বুকিং আসছে। ফলে চলতি বছর কম্বোডিয়া থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যটির রফতানি বাড়বে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এ পরিস্থিতি আমাদের চাল রফতানির লক্ষ্য পূরণে এক ধাপ এগিয়ে নেবে।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) কম্বোডিয়ার চাল রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেড়ে সাড়ে তিন লাখ টন ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কৃষি, বন এবং মৎস্যবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ফলে ২০১৫ সালে নির্ধারণ করে রাখা রফতানি লক্ষ্য পূরণে চলতি বছর এরই মধ্যে এক ধাপ এগিয়ে গেছেন কম্বোডিয়ার চাল রফতানিকারকরা।

এ বিষয়ে ভেন সাখোন বলেন, করোনা মহামারীতে ভিয়েতনামসহ কয়েকটি দেশ চাল রফতানি সাময়িক বন্ধ রেখেছিল। নিজেদের জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কয়েকটি দেশ চলতি বছর খাদ্যপণ্যটির রফতানিতে লাগাম টেনেছে। এ পরিস্থিতি কম্বোডিয়ার চাল রফতানিকারকদের সামনে রফতানি বাড়ানোর বড় সুযোগ তৈরি করেছে।

কম্বোডিয়ান রাইস ফেডারেশনের (সিআরএফ) সেক্রেটারি জেনারেল লুন ইয়েং বলেন, গত বছরও কম্বোডিয়া থেকে এক মাসে ন্যূনতম ২০ হাজার টন চাল রফতানি হয়েছিল। চলতি বছর এর পরিমাণ ন্যূনতম ৫০ হাজার টনে উন্নীত হয়েছে। এভাবেই করোনা মহামারী আমাদের চাল রফতানি খাতকে চাঙ্গা করে তুলছে।

এর পরও চলতি বছর কম্বোডিয়া থেকে চাল রফতানিতে ১০ লাখ টনের লক্ষ্য পূরণ হবে না বলে মনে করছে সিআরএফ। বছর শেষে দেশটি থেকে আট লাখ টনের মতো চাল রফতানি হতে পারে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। লুন ইয়েং বলেন, চাল রফতানিতে ১০ লাখ টনের লক্ষ্য পূরণে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

কেননা চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোয় বাজার বিকাশে আমরা এখনো পুরোপুরি সফল হতে পারিনি। এটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।

আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডে ১ মাসের মধ্যে চালের দাম সর্বোচ্চ

দেশটির সরকারি হিসাবে গত বছর কম্বোডিয়া থেকে ৬ লাখ ২০ হাজার ১০৬ টন চাল রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক ৯৭ শতাংশ কম। ২০১৮ সালে দেশটি থেকে ৬ লাখ ২৬ হাজার ২২৫ টন চাল রফতানি হয়েছিল।

করোনায় এগিয়ে যাচ্ছে কম্বোডিয়ার চাল রফতানি শিরোনামের সংবাদটির তথ্য বণিক বার্তা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।