আন্তর্জাতিক কৃষি ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: গতকাল তাইওয়ানে বালির চালান বন্ধের পাশাপাশি ফল ও মাছ আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চীন। চীনের শুল্ক বিভাগ জানায়, ‘বারবার’ অতিরিক্ত কীটনাশকের উপস্থিতি শনাক্ত হওয়ার কারণে কিছু লেবুজাতীয় ফল এবং করোনাভাইরাস পরীক্ষা পজিটিভ আসায় মাছ আমদানি স্থগিত করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের মাঝে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের আরেক প্রস্থ উত্তেজনা বাড়ল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৫ বছরের মধ্যে তাইওয়ানে সফর করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির রাজনীতিবিদ পেলোসি। এ সফর কূটনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড় তুলেছে। তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে চীন-মার্কিন লড়াইয়ে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

পড়তে পারেন: মাছ চাষে দেশসেরা দিনাজপুরের তারেক

আলাদা এক বিজ্ঞপ্তিতে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, তারা বুধবার থেকে প্রাকৃতিক বালির রফতানি স্থগিত করবে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। সাধারণত কংক্রিট ও অ্যাসফল্ট উৎপাদনের জন্য বালি ব্যবহূত হয়। তাইওয়ানে আমদানীকৃত বালি ও নুড়ির বেশির ভাগ চীন থেকে আসে।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ট্রিভিয়াম চায়নার কৃষিবিষয়ক বিশ্লেষক ইভেন পে বলছেন, এ পদক্ষেপগুলো বেইজিংয়ের সাধারণ ছাঁচের অংশ। আগামী দিনগুলোয় কৃষি ও খাদ্য বাণিজ্যে আরো ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

ইভেন পের মতে, যখন কূটনৈতিক বা বাণিজ্যিক উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠে চীনের নিয়ন্ত্রকরা সাধারণ সম্মতির জন্য কড়া পন্থা অবলম্বন করে। বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞাকে বৈধতা দেয়ার জন্য যেকোনো সমস্যা খুঁজে বের করে তারা। দীর্ঘদিনের বিরোধ সত্ত্বেও তাইওয়ানের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার চীন। ২০২১ সালে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ২৬ শতাংশ বেড়ে ৩২ হাজার ৮০০ কোটি ডলার হয়েছে।

এবারই প্রথম নয়, তাইওয়ানের রফতানি বাণিজ্যকে লক্ষ্যবস্তু করেছে বেইজিং। ২০২১ সালে পোকামাকড়ের উপস্থিতির কারণে আনারস আমদানি নিষিদ্ধ করে চীন। তবে একেও রাজনৈতিক ঘটনার ফল হিসেবেই দেখা হয়েছে।

২০১৬ সালে তাইওয়ানে প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে চাপের মুখে রেখেছে চীন। তিনি দ্বীপটিকে প্রকৃতই ‘এক চীনের’ বাইরে সার্বভৌম জাতি হিসেবে দেখেন। সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তাইপের কৃষি পরিষদ মঙ্গলবার জানায়, মৎস্যজাত পণ্য, চা ও মধুসহ তাইওয়ানের পণ্য স্থগিতের বিষয়ে নিয়ম লঙ্ঘনের উল্লেখ করেছে চীন।

এরই মধ্যে তাইওয়ানকে ঘিরে সক্রিয় গোলাবারুদ ও অস্ত্রসহ সামরিক মহড়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে চীন। কিছু ক্ষেত্রে দ্বীপের উপকূল রেখার ২০ কিলোমিটারের মধ্যে এ অভিযান পরিচালিত হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে তাইপের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, এ ঘোষণা প্রধান বন্দরগুলো ও শহর এলাকাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।

তাইওয়ানের ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ বছরের পর বছর চীনের আক্রমণের আশঙ্কা নিয়েই বেঁচে আছে। প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের আমলে এ হুমকি আরো তীব্রতর হয়েছে।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ