জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দারিদ্র বিমোচন ও পুষ্টির সহজলভ্যতায় পোল্ট্রি ও ডেইরি শিল্পের কোনো বিকল্প নেই। ভবিষৎ উন্নত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপরিচালনায় চাই জ্ঞানী, দক্ষ ও যোগ্য নাগরিক। আর তাদের আমিষের সহজলভ্য করছে এই খাত।

আজ (বৃহস্পতিবার) কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শো -২০১৯ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বর্তমানের ডিম ও মুরগির মাংস গ্রহণের হারকে বাড়তে হবে। স্বাস্থ্যবান মেধাবী জাতি গড়তে হলে আরো অধিক পরিমাণ মুরগির ডিম ও মাংস খেতে হবে। পোল্ট্রি ও ডেইরি খাতে বিনিয়োগ করে  সহজে স্বাবলম্বী হতে পাড়ে মানুষ।

পোলট্রিশিল্পের উন্নয়ন, সম্প্রসারণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং কিভাবে দেশিয় বাজার সম্প্রসারণ করে আন্তর্জাতিক বাজার সৃষ্টি করা যায় তা সবাইকে সমন্বতভাবে কাজ করে কৌশল বের করতে হবে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, এ শিল্প দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। সবচেয়ে সম্ভাবনাময় এখাতের উন্নয়নে সবধরণের সহায়তা করবে সরকার।এ খাতের অর্জনকে টেকসই করতে হবে। বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে কৃষি এবং অকৃষি উভয় সেক্টরকে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড.মো: এবিএম আব্দুল্লাহ, প্রাক্তন ডিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে এখন আন্তর্জাতিকমানের অনেক পোল্ট্রি শিল্প গড়ে উঠেছে যা কয়েক বছর আগে কেউ চিন্তাও করতে পারতো না। চাকরির প্রতি নির্ভরশীল না হয়ে নারী-পুরুষেরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পুঁজি নিয়ে পোল্ট্রি শিল্পকে সমৃদ্ধ অর্থকরী শিল্পে পরিণত করেছে।

তিনি জানান, পোল্ট্রি শিল্পে জড়িত প্রায় ৪০ শতাংশই নারী। গ্রামীণ অর্থনীতিতে নারীর ক্ষমতায়নে কৃষির পরই সবচেয়ে বড় অবদান রাখছে  পোল্ট্রি শিল্পটি। শিল্পকে কেন্দ্র করে পরিচালনা, পরিচর্যা, বাজারজাতকরণ এবং খাদ্য উৎপাদন কার্যক্রমের সুবাদে আরও ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারে ব্যবসা এবং গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত পোল্ট্রি খাতটি দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

উল্লেখ্য, আশির দশকে ১৫শ কোটি টাকা বিনিয়োগের এখাতে বর্তমানে বিনিয়োগ প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা, ৬০লাখ মানুষ এখাতে জড়িত এবং ২১০০ সালে এখাতে বিনিয়োগ দাড়াবে প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ হাজার কোটি টাকা।

২০৫০ সাল নাগাদ ডিমের চাহিদা বাড়বে ৯০ শতাংশ এবং মাংশের চাহিদা বাড়বে ১৭০ শতাংশ। এবারের ৭ থেকে ৯ মার্চ তিনদিন ব্যাপী  আন্তর্জাতিক এই শোতে মোট ২২টি থেকে ডেলিগেট, ১৫টি দেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা অংশগ্রহণ করেন।এছারা ৮০ বিদেশি ও ১৫০ দেশি কোম্পানি অংশ নেয় এবং মোট ৮০০টি স্টল নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্টানে ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি জনাব মো: সামসুল আলম আরেফিন খালেদ এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস ও প্রাণী সম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. হীরেশ চন্দ্র ভৌমিক, মৎস ও প্রাণী সম্পদ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথুরাম সরকার,সভাপতি ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন এর Professor Ning Yang, ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হাসান, সহ-সভাপতি ইয়াসমিন রহমান প্রমুখ।

কৃষিমন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।