কৃষিবিদ জিয়াউল হক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম:  খুব সহজেই বাড়ির আঙিনা বা ছাদে ড্রাগন ফল চাষ করা যায়। এ ফলের গাছ লতানো, মাংসল ও খাঁজকাটা। লোহা, কাঠ বা সিমেন্টের খুঁটি বেয়ে এটি বড় হতে পারে। ছাদ বাগানে টবে চাষ করতে পারেন ড্রাগন ফল।

উৎপত্তি ও বিস্তার: ড্রাগন মূলত আমেরিকার একটি প্রসিদ্ধ ফল, যা বর্তমানে বাংলাদেশেও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। আমাদের দেশে ২০০৭ সালে প্রথম থাইল্যান্ড, ফ্লোরিডা ও ভিয়েতনাম থেকে এ ফলের বিভিন্ন জাত আনা হয়। নরম শাঁস ও মিষ্ট গন্ধযুক্ত গোলাপি বর্ণের এ ফল খেতে অনেক সুস্বাদু। তার সাথে ভিটামিন সি, মিনারেল পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ও ফাইবারের উৎকৃষ্ট উৎস। ড্রাগন ফল গাছ ক্যাকটাস সদৃশ। আমাদের দেশের আবহাওয়া ড্রাগন ফল চাষের জন্য উপযোগী। চাইলে বাড়ির ছাদে বড় টবে বা ড্রামে ড্রাগন চাষ করতে পারেন।

পড়তে পারেন:  ড্রাগন ফল চাষ করবেন যেভাবে

যেভাবে চাষ করবেন: সারা বছরই ড্রাগন ফল চাষ করা যায়। তবে ছাদ বাগানে ড্রাগন ফল চাষ করে ভালো ফলন পেতে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসে চারা রোপণ করাই উত্তম। প্রায় সব ধরনের মাটিতেই ড্রাগন ফল চাষ করা যায়। তবে জৈবপদার্থ সমৃদ্ধ বেলে দোআঁশ মাটি ড্রাগন চাষের জন্য উত্তম। ড্রাগন সাধারণত গাছের কাটিং লাগানো হয়।

টবে ড্রাগন ফলের কাটিং লাগানোর জন্য ২০ ইঞ্চি ড্রাম বা টব সংগ্রহ করতে হবে। কারণ এ আকারের ড্রামে চারা ভালোভাবে শিকড় ছড়াতে পারবে আর তাতে ফলনও অনেক ভালো হবে। টবে বা ড্রামে যাতে পানি না জমে সে জন্য ড্রামের তলায় ৪-৫টি ছোট ছিদ্র করে নিতে হবে এবং ছিদ্রগুলো ইটের ছোট ছোট টুকরা দিয়ে বন্ধ করে দিতে হবে।

পড়তে পারেন: ঋণের সাড়ে ৪ লাখ টাকায় ড্রাগন চাষ, ঈর্ষণীয় সাফল্য আসিরের

মাটি তৈরি: ড্রাম বা টবের ২ ভাগ বেলে দোআঁশ মাটি, ১ ভাগ গোবর, ৪০-৫০ গ্রাম টিএসপি সার এবং ৪০-৫০ গ্রাম পটাশ সার মিশিয়ে টব বা ড্রাম এমনভাবে ভর্তি করতে হবে, যেন উপরে পানি দেওয়ার জন্য একটু (৩-৫ সেমি) খালি থাকে। এরপর মাটির সাথে অন্যান্য উপাদান ভালোভাবে মেশানোর জন্য পানি দিয়ে ১০-১২ দিন রেখে দিতে হবে।

এরপর মাটি কিছুটা আলগা করে দিয়ে পুনরায় ৪-৫ দিন একইভাবে রেখে দিতে হবে। টবের মাটি ঝুরঝুরে করে ড্রামে ভরতে হবে। টবের মাটি ঝুরঝুরে হয়ে গেলে ড্রাগনের কাটিংয়ের চারা ওই টবে ৮-১০ সেমি গভীর করে রোপণ করতে হবে। গাছের গোড়ায় মাটি কিছুটা উঁচু করে হাত দিয়ে চেপে চেপে দিতে হবে। যাতে গাছের গোড়া দিয়ে বেশি পানি না ঢুকতে পারে।

পড়তে পারেন: ড্রাগন গাছে অভিনব কৌশল, বোঝানো হচ্ছে ১৮ ঘণ্টায় দিন!

কাটিং বা চারা পাওয়ার স্থান: ড্রাগন ফলের সুস্থ ও রোগমুক্ত কাটিং বা চারা বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যায়। তার মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহে অবস্থিত বৃহৎ জার্মপ্লাজম সেন্টার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের বিভিন্ন হর্টিকালচার সেন্টার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন গবেষণা কার্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন নার্সারিতেও পাওয়া যায়।

ছাদ বাগানে টবে চাষ করুন ড্রাগন ফল লেখাটি লিখেছেন কৃষিবিদ জিয়াউল হক।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ