ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নে কুমড়া চাষে স্বাবলম্বী হচ্ছেন কৃষকরা। তারা বলছেন, ধানের চেয়ে কুমড়াতে খরচ কম আর লাভ প্রায় তিন গুণ।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ধানের পরিবর্তে কুমড়া চাষ করেছেন অনেকেই। ধান চাষের চেয়ে কুমড়া চাষে খরচ কম। তাই কৃষকদের কুমড়া চাষে আগ্রহ বেড়েছে। আর এ সবজি জাতীয় ফসল চাষে স্বাবলম্বীও হয়েছেন অনেকে। চলতি মৌসুমে কালিদহ ইউনিয়নের ৪শ শতক জমিতে কুমড়া চাষ করা হয়। এসব জমিতে মিষ্টি কুমড়া ও চাল কুমড়া চাষ করা হয়েছে। মিষ্টি কুমড়া তরকারি হিসেবে বেশি বিক্রি হয়।

জানা গেছে, কালিদহ ইউনিয়নে কৃষকদের জন্য আইপিএম নামের একটি ক্লাব রয়েছে। ওই ক্লাবের সদস্য ২০ জন। ক্লাবের সভাপতি মহিউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিম।

পড়তে পারেন: করোনায় চাকরি হারিয়ে অভাব জয়ের পথ দেখাল মাসরুম!

মিষ্টি কুমড়ার বিভিন্ন রোগ ও দমন ব্যবস্থাপনা

সভাপতি মহিউদ্দিন জানান, কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় তিনিও ২০ শতক জমিতে কুমড়া চাষ করেছেন। ফলন ভালো হওয়ায় আগামীতে দ্বিগুণ কুমড়া চাষ করবেন। প্রতি শতক কুমড়া চাষে খরচ হয়েছে ৩শ টাকা। প্রতি শতক কুমড়া বিক্রি করেছেন ১ হাজার টাকায়। এতে খরচ মিটিয়ে ৭শ টাকা করে লাভ হয়েছে। কুমড়া বিক্রি করার পর ওই জমিতে আউশ ধান চাষ করবেন।

সদর উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কৃষি অফিস থেকে কালিদহ আইপিএম ক্লাবকে কৃষি কাজে পানি সেচের জন্য ৬শ ৫০ ফুটের একটি পাইপ ও মোটর দেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে জেলার ফুলগাজী উপজেলার মুন্সীর হাট ইউনিয়নের উত্তর আনন্দ পুর এলাকায় এ বছর চাল কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। আগামীতে কুমড়া চাষের ফলন আরও বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

পড়তে পারেন: ইউটিউব দেখে হলুদ তরমুজ চাষে ইমনের চমক

 অধিক ফলন পেতে মিষ্টি কুমড়ার যেসব জাত নির্বাচন করবেন

উপজেলার মুন্সীর হাটের উত্তর আনন্দ পুর, বালুয়া, কুতুব পুর, দরবারপুর, শ্রীচন্দ্রপুর অঞ্চলে ব্যাপকহারে এসব কুমড়ার আবাদ হয়েছে। ধান চাষের উপর নির্ভরশীল কৃষি জমিতে এ বছর কুমড়া চাষ এনে দিয়েছে কৃষকদের নতুন গতি। এই উপজেলার উৎপাদিত কুমড়া জেলা শহর ফেনীসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রির জন্য নেওয়া হয়।

উপজেলার মুন্সীর হাট ইউনিয়নের উত্তর আনন্দপুর গ্রামের চাষি শাহজালাল অনিক জানান, তিনি এবছর মাত্র ৩০ শতক জমিতে চাল কুমড়ার চাষ করেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। কুমড়া বিক্রি করে তার প্রায় ২০/২৫ হাজার টাকা লাভ হতে পারে। এর আগে একই জমিতে আলু চাষ করেও তার ভালো লাভ হয়েছে।

পড়তে পারেন:মিষ্টিকুমড়ার কচি পাতা খেকো পোকা দমন

মিষ্টি কুমড়ার মাছি পোকা দমনে করণীয়

উপজেলা কৃষি অফিসার মাসুদ রানা জানান, উপজেলার বেশকিছু এলাকায় এবার চাল কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। নিয়মিত কৃষি অফিস থেকে তাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আগামীতে এর ফলন আরও বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে। কৃষকদের উন্নত মানের বীজও দেওয়া হবে।

ফেনী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ পরিচালক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে জনান, ধান চাষের চেয়ে কুমড়া চাষে খরচ কম। তাই কৃষকদের কুমড়া চাষে আগ্রহ বেড়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে তাদের বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ