ইউসুফ আলী সুমন, নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় ফের অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। পাইকারি ও খুচরা বাজারে গত এক সপ্তাহে কেজিতে বেড়েছে ৩ থেকে ৪ টাকা। সেইসাথে মোকাম ও খুচরা বাজার থেকে অনেকটা উধাও হয়ে গেছে মোটা চাল।

চালের দামের ঊর্ধ্বগতি যেন থামছেই না। দোকান ও আড়তে এক সপ্তাহ আগে মোটা চাল ৩৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও, বর্তমানে তা প্রতিকেজিতে ৩-৪ বেড়ে ৪২-৪৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।ফলে বেকায়দায় পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ।

গত বোরো মৌসুমের শুরুতে দেশের অন্যতম এ মোকামে প্রতি কেজি মোটা চাল পাইকারিতে ৩৭ টাকা ও খুচরায় ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে শুধু মোটা চালই নয়; প্রকারভেদে প্রতি কেজি নাজিরশাইল ছিল ৪৭-৪৮ টাকা, বর্তমানে ৫০-৫২ টাকা। কাটারি ছিল ৪০-৪৪ টাকা, বর্তমানে ৪৫-৪৮ টাকা। ২৮ জাতের চাল ছিল ৪০-৪৪ টাকা, বর্তমানে ৪৪-৫৬ টাকা। জিরাশাইল ছিল ৪২-৪৪ টাকা, বর্তমানে ৪৬-৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ চালের দাম কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উত্তম সরকার বলেন, গত বছরে যে মোটা চাল ২৬-২৭ টাকা বিক্রি করেছি এখন তা ৪১ থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। বর্তমান বাজারে সবচেয়ে বেশি দাম মোটা জাতের চালের। তাই চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।

আরোও পড়ুন:নওগাঁর বাজারে মোটা চাল উধাও, বিপাকে স্বল্পআয়ের মানুষ

সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়ালে শাস্তির ব্যবস্থা

নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, সরকার নির্ধারিত ক্রয়মূল্যের সঙ্গে উৎপাদন খরচের বিস্তর ফারাক হওয়ায় সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ করে চালকলের মালিকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। লোকসান সত্ত্বেও চুক্তি অনুযায়ী গুদামে চাল দেওয়ার জন্য আমরা সংগঠনের পক্ষ থকে মিলারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। এরপরও মিলাররা গুদামে চাল দিতে আগ্রহী হচ্ছেন না।

নওগাঁর মফিজ উদ্দীন অটোমেটিক রাইসমিল মালিক তৌফিকুর রহমান ও শেখ ফরিদ রাইসমিল মালিক শেখ ফরিদ বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ ধান না থাকার কারণে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে প্রতিটি মিলে প্রতি কেজি চাল ১ টাকা বাড়লে খুচরা বাজারে ৩ থেকে ৪ টাকা বাড়ে, এর কারণ নির্ণয়ের জন্য সরকারের বিশেষ নজরদারি দরকার বলে মনে করছেন তারা।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদ বলেন, বাজারে চালের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য অবৈধ মজুতদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।

সম্প্রতি খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার চালের বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন। সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়ানো হলে চরম মূল্য দিতে হবে বলে ব্যবসায়ীদের হুঁশিয়ার করেছিলেন খাদ্যমন্ত্রী।

নওগাঁয় ফের অস্থির চালের বাজার। সাধারন মানুষ ও সুশীল সমাজ চালের বাজার এখনই নিয়ন্ত্রণ করার দাবি জানিয়েছেন।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ