মেহেদী হাসান, রাজশাহী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: সরকার ঘোষিত নির্ধারিত দামে আলু বেচতে রাজশাহীর কোল্ড স্টোর মালিকদের ৭ দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক।

গত বুধবার (১৪ অক্টোবর) কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে দেশের সব জেলা প্রশাসককে সরকার নির্ধারিত দামে আলুর কেনাবেচা নিশ্চিত করতে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে তিন ক্যাটাগরিতে কেজিপ্রতি খুচরা পর্যায়ে ৩০, পাইকারিতে ২৫ ও হিমাগার থেকে ২৩ টাকা দরে বেঁধে দেয়।

এই দামে আলু বিক্রি না করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানানো হয়। কিন্তু নির্দেশ উপক্ষো করে রাজশাহীর বাজারে নিয়ন্ত্রণহীন হয় আলুর মূল্য ।

আজ সোমবার (১৯ অক্টোবর ২০২০) রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ ব্যবসায়ীর অংশগ্রহণে রাজশাহী জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় আলুর দাম কমাতে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

আরোও পড়ুন: এবার সিন্ডিকেটের কবলে রাজশাহীর আলুর বাজার

সভায় এক সপ্তাহের মধ্যে সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি না করলে কোল্ড স্টোরেজগুলোতে অভিযান চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল।

রাজশাহী জেলা প্রশাসকের উদ্যেগে আয়োজিত সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শরিফুল হকের সভাপতিত্বে জেলা পুলিশের কর্মকর্তা, রাজশাহী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, কৃষি বিপনণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, টিসিবি এর কর্মকর্তাসহ রাজশাহীর ২৫ টির অধিক কোল্ড স্টোরেজ ব্যবসায়ী ও কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলেন, অন্যান্য সময়ের চেয়ে এবার রাজশাহীতে আলুর উৎপাদন কম হয়েছে। চার বছর ধরে আলু ব্যবসায়ীরা কোন লাভ করতে পারেনি। অনেকে উৎপাদন খরচও তুলতে পারেনি। এবার আলুর দাম কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। আর এখন যে পরিমাণ আলু মজুদ আছে তার অর্ধেক বীজের আলু।

তারা আরো জানান, কোল্ড স্টোরেজ ব্যবসায়ীরা আলুর মালিক না। কৃষকরা এখানে আলু রাখে আবার তারাই বিক্রি করে। কম দামে কৃষকরা আলু বিক্রি করতে যাচ্ছেনা। তবে আমরা এখন আলু বিক্রি করতে ব্যবসায়ীরে তাগিদ দিবো। এ সময় তারা প্রতিকেজি আলু খুচরা ৩০ টাকা না করে ৪০ টাকা করার দাবি জানান।

সভায় জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, রাজশাহীতে বীজসহ এখনো প্রায় ১ লক্ষ মেট্রিক টনের মতো আলুর মজুদ আছে। সুতরাং আলুর দাম এতো বৃদ্ধি পাওয়ার কোন যৌক্তিক কারণ নেই। তাছাড়া প্রায় ১ মাসের মধ্যেই বাজারে নতুন আলু উঠতে শুরু করবে তখন দেখা যাবে অনেকে আলু ফেলে দিচ্ছেন। তাই যেহেতু এখনো চাহিদার তুলনায় আলুর মজুদ বেশি আছে তাই সরকারি দামেই আলু বিক্রি করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা এক সপ্তাহ বাজার পর্যবেক্ষণ করবো। শনিবার-রোববারের মধ্যে আলুর দাম না কমালে সোমবার থেকে স্টোরেজগুলোতে অভিযান চালানোর মধ্যে দিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ সময় কোল্ড স্টোরেজ ব্যবসায়ীরা আলুর দাম কমানোর জন্য চেষ্টা করবেন বলে জানান।

উল্লেখ্য, কোল্ড স্টোর মালিকদের ৭ দিন সময় বেঁধে দেওয়ায় কমতে পারে আলুর দাম। রাজশাহী ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মাসুম আলী এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, আমরা বাজার মনিটর করছি। তবে সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি করা বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে মিটিং হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে আলুর দাম কমে যাবে। কোল্ড স্টোর থেকে আলু বের হচ্ছে না। এক সপ্তাহের মধ্যেই বাজারে আলুর সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। যারা আলুর দাম বৃদ্ধির চেষ্টা করবে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ