ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বাণিজ্যিকভাবে ভারতীয় চয়ন জাতের আঙুর ফলের চাষ করেছেন মহাসিন আলী (৩৫)। দেশের মাটিতে মিষ্টি আঙুরের চাষ সফলভাবে করতে পারায় আনন্দিত তিনি। প্রতিদিনই যশোরের শার্শা উপজেলার গোগা ইউনিয়নের ইছাপুর গ্রামে তাঁর বাগান দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন অসংখ্য দর্শনার্থী।

এই চাষী জানান, বছরে তিনবার ফলন ধরে আঙুর গাছে। প্রথম ধাপে কম ফলন হলেও পরে প্রত্যেক গাছ থেকে প্রায় ২-৩ মণ করে আঙুর বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি।

মহাসিন আলী বলেন, ইউটিউবে এক বছর আগে দেখেছিলাম, বাংলাদেশের মাটিতে মিষ্টি আঙুর চাষ হচ্ছে। তাই আগ্রহী হয়ে ২০২১ সালের শেষদিকে ১৫ শতাংশ জমির পরিচর্যা ও প্রস্তুতি নিই। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঝিনাইদহ জেলা থেকে ভারতীয় চয়ন জাত সংগ্রহ করে ৩৬টি চারা রোপণ শেষে পরিচর্যা শুরু করি। জমিতে শুধু পানি ও জৈব সার ব্যবহার করেছি। রোপণের তিন মাসেই গাছে ফুল আসে। আট মাসের মধ্যেই আঙুর আসে। এতে খরচ হয়ছে ৯০ হাজার টাকা।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

এলাচ ২৫০০, জিরার কেজিতে বাড়লো ২০ টাকা

ভারতীয় এলাচের কেজিতে কমলো ২০০ টাকা

অপ্রধান মসলা ধনিয়া চাষে ধনী ময়েজ

উপজেলার ইছাপুর গ্রামের মহাসিন আলী ১৫ শতাংশ জমির ওপর এ দৃষ্টিনন্দন আঙুর বাগান গড়ে তুলেছেন। যার প্রায় গাছের ব্যাপক ফলন দেখা যায়। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ভাইরাসের কারণে কিছু আঙুরে কালো স্পট দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে কিছুটা চিন্তিত তিনি।

এর আগে শার্শার বেশ কয়েকটি এলাকায় আঙুর চাষ হলেও তা সুস্বাদু ছিল না। তবে মহাসিন আলী এবারই প্রথম এ চাষে সফল হয়েছেন বলে দাবি করেন। জমিতে গাছ রোপণের মাত্র ২-৩ মাসে ফল আসতে শুরু করে।

স্বাদের দিক থেকে কিছু আঙুর প্রচণ্ড টক আবার কিছু আঙুর মিষ্টি। মহাসিন আলী মিষ্টি আঙুর চাষ করে প্রমাণ করলেন এ মাটিতে মিষ্টি ও সুস্বাদু আঙুর উৎপাদন সম্ভব। স্থানীয়রা বাণিজ্যিকভাবে এ আঙুর চাষ করলে এটি জনপ্রিয় হবে। সেইসঙ্গে আঙুর চাষ লাভজনক বাণিজ্যে রূপ নেবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখবে। তার দেখাদেখি এখন শার্শায় অনেকে আঙুর চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

নওগাঁর মহাদেবপুরে মিষ্টি আঙ্গুর চাষে সফল আইনজীবী সামিম

দেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে অম্লমধুর লটকন

চেরি টমেটোর চার নতুন জাত উদ্ভাবন

বাড়ির ছাদে মাল্টা চাষে তাক লাগিয়েছেন রাজশাহীর সেন্টু

তিনি বলেন, এ আঙুর বাজারজাত করার মতো পরিপক্ক হলে অবশ্যই মিষ্টি সুস্বাদু হবে। মিষ্টি আঙুর ফলের গাছ থেকে বিপুল পরিমাণের চারা গাছ তৈরি করে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন ও সরবরাহের পরিকল্পনা চলছে। স্থানীয়ভাবে আঙুর চাষ হলে ফরমালিনমুক্ত ও কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি ছাড়া মানসম্মত ফল পাওয়া যাবে। সরকারি-বেসরকারিভাবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সহযোগিতা করা হলে আর্থিক লাভবান হওয়া যাবে। পাশাপাশি বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী হওয়ার পথ সুগম হবে।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ কুমার মন্ডল বলেন, আমরা আঙুর চাষের খবরটি শুনেছি। এখন আঙুর চাষে প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বাদ বাড়ানো যায় কি না চেষ্টা করতে হবে। এ বিষয়ে কৃষক মহাসিনকে সব সময় কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা করা হবে।

দেশের মাটিতে ভারতীয় আঙুর চাষে সফল মহাসিন সংবাদের তথ্য জাগো নিউজ থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ