মেহেদী হাসান, নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: গত মাসের (অক্টোবর) শুরুতে হঠাৎ করেই আলুর দাম বেড়ে যায়। সেইসাথে দীর্ঘদিন পেঁয়াজের দামে নাভিশ্বাস উঠে জনগণের। এই পরিস্থিতিতে রাজশাহীতে দু-সপ্তাহের মধ্যে আলু-পেঁয়াজের দাম কমার আশ্বাস দিয়েছেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাজশাহীতে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে আলু-পেঁয়াজ। কবে নাগাদ আলু-পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধিতে দাম কম হবে জানতে চাইলে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শামসুল হক এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, আগামী দু-সপ্তাহের মধ্যে বাজারে নতুন আলু-পেঁয়াজ আসবে। রাজশাহীর আলু আসতে ১ মাস অথবা ২৫ দেরি হলেও নীলফামারি, কুড়িগ্রাম ঐসব অঞ্চলের আলু আসতে শুরু করবে।

তিনি বলেন, কোথাও কোথাও বাজারে নতুন আলু এসে গেছে। পেঁয়াজও প্রায় ১৫-২০ দিনের মধ্যে চলে আসবে। নতুন আলু-পেঁয়াজ আসলে ব্যবসায়ীরা বেশি দামে বিক্রি করতে পারবে না ।

এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই মাসের শেষের দিকে আলু-পেঁয়াজসহ সব সবজির দাম কমার সম্ভাবনা একেবারেই কম। আবার নিশ্চিত হতেও পারছেন না তারা। ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং দেশি পেঁয়াজের আমদানি বেশি না হলে পেঁয়াজের দাম কমবে না। অপরদিকে, তাঁর আলুর দাম দু-সপ্তাহের মধ্যে কম হতে পাওে বলে নিশ্চিত হতে পারছেন না। কারণ হিসেবে দেখছেন রাজশাহীর আলু আসতে আরো এক মাসের বেশি সময় লাগতে পারে।

রাজশাহী নগরের সাহেববাজার এলাকার সবজি বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, আমাদের আসলে করার কিছুই নাই। আমরা আলু কিনছি ৩৮ টাকা, বিক্রি করছি ৪০ টাকা। অন্যান্য সবজি কিনতে এসে ক্রেতারা আলু কিনে বলেই দোকানে রাখতে হচ্ছে। তাছাড়া আলু বেচে লাভ তো দূরের কথা, লোকসান হচ্ছে।

তিনি আরোও বলেন, বাজারে সবজির দাম কম হলে আলুর দাম কম হয়। যখন ২০ টাকা কেজি আলু বিক্রি করেছি তখন কেজিপ্রতি ৩-৪ টাকা লাভ করেছি। এখন আলু-পেঁয়াজ কোনটাতেই লাভ নেই।

তবে, দু-সপ্তাহের মধ্যে আলু পেঁয়াজের দাম কমবে না বলে জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রাজশাহী কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাসুম আলী। তিনি এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে জানান, দু-সপ্তাহের মধ্যে আলু-পেঁয়াজের দাম কমার বিষয়ে সেভাবে নিশ্চিত হওয়া যাবে না। আগামী মাসের শুরুতেই দাম কমতে পারে।

রাজশাহীতে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না আলু-পেঁয়াজ এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বাজার মনিটরিং কার্যক্রম নিয়মিত চলছে। কোল্ডস্টেরেজ মালিকদের সাথে কথা হয়েছে, আমরা পরিদর্শন করেছি। কোল্ডস্টেরেজ থেকে ব্যবস্থাপনা পর্যন্ত পাইকারী ব্যবসায়ীরা কী পরিমাণ দামে বেঁচা-কেনা করছে এই বিষয়গুলোও পরিদর্শন করেছি। এছাড়া রাজশাহী মহানগরসহ জেলার প্রত্যেক উপজেলাতে আলুর বাজারসহ বিভিন্ন দ্রব্যে মূল্যের বাজার মনিটরিং এর কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

দু-সপ্তাহের মধ্যে আলু-পেঁয়াজের দাম কমার আশ্বাসে ক্রেতাদের স্বস্তি ফিরে এসেছে। তাঁঁরা অন্তত ১৫-২০ দিনের মধ্যে কম দামে সবজি কিনতে পারবেন বলে আশা করছেন। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উৎপাদন বৃদ্ধি, সরবরাহ এবং মধ্যস্বত্তভোগীদের দমন করতে পারলেই বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ