মেহেদী হাসান, রাজশাহী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাজশাহীতে নিয়ন্ত্রণহীন আলুর মূল্য। বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম উঠেছে ৫০ টাকা। গত তিন দিনেই পণ্যটির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশের ইতিহাসে দামে রেকর্ড গড়লো আলু।

খোদ কৃষি বিভাগ ও আড়তদারদের দাবি, চলতি বছরের করোনা ও দফায় দফায় বন্যার কারণে ত্রাণে আলু বিতরণ করা হয়েছে। এতে মজুদকৃত আলু বাজারে আনতে হয়েছে। ফলে দাম বেড়েছে ।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে এক কোটি টন আলু উৎপাদনের বিপরীতে বার্ষিক চাহিদা ৭০ লাখ টন। সেই হিসাবে ৩০ লাখ টন আলু উদ্বৃত্ত থাকলেও দাম বাড়ার জন্য সংকটের দোহাই দিচ্ছেন আড়তদাররা।

তবে উল্টো কথা বলছেন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা, তাদের অভিযোগ চাল, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচসহ অন্যান্য নিত্যপণের দাম বাড়ানোর সুযোগ নিতেই আড়তদারদের এই কৃত্রিম সংকট।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আলুর এই দাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩৩ শতাংশ বেশি। অবশ্য ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে প্রায় ১০০ শতাংশ বেশি।

আজ সোমবার (১২ অক্টোবর) রাজশাহীর সাহেববাজার, নিউমার্কেট এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৬-৫০ টাকায়।

আলু কিনতে আসা খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন দাম আলুর দেখিনি। ৪০ টাকার কম কোন সবজি নাই। সব কারসাজি করছে মজুদদাররা, পাইকাররা। ৩ দিনের ব্যবধানে আড়তদাররা কেজিতে ১০-১৫ টাকা দাম বাড়িয়েছেন বলে অভিযোগ ভোক্তাদের।

নিয়ন্ত্রণহীন বাজারে আলুর দাম নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এমন লাগামহীন দামে আলু বিক্রি হওয়ায় বাজারে নেমেছে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর। আজ ১২ অক্টোবর রাজশাহীর হড়গ্রাম বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন তারা।

এ বিষয়ে রাজশাহী ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক অপূর্ব অধিকারী এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, আমরা বাজার মনিটর করছি। কিন্তু যাকেই ধরছি তারাই মেমো দেখাচ্ছে। সাধারণ বিক্রেতারা দাম বাড়াতে পারেন না। আজ হড়গ্রাম বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা তাদের মেমোতে বলছে ৪৩ টাকা কিনে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি করছি।

রাজশাহীর কাঁচাবাজারগুলো ক্রমশই বেড়েই চলেছে সবজির দাম। গতসপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কেজি প্রতি সবজির দাম বেড়েছে ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে প্রতিকেজি সবজির দাম সর্বনিম্ন ৪০ টাকা।

রাজশাহীতে নিয়ন্ত্রণহীন আলুর মূল্য বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শামছুল হক এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, বন্যায় ত্রাণ হিসেবে আলু দেওয়া হয়েছে। বন্যার পানিতে বিভিন্ন সবজি ডুবে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মানুষ সবজি হিসেবে আলু বেশি খেয়েছে। পানি নেমে গেলে দাম কমে যাবে। আলুর দাম আর বাড়বে না।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ