নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চীনে রপ্তানিযোগ্য গবাদি পশু, মাছসহ ৮,২৫৬টি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে বাংলাদেশকে চীন এ সুবিধা দিয়েছে। এ সুবিধা কাজে লাগাতে পারলে বৈশ্বিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের জন্য নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের পাশাপাশি পাট ও পাটজাত পণ্য, মাছ, চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, চামড়া, জুতা রপ্তানিতে চীনে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে।

গত রোববার ( ১১ অক্টোবর ২০২০) শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া ৮,২৫৬টি পণ্যের ১২৭৯ পৃষ্ঠার তালিকা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যসচিব মো. জাফর উদ্দীন গণমাধ্যমকে বলেন, ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে সুনির্দিষ্ট তালিকা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, এতে চীনে বাংলাদেশের রপ্তানি আগের চেয়ে বাড়বে। সুযোগটি নেওয়ার জন্য রপ্তানিকারকদের তৎপরতা বাড়ানো জরুরি।

২০১০ সালে ৬০ শতাংশ ও ২০১৫ সালে ৯৫ শতাংশ দেওয়ার ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের মাঝামাঝি এসে চীন সিদ্ধান্ত নিল, এলডিসি দেশগুলো ৯৭ শতাংশ পণ্য চীনে শুল্কমুক্তভাবে রপ্তানি করতে পারবে। শুরুর দিকে ৩৩টি এলডিসির জন্য এ সুযোগ রাখলেও চীন পরে তা বাড়িয়ে ৪০টি দেশের জন্য করে।

জানা যায়, চীনে এত দিন বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সব আইটেম শুল্কমুক্ত সুবিধা পেত না। ওভেন পোশাকের ১৬৭টি আইটেমের মধ্যে ১১৭টি ও নিট পোশাকের ১৩২টির মধ্যে ৮৮টি আইটেম শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় ছিল।

অবশ্য বর্তমানে পোশাকের প্রায় সব আইটেমেই সুবিধাটি পাবেন উদ্যোক্তারা। এ ছাড়া শুল্কমুক্ত সুবিধার তালিকায় পাট ও পাটজাত পণ্যে ১টি, মাছে ১০টি, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে ১০টি করে, জুতায় ১৯টি, হোম টেক্সটাইলে ৫৫টি নতুন এইচএস কোড যুক্ত হয়েছে।

যেসব পণ্যে চীনের বাজারে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবেন, তা হলো বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, সুগন্ধি, প্রসাধনী ও অন্যান্য টয়লেট্রিজ, সাবান, প্লাস্টিক ও প্লাস্টিক পণ্য, রাবার ও রাবার দিয়ে তৈরি পণ্য, সার, পশম, কৃত্রিম পশম ও পশমের তৈরি পণ্য, খনিজ জ্বালানি ও তেল, বিটুমিন, রাসায়নিক পণ্য, জৈব রাসায়নিক, জীবন্ত গরু, ছাগল, মহিষ, ঘোড়া, হাঁস, মুরগি, মাছ, সাপ, কুঁচিয়া, দুগ্ধজাত পণ্য, বিভিন্ন ধরনের সবজি, কফি, চা, মসলা, দানাজাতীয় শস্য, বিভিন্ন মিলের বর্জ্য, বেভারেজ, স্পিরিট, ভিনেগার, তামাক, চিনি ও চিনিজাত পণ্য, লবণ, সালফার, পাথর, সিমেন্ট ইত্যাদি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা গেছে, চীন সরকার শুল্কমুক্ত সুবিধা ঘোষণা দেয়ার পর গত ২৪ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেয়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘দীর্ঘ নেগোসিয়েশনের পর গত ১৬ জুন চীন বাংলাদেশকে ৯৭ শতাংশ পণ্যে অর্থাৎ আট হাজার ২৫৬টি পণ্যে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা প্রদান করেছে। যা ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। চীন প্রদত্ত শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত পণ্যের তালিকা ‘Import and Export Tariff of People’s Republic of China, 2020’ -এর http://gss.mof.gov.cn ওয়েব লিংকে পাওয়া যাবে। চীনের বাজারে ৯৭ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা প্রদানের বিষয়টি আপনার সংগঠনের সকল সদস্যকে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। ’

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ