ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রকমেলন হল মাস্কমেলন গোত্রের একটি উচ্চমূল্যের বিদেশি ফল। আরবে একে সাম্মাম (شمام) বলে। ফলের উপরের ত্বক পাথর (রক) এর মত, তাই অস্ট্রেলিয়াতে রকমেলন নামে পরিচিত। উর্দুতে খরবুজ বা খরবুজা, আমেরিকাতে ক্যান্টালোপ, এশিয়াতে মেলন নামে পরিচিত। সুইট-মেলন, সাম্মাম বা মিষ্টি বাংগিও বলেন অনেকে। বর্তমানে বাংলাদেশের মাটিতে চাষ হচ্ছে মরুর রকমেলন।

সাম্মাম দেখতে অনেকটা তরমুজের মত, তবে এর ঘ্রাণ বাঙ্গির মতো, ভালো মিষ্টি, ওপরটা ধূসর, ভিতরটা হলুদ। কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার বলরামপুর গ্রামের মাঠে চাষ করা হয়েছে সাম্মাম। বলরামপুর গ্রামের কাজী আনোয়ার হোসেন এই ফল চাষ করেছেন। সাম্মাম কিনতে ও দেখতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ।

জানা যায়, মালচিং সিটের ভিতরে চারা লাগিয়েছেন। মাচায় গাছ তুলে দেয়া হয়েছে। নেটে বাধা হয়েছে ছোট বড় সাম্মাম। হালকা বাতাসে দুলছে সারি সারি সাম্মাম। কোনটির ওজন তিন কেজির বেশি। ক্ষেতজুড়ে পাকা সাম্মাম ঘ্রাণ ছড়িয়ে আছে। ভিড় করেছেন ক্রেতারা।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ‘বারোমাসি তরমুজ’, বিঘায় ফলন ৮ টন

তরমুজে বিঘায় লাখ টাকা মুনাফা লোকমানের

চিনা বাদামের বাম্পার ফলন, দামে খুশি চাষিরা

নতুন ফসল মুসলি চাষে হতে পারেন লাখপতি, কেজি ১২’শত টাকা

সদর দক্ষিণ উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের মনির হোসেন বলেন, বাংলাদেশ বহু দিনের নিরলস পরিশ্রম, চেষ্টা ও গবেষণায় আবহাওয়া উপযোগী মিষ্টি একটি জাত বাজারজাতের জন্য পছন্দ করেছে। নামকরন হয়েছেঃ “হানি জুস”। এই জাতের বীজে ১০ গ্রামে প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ টি টি বীজ থাকে। বিঘায় প্রায় ২৪০০-২৫০০ চারা বপন করা যায়। বিঘায় প্রায় ৯০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। চারা লাগানোর ৫৫-৬০ দিনে ফলন পাওয়া যায়।

বলরামপুর গ্রামের মোজ্জামেল হক বলেন, এই ফল দেখতে সুন্দর এবং খেতেও বেশ মিষ্টি।

কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ফল আসতে ৯০দিন সময় লাগে। সাম্মাম দেখতে ধূসর রঙের হলেও এটির ভিতরে হলুদ ও স্বাদে কড়া মিষ্টি। তিনি ৪০ শতক জমিতে সাম্মাম চাষ করেছেন। তার ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। তিনি বিক্রি শুরু করেছেন। আশা করছেন ৩ লাখ টাকার ফল বিক্রি করতে পারবেন।

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, রকমেলন বা সাম্মাম এটি মরুর অঞ্চলের ফল। সেখানে এটিকে সাম্মাম বলে। এটিকে কেউ রকমেলন বা সুইটমেলনও বলে। সাম্মামে প্রচুর পরিমাণ বিটা ক্যারোটিন রয়েছে।

এ ছাড়া রয়েছে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক, কপার ও ম্যাঙ্গানিজ প্রভৃতি। তিনি বলেন আনোয়ার হোসেন উদ্যোমী চাষি। এর আগেও তিনি কালো ও হলুদ তরমুজ চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। দেশের মাটিতে চাষ হচ্ছে মরুর রকমেলন সংবাদের তথ্য বাসস থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ