পোল্ট্রি ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দেশে বিভিন্ন প্রজাতির মুরগি পাওয়া গেলেও হাঁটে বাজারে হাতের নাগালে কয়েক প্রজাতির মুরগির দেখা মেলে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের কাছেই কালো মুরগি অপরিচিত নয়। কিন্তু এই কালো মুরগিকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে দামি মুরগি। বাংলাদেশে এই মুরগি এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে।

পোলট্র্রি মালিকেরা বলছেন গত কয়েক বছর ধরে খামারিদের কাছে তা ক্রমে জনপ্রিয়ও হয়ে উঠতে শুরু করেছে। কালো মুরগির মাথার ঝুঁটি থেকে পা, অর্থাৎ এর সব অঙ্গের রং কালো। পালক, চামড়া, ঠোঁট, নখ, ঝুঁটি, জিভ, মাংস এমনকি হাড় পর্যন্ত কালো রঙের। গবেষক, সরকারি কর্মকর্তা এবং খামারিরা জানিয়েছেন, কালো মুরগি একটি বিরল প্রজাতির মুরগি। এ জাতের মুরগির মাংস সুস্বাদু এবং এর পুষ্টি ও ঔষধি গুণ রয়েছে।

আরও পড়ুন: বুধবার (২৫ নভেম্বর) পোল্ট্রির ডিম, মুরগি ও বাচ্চার পাইকারি দাম

বাংলাদেশে নরসিংদী জেলার কামরুল ইসলাম মাসুদ এটির উৎপাদন শুরু করেন। কাজের সূত্রে ভারতে গিয়ে কালো মুরগি খেয়ে তিনি অবাক হন। এরপর তিনি দেশে নিয়ে এসে উৎপাদন শুরু করেন। তিনি বলেন, এর গুনাগুণ সম্পর্কে জানতে পেরে উৎপাদনের কথা ভাবি। শুরুতে ৩০০ মোরগ ও মুরগি নিয়ে আসি। এখন খামারে মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার কালো মুরগির বাচ্চা ফোটে। এই মুরগি বা মোরগের ওজন দুই থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত হতে পারে।

একটি মুরগি ডিম পাড়ার উপযোগী হতে ছয় মাসের মত সময় লাগে। একজোড়া কালো মুরগি ও মোরগের দাম চার হাজার টাকা। ২০১৬ সালে একজোড়া মুরগি ও মোরগের দাম ছিল দশ হাজার টাকা।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মাকসুদা বেগম বলেছেন, দেশি মুরগির চেয়ে এই মুরগির মাংসের স্বাদ বেশি। কালো মুরগির মাংসে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আয়রন রয়েছে। এছাড়া সাধারণ মুরগির তুলনায় এই মুরগির মাংসে কোলেস্টরেলের মাত্রাও অনেক কম থাকে। এই মুরগি রক্তচাপ এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এই মুরগির মাংসে ফ্যাটি অ্যাসিড উপাদান অনেক বেশি থাকে। কিন্তু প্রোটিনের মাত্রা অন্য সব মুরগির মাংস থেকে কয়েক গুণ বেশি।

জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা কতটা : শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মাকসুদা বেগম বলেছেন, এর সম্ভাবনা প্রচুর, যদিও এই মুরগির সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা খুব ধীরে বাড়ছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, একটি মুরগি ডিম পাড়ার উপযোগী হতে ছয় মাসের মতো সময় লাগে, এ সময় পর্যন্ত খামারিকে এটি পালন করতে হয়, যেখানে অন্য ব্রয়লার বা সোনালি মুরগি হলে কয়েকবার ডিম দিত সেখানে এটির প্রজনন ক্ষমতা সীমিত।

আরও পড়ুন: ডিম, মুরগির দাম কমানো বাড়ানোর নেপথ্যে যাদের কারসাজি

তবে কাদাকনাথ মুরগির উৎপাদন ব্যয় কম এবং এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। যে কারণে খামারিরা এই মুরগির বাণিজ্যিক উৎপাদনে আগ্রহী হচ্ছেন। এখন বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং কৃষি বিজ্ঞানীরা নানা ধরনের গবেষণা করছেন, যাতে দেশি কোনো জাতের মুরগির সঙ্গে এর কৃত্রিম প্রজনন ঘটানো যায় কিনা, যাতে এর উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ে।

দেশেই চাষ হচ্ছে ঔষধি গুণের কালো মুরগি শিরোনামে সংবাদের তথ্য বিবিসি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার / এমবি