ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের চা বাগানগুলোতে এখন প্রুনিং (ছাঁটাই) কাজ শুরু হয়েছে। এ কারণে চা প্রক্রিয়াকরণ কারখানাগুলো ২ মাস বন্ধ থাকবে। পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

৮ ডিসেম্বরের ওই চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রুনিং সুপারিশমালা অনুযায়ী, ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চা–গাছ বিভিন্ন উচ্চতায় প্রুনিং (ছাঁটাই) করতে হয়। সেই হিসেবে টেকসই চা উৎপাদন ও গুণগত মান বাড়ানোর লক্ষ্যে পঞ্চগড় জেলার চা–বাগানগুলোয় সুষ্ঠুভাবে প্রুনিং কার্যক্রম চালানোর স্বার্থে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুই মাস সব চা–কারখানায় কাঁচা পাতা সরবরাহ ও চা প্রক্রিয়াজাত বন্ধ থাকবে।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০০ সালে পঞ্চগড়ে সমতল ভূমিতে চা চাষ শুরু হয়। এরপর ২০০৭ সালে ঠাকুরগাঁও ও লালমনিরহাট এবং ২০১৪ সালে দিনাজপুর ও নীলফামারীতে চা চাষ শুরু হয়।

সব মিলিয়ে উত্তরাঞ্চলের ৫ জেলায় বর্তমানে নিবন্ধিত ৯টি ও অনিবন্ধিত ২১টি বড় (২৫ একরের ওপরে) চা–বাগান আছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৭৪৫টি নিবন্ধিত ও ৮ হাজার ৬৭টি অনিবন্ধিত ছোট (২৫ একরের নিচে) চা–বাগান আছে। ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী উত্তরাঞ্চলে এ পর্যন্ত মোট ১১ হাজার ৪৩৩ দশমিক ৯৪ একর জমিতে চা চাষ সম্প্রসারিত হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

চা বাগানে নতুন ফসল গোলমরিচ চাষে সাফল্য

আম বাগানের পতিত জমিতে চাষ হচ্ছে মিষ্টি কুমড়া

ছাদ বাগানে যেসব চাষ করতে পারেন

ছাদ বাগানে যেসব চাষ করতে পারেন

সূত্র জানায়, উত্তরাঞ্চলে এ পর্যন্ত ৪৮টি চা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা লাইসেন্স নিয়েছে। এর মধ্যে পঞ্চগড়ে ২৪টি ও ঠাকুরগাঁওয়ে একটি কারখানা চালু আছে। কারখানাগুলো চা-চাষিদের কাছ থেকে সবুজ পাতা কিনে তৈরি চা (মেড টি) বানায়। পঞ্চগড়ে উৎপাদিত চা চট্টগ্রাম ও শ্রীমঙ্গলের নিলাম বাজারে বিক্রি করেন কারখানার মালিকেরা। পঞ্চগড়ে তৃতীয় নিলাম বাজার স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে।

চা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত মৌসুমে (২০২১) উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলার (পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাট) সমতল ভূমিতে কাঁচা চা পাতা উৎপাদিত হয়েছে ৭ কোটি ৩৫ লাখ ৬৮ হাজার কেজি এবং সেখান থেকে তৈরি চা উৎপাদিত হয়েছে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার কেজি। এবার উত্তরাঞ্চলে ১ কোটি ৭০ লাখ কেজির বেশি চা উৎপাদিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামীম আল মামুন শিশির আসাদকে বলেন, সমতল ভূমিতে চা চাষের জন্য পঞ্চগড় ও আশপাশের জেলাগুলো অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এলাকা। চায়ের চাষ সম্প্রসারণে চাষিদের বিভিন্নভাবে সহায়তার মাধ্যমে তারা উদ্বুদ্ধ করছেন।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ