ইসলাম ও জীবন ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার ২৪.কম: দুনিয়ায় সেরা এক ফেতনার নাম দাজ্জাল। এ ফেতনা হবে ভয়াবহ ও মারাত্মক। মুমিন মাত্রই এ ফেতনাকে ভয় করে।রাসূল (স.) সব সময় এ ফেতনা থেকে বাঁচতে আল্লাহর সাহায্য চেয়েছেন। জুমআর দিনের একটি বিশেষ আমলেই দাজ্জালের ফেতনা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

কী সেই আমল? চলুন জেনে নেওয়া যাক:
জুমআর দিনের একটি বিশেষ আমলেই দাজ্জালর আক্রমণ থেকে মুক্তি পাবে মুমিন মুসলমান। হাদিসে একাধিক বর্ণনায় তা সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন বিশ্বনবি হযরত মোহাম্মদ (স.)। তিনি নিজেও দাজ্জালের আক্রমণ থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন। বলেছেন বিশেষ আমলের কথা। হাদিসে এসেছে-
– হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সুরা কাহফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্ত করে রাখবে, তাকে দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা করা হবে। (মুসলিম, তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসাঈ, মুসনাদে আহমদ, ইবনে হিব্বান)

– রাসুল (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্ত করবে সে দাজ্জালের ফেতনাহ থেকে মুক্তি পাবে।’ (মুসলিম)

– মুসনাদে আহমদে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্ত করবে, তাকে দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা করা হবে। অবশ্য তিরমিজিতে তিন আয়াতের কথা উল্লেখ রয়েছে।

আরও পড়ুন: ইসলামে ঝিনুকের চুন খাওয়া কি জায়েজ?

জুমআর দিন সুরা কাহফ তেলাওয়াত এবং এর ফজিলতে শুধু দাজ্জালের ভয়াবহ আক্রমণ থেকেই মুক্তিই নয় বরং এ আমলে রয়েছে গোনাহ মাফ ও প্রশান্তি লাভের ঘোষণা। হাদিসের অন্য বর্ণনা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন-

– ‘শুধু দাজ্জালের ফেতনাই নয়, যে ব্যক্তি সুরা কাহফের প্রথম এবং শেষ অংশ তেলাওয়াত করবে; তার জন্য তা (সুরা কাহফ-এর তেলাওয়াত) মাথা থেকে পা পর্যন্ত নূর হবে। আর যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ সুরাটি তেলাওয়াত করবে সে জমিন থেকে আসমান পর্যন্ত নূর লাভ করবে।’ (মুসনাদে আহমদ)

-হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল (রা.)র বর্ণনায় এসেছে, ‘যে ঘরে কোনো রাতে এ সুরা তেলাওয়াত করা হয়; সে রাতে ঘরটিতে শয়তান প্রবেশ করতে পারে না।’ (সুবাহানাল্লাহ!)

-হজরত উবাইদ ইবনে হুজায়ের (রা.) (একবার) সুরা কাহফ তেলাওয়াত করছিলেন। তাঁর ঘরে একটি চতুষ্পদ জন্তু ছিল। সে ছুটাছুটি করতে লাগলো। তিনি লক্ষ্য করলেন, আকাশে এক খণ্ড মেঘ তাঁর ঘরের উপর ছায়া বিস্তার করে রয়েছে। এ সাহাবি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে এ ঘটনা বর্ণনা করলেন। বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এটি হলো সাকিনাহ, যা আল্লাহ তাআলা কুরআন তেলাওয়াতের কারণে নাজিল করেছেন। (বুখারি, মুসলিম ও মুসনাদে আহমদ)

আরও পড়ুন: ইসলামের দৃষ্টিতে চাষাবাদ

দাজ্জালের ফেতনা থেকে মুক্তির দোয়া: বিশেষ করে রাসূল (স.) শুধু জুমআর দিনই নয়, বরং তিনি প্রতিদিন নামাজের শেষ বৈঠকে দাজ্জালের ফেতনা থেকে মুক্তি লাভে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতেন। হাদিসে এসেছে-
اَللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ، وَمِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ، وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ، وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ.
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল ক্বাবরি, ওয়া মিন আজাবি জাহান্নাম, ওয়া মিন ফিতনাতিল মাহয়া ওয়াল্ মামাতি, ওয়া মিং সাররি ফিতনাতিল্ মাসিহিদ্-দাজ্জাল।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে কাবরের আজাব থেকে রক্ষা করো,আমাকে জাহান্নামের আজাব এবং দুনিয়ার ফেতনা ও মৃত্যুর ফেতনা এবং দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা করো।’ (বুখারি, মুসলিম)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, জুমআর দিন সূর্য ডোবার আগে যে কোনো সময়ে সুরা কাহফ তেলাওয়াত করা। পুরো সুরা পড়তে না পাড়লেও প্রথম ও শেষ ১০ আয়াত তেলাওয়াত করা। এতে মহান আল্লাহ ওই বান্দাকে দুনিয়ার ভয়াবহ ফেতনা দাজ্জালের আক্রমণ থেকে হেফাজত করবেন। আর আসমান থেকে নাজিল করবেন সাকিনাহ বা প্রশান্তি। শয়তানের আক্রমণ থেকেও পাওয়া যাবে মুক্তি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমআর দিনে সুরা কাহফ তেলাওয়াত করার তাওফিক দান করুন। দাজ্জালের ভয়াবহ আক্রমণ থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর সাকিনাহ তথা প্রশান্তি লাভের মাধ্যমে মহামারি করোনা থেকে মুক্তির তাওফিক দিন।শয়তানের আক্রমন থেকেও মুক্ত থাকার তাওফিক দিন(আমিন)।

দাজ্জালের আক্রমণ থেকে বাঁচতে জুমআর দিনের বিশেষ আমল শিরোনামে সংবাদের তথ্য জাগো নিউজ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

কমিউনিটি / এমবি