নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২.কম: কেঁচো সারে ভাগ্য খুলেছে তানিয়া পারভীনের। কেঁচো সার উৎপাদনে তাঁর মাসিক আয় দাঁড়িয়েছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। রাসায়নিক সারের চেয়ে জৈব সারের উপকারিতা বেশি হওয়ায় কৃষকের চাহিদা বাড়ছে দিন দিন।

বলছি ফরিদপুর পৌর এলাকার শোভাররামপুর মহল্লার বাসিন্দা তানিয়া পারভীনের কথা। ২০১৭ সালে তিনি ৩টি রিং স্লাব দিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহযোগিতায় শুরু করেন খেঁচো সার উৎপাদন। সময়ের সাথে পাল্টেছে কৌশল। লাভের পরিমাণ বাড়তে থাকায় বাড়ির উঠানে বিশাল টিনের সেড ও আরেক পাশে ছাপড়ার নিচে তৈরি করেছেন ২৪টি সিমেন্টের হাউজ।

পড়তে পারেন: দেশের সর্বোৎকৃষ্ট কেঁচো সার উৎপাদন রাজশাহীতে

৪ ফুট প্রস্থ ১০ ফুট দৈর্ঘ্য একেকটি হাউজের। প্রতিটি হাউজে ৪০ মণ গোবর, শাকসবজির উচ্ছিষ্ট ও কলাগাছের টুকরো মিশ্রণ করে প্রতিটি হাউজে ১০কে জি কেঁচো ছেড়ে দেয়া হয়। তারপর চটের বস্তা দিয়ে হাউজ ঢেকে রাখা হয়। এভাবে এক মাস ঢেকে রাখার পর তৈরি হয় ভার্মি কম্পোস্ট সার। এই ভাবে প্রতি মাসে তানিয়ার ২৪টি হাউজ থেকে এক থেকে দেড় টন সার উৎপাদন হয়ে থাকে। প্রতি কেজি সার খুচরা ১৫ টাকা ও পাইকারি ১২টা করে বিক্রি করা হয়। এতে খরচ বাদে প্রতি মাসে তার আয় হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা।

উদ্যোক্তা তানিয়া পারভীন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এই সার বিক্রি করে আমার প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। সারের চাহিদা থাকায় দিন দিন উৎপাদন বাড়িয়েছি। আর আমার দেখাদেখি এলাকার অনেকেই আমার কাছ থেকে সার উৎপাদনের কৌশল রপ্ত করছেন। তারাও আগামীতে ভার্মি কম্পোস্ট সারা উৎপাদন করবেন।’ তবে এজন্য সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তিনি দাবি করেন।

পড়তে পারেন: ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার ব্যবহারে যেসব সতর্কতা

ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আবুল বাসার মিয়া এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, জেলার প্রায় ৩০০ কৃষক কেঁচো সার উৎপাদন করছেন। বর্তমানে রাসায়নিক সারের অতি ব্যবহারে জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। এই সার মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এবং পরিবেশবান্ধব সার এটি। কেঁচো সার ব্যবহারে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমেছে। জৈব সার ব্যবহারে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেঁচো দিয়ে সার উৎপাদনে কৃষকদের সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ