আন্তর্জাতিক কৃষি ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বর্তমানে চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত এলাকায় চলছে গম ক্রয়ের কাজ। আর এই স্বায়ত্তশাসিত এলাকায় গম কিনতে চীনা কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সিনচিয়াং শাখা ১১৫টি কোম্পানিকে ১,৬৫০ হাজার টন গম ক্রয়ে ৫৩০ কোটি ইউয়ান ঋণ দিয়েছে।

এই ঋণের পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩০ কোটি ইউয়ান বেশি। এ বিষয়ে খবর প্রকাশ করেছে সিআরজে অনলাইন।

সিনচিয়াংয়ের ইলি অঞ্চলে এখন গম ক্রয়ের ব্যস্ততা চলছে। গমের দাম ও গুণগত মানও বেড়েছে। চলতি বছর চীনা কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ইলি শাখা এতদঞ্চলের গম চাষের আয়তন ও উৎপাদন পরিমাণ অনুসারে ২০০ কোটি ইউয়ান ক্রেডিট তহবিল প্রস্তুত করে ইলির ১৫টি কোম্পানির গম ক্রয়কে সমর্থন করেছে। এ পর্যন্ত ৫০ কোটি ইউয়ান ঋণ দেয়া হয়েছে এবং কোম্পানিগুলো মোট ১ লাখ টন গম ক্রয় করেছে।

টেকসই ক্রয়ের অর্থ নিশ্চিত করতে চীনা কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সিনচিয়াং শাখা আর্থিক সেবার মান ও কার্যকারিতার উপর বেশ গুরুত্ব দেয়। সিনচিয়াং-অঙ্গরাজ্য-জেলা এ তিন পর্যায়ে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করে ঋণ দেয়ার সবুজ চ্যানেল খুলে। ঋণ আবেদনের প্রক্রিয়া সহজ করে এবং কম সুদের হারের সুবিধা দেয়।

পড়তে পারেন: গম ও ভুট্টা নিয়ে ইউক্রেন ছাড়লো আরও ২ জাহাজ

চীনা কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক সিনচিয়াং শাখা পরবর্তীতে ৬০০ কোটি ইউয়ান ঋণ দেবে। এর ৯৫ শতাংশ গ্রীষ্মকালীন খাদ্য ক্রয়ে ব্যবহার করা যাবে।

এদিকে ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগর বন্দর থেকে গম ও ভুট্টা নিয়ে দুটি জাহাজ রওয়ানা হয়েছে। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর দেশটি থেকে খাদ্যপণ্য নিয়ে এ পর্যন্ত ১৪টি জাহাজ ছেড়ে গেছে। শুক্রবার তুরস্কের প্রতিরক্ষা দপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেলিজ-পতাকাবাহী জাহাজ সোরমোভস্কি ইউক্রেনের চোরনোমর্স্ক বন্দর ছেড়েছে। জাহাজটি তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় টেকিরদাগ প্রদেশে তিন হাজার ৫০ টন গম নিয়ে গেছে।

ফেব্রুয়ারি মাসের পর এটি ছিল ইউক্রেন থেকে যাওয়া গমের প্রথম চালান। যুদ্ধ শুরুর আগে বিশ্বে গম রপ্তানির প্রায় এক তৃতীয়াংশ আসতো ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে। তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মার্শাল দ্বীপ পতাকাবাহী স্টার লরা নামের আরেকটি জাহাজ ৬০ হাজার টন ভুট্টা নিয়ে ইরানের উদ্দেশ্যে ইউঝনি শহরের পিভডেনি বন্দর থেকে রওনা হয়েছে।

পড়তে পারেন: দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণে গম-ভুট্টা উৎপাদন বাড়ানোর পরামর্শ

বিশ্ববাজারে ইউক্রেনীয় খাদ্যশস্যের ঘাটতির কারণে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কার কথা গত মাসে জানিয়েছিল জাতিসংঘ। এরপরই তুরস্কের সহযোগিতায় ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় খাদ্যশস্য রপ্তানিতে রাজী হয় ইউক্রেন। এরআগে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর তিনটি খাদ্যশস্য বোঝাইকারী জাহাজ ইউক্রেনের বন্দর ছেড়ে গেছে। মোট ৫৮ হাজার টন ভুট্টা জাহাজ তিনটিতে বহন করা হচ্ছে।

তুরস্কের ইস্তাম্বুলের জয়েন্ট কোঅরডিনেশ সেন্টার জানায়, দুটি জাহাজ চর্নমোর্স্কে বন্দর ও একটি জাহাজ ওদেসা বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেছে। এ সেন্টার রাশিয়া, ইউক্রেন, তুর্কি ও জাতিসংঘের কর্মকর্তা দ্বারা পরিচালিত।

এক টুইট বার্তায় তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, পানামার পতাকাবাহী নাভি স্টার জাহাজটি ইউক্রেন থেকে আয়ারল্যান্ডে যাবে। জাহাজটিতে ৩৩ হাজার টন ভুট্টা রয়েছে। আর দ্বিতীয় জাহাজ মাল্টার পতাকাবাহী রোজেনে ব্রিটেনে যাবে। জাহাজটিতে ১৩ হাজার টন ভুট্টা রয়েছে। আর তৃতীয় জাহাজটি তুরস্কের। জাহাজটিতে ১২ হাজার টন ভুট্টা রয়েছে। এর আগে সামরিক অভিযান শুরুর পর প্রথমবার তিনটি খাদ্যশস্য বোঝাইকারী জাহাজ ইউক্রেনের বন্দর ছেড়ে গিয়েছিল।