পশু জবাই করার পর দেখা যায় কলিজা কালো। কালো হয়ে যাওয়া যকৃত বা কলিজা খাওয়ার উপযোগী থাকে না। যকৃত কালো হয়ে যাওয়া অনেকেই স্বাভাবিক বলে ধরে নেন। কিন্তু এটি গবাদিপশুর মারাত্মক রোগ। যার নাম ফ্যাসিওলিয়াসিস রোগ। এ রোগ হটাৎ মারা যায় পশু। আসুন জেনে নিই গবাদিপশুর কলিজা পচা রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার। লিখেছেন মো. আব্দুর রহমান।

ফ্যাসিওলিয়াসিস রোগ

গবাদিপশুর যকৃতে ফ্যাসিওলা জাইগানটিকা ও ফ্যাসিওলা হেপাটিকা নামক পাতাকৃমি দ্বারা সৃষ্ট পশুর রোগকে ফ্যাসিওলিওসিস বলে। রক্তস্বল্পতা, ম্যান্ডিবুলের নিচে পানি জমা, যা দেখতে বোতলের মতো, ডায়রিয়া এবং ধীরে ধীরে কৃশকায় অবস্থায় পরিণত হওয়াই এ রোগের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশে প্রায় ২১ ভাগ গরুতে এবং সিলেট অঞ্চলে প্রায় ২১.৫৪ ভাগ ছাগলে ফ্যাসিওলা জাইগানটিকা পাতাকৃমিতে হয়।

রোগের লক্ষণ
আক্রান্ত পশুর যকৃতে অপ্রাপ্তবয়স্ক কৃমির মাইগ্রেশনের ফলে যকৃত কলা ধ্বংস হয় এবং যকৃতিতে প্রোটিন সংশ্লেষণ হ্রাস পায়। এতে পশুর হাইপোপ্রিটিনিমিয়া তথা বটল জ্বর হয়।

বদহজম ও ডায়রিয়া দেখা দেয়। ক্ষুধামন্দা ও দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়। চোখের কনজাংটিভা ফ্যাকাশে হয়ে যায়।
তীব্র যকৃত প্রদাহ এবং রক্তক্ষরণের ফলে লক্ষণ প্রকাশের আগেই পশুর হঠাৎ মৃত্যু ঘটে।

আরোও পড়ুন: এ সময়ে গবাদিপ্রাণি ও পোল্ট্রির যত্নে করণীয় ও সতর্কতা

গরুর তড়কা রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি

গরুর শরীর খসখসে হওয়া এবং ক্ষত’র প্রতিকার

চিকিৎসা ও প্রতিকার
ট্রাইক্লেবেন্ডাজল বোলাস প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১০ থেকে ১৫ মিলিগ্রাম করে আক্রান্ত পশুকে খাওয়ালে ৯০ থেকে ১০০ ভাগ সুফল পাওয়া যায়। নাইট্রোক্সিলিন ইনজেকশন প্রতি ৫০ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১.৫ মিলিলিটার হিসেবে গরু, মহিষ ও ছাগলের ত্বকের নিচে প্রয়োগ করে কার্যকরি ফল পাওয়া যায়। সহায়ক চিকিৎসা হিসেবে দুর্বলতা ও রক্তস্বল্পতার জন্য ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স ইনজেকশন দেয়া এবং মিনারেল মিকচার খাওয়ানো ভালো। পশুকে সন্দেহজনক স্থান যেমন নিচু জায়গা বা ড্রেনের পাশে ঘাস খাওয়ানো থেকে বিরত রাখতে হবে।

গবাদিপশুর কলিজা পচা রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার লিখেছেন মো. আব্দুর রহমান শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ।