কৃষিবিদ মো. তৌফিক আরেফীন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ঔষধি গুণসম্পন্ন পানীয় হিসেবে খাওয়া হয় নারকেল। এছাড়া  বিভিন্ন রকম সুস্বাদু খাবার তৈরি হয়। এ নারকেল গাছের রোগ-বালাইও কম নয়। আজ নারকেল গাছের আঠাঝরা রোগের সমাধান কিভাবে করবেন এ বিষয়ে জানাব:-

নারকেল গাছে পরিচর্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নারিকেল গাছের কিছু নিয়মিত পরিচর্যা করলে গাছের পুষ্টি উপাদানে ভারসাম্য আসে, পোকা ও রোগবালাই কম হয় এবং ফলন বৃদ্ধি পায়। এর মধ্যে আছে নিয়মিত নারিকেল গাছ বাছাই বা গাছ ঝাড়া, সুষম সার ও সার ও সেচ প্রয়োগ, ইঁদুর দমন এবং সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করা। ঝুনা নারিকেল বা ডাব সংগ্রহের সময় গাছের মাথা পরিষ্কার করে দেয়া ভালো। সাথে সাথে মরা ও হলুদ পাতা ফেলে দিতে হবে।

পড়তে পারেন: পেঁপের ফল ঝরার কারণ ও প্রতিকার

নারকেল গাছের সার প্রয়োজন হয়। নারিকেল গাছের গোড়ায় মাটিতে পানি ও খাবার কম থাকলে কচি ডাব ঝরে পড়ে। পটাশিয়ামের অভাবে কচি ডাব বেশি ঝরে। এক্ষেত্রে মাটিতে পটাশিয়াম ও নাইট্রোজেন জাতীয় সার ব্যবহার করতে হবে। নারিকেল গাছের গোড়ায় চারদিকে ১.৮ মিটার দূরে বৃত্তাকার গর্ত করে ইউরিয়া ৪ কেজি, এমওপি ৬ কেজি, টিএসপি ১ কেজি এবং সামান্য লবণ দিতে হবে। খেয়াল রাখবেন লবণাক্ত এলাকায় লবণ দেয়া উচিৎ না।

এ ফলজ গাছের পরিচিত একটি সমস্য হলো আঠাঝরা। এ সমস্যাটিকে নারকেল গাছের কান্ডের ব্লিডিং বলে। রোগের আক্রমণের শুরুতে কা-ে ছোট ছোট ফাটল দেখা যায়। ফাটলগুলো থেকে লালচে বাদামি রঙের রস ঝরে। আস্তে আস্তে গাছ নষ্ট হয়। এ সমস্যা প্রতিকারের জন্য আক্রান্ত স্থান ছুরি বা দা দিয়ে চেঁছে পরিষ্কার করে বর্দোপেস্ট লাগাতে হয় এবং এক লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম তুঁত ও ১০০ গ্রাম চুন মিশিয়ে বর্দোপেস্ট তৈরি করতে হয়। বর্দোপেস্ট নারকেল গাছের আক্রান্ত স্থানে বেশ ক’বার লাগালে এ সমস্যাটি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এছাড়া পাতার দাগ পড়া রোগে নারিকেলের পাতায় বিভিন্ন আঁকারের ধূসর-সাদা দাগ পড়ে। কয়েকটি দাগ মিলে বড় দাগের সৃষ্টি হয়।  আক্রমণ বেশি হলে পাতা শুকিয়ে যায়। কুঁড়ি পচা বা পাতার রোগ দেখা দিলে গাছের মাথা পরিষ্কার করে মাথায় মিশ্রণ ছিটাতে হবে।

অথবা ৪০ গ্রাম ডায়থেন এম ৪৫ বা কপার অক্সিক্লোরাইড কুপ্রাভিট ৫০ ডব্লিউপি ১২ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যায়। বাংলাদেশে নারিকেলের ফলন অত্যন্ত কম। প্রতি বিঘা জমিতে বছরে গড়ে প্রায় ৪০০ কেজি নারিকেলের ফলন হয়।

নারকেল গাছের আঠাঝরা রোগের সমাধান লিখেছেন কৃষি তথ্য সার্ভিসের উপ-প্রধান তথ্য অফিসার কৃষিবিদ মো. তৌফিক আরেফীন।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ