ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: নারিকেল অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর একটি ফল। নারিকেলের পানি, নারিকলের শ্বাস, নারিকেলের দুধ ও নারিকেলের তেল পুষ্টিগুণে ভরপুর এক উৎকৃষ্ট খাবার। এসবের পাশা-পাশি নারিকেলের ভেষজ গুণও রয়েছে।

আসুন নারিকেলের ভেষজ গুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিই:

পরিচিতি:
নারিকেল এরিকাসি পরিবারে কোকোস গণের গুরুত্বপূর্ণ ফল । এরা এই গণের একমাত্র জীবিত প্রজাতি। নারিকেল গাছ বিরাট উঁচু আকারের হয় এবং এর কোনো ডালপালা গজায় না । কচি নারিকেলকে ডাব বলে । নারিকেলের উপর যে স্তর থাকে তাকে ছোবড়া বলে। ছোবড়ার পরে একটি কঠিন খোলা বা খোলস থাকে । এই কঠিন খোলার ভিতরে সাদা রঙের শাঁস ও জল থাকে।

আরও পড়ুন: জেনে নিন সফেদার স্বাস্থ্য উপকারিতা

ব্যবহার: কচি নারিকেলকের ডাব পানীয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি নারিকেল গাছের প্রতিটি অঙ্গই কোন না কোন কাজে লাগে। এছাড়া ঝাল থেকে মিষ্টি- সব রকম রান্নায়ই নারিকেল ব্যবহার করা যায়। নারিকেল যেমন কাঁচা খাওয়া যায়, তেমনই তৈরি করা যায় মজার সব পিঠা, পায়েস, নাড়ু, সন্দেশ ইত্যাদি।

পুষ্টিগুণ: প্রতি ১০০ গ্রাম নারকেলে আছে ৩৫৪ ক্যালরী, ৩৩ গ্রাম ফ্যাট, ২০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ৩৫৬ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ১৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও ৩.৩ গ্রাম প্রোটিন আছে। এছাড়াও ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি-৬ ও বি-১২ আছে।

ভেষজ গুণ: এটি পিত্তনাশক ও কৃমিনাশক। ফলের মালা/আইচা পুড়িয়ে পাথরবাটি চাপা দিয়ে পাথরের গায়ে যে গাম/ কাই হয় তা দাদ রোগের জন্য মহৌষোধ।

আরও পড়ুন: জেনে নিই মাশরুমের পুষ্টিগুণ

উপকারিতা:

রোগ প্রতিরোধ: নারিকেল রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়ায়। লিভারের অসুখের ক্ষেত্রে হেপাটাইটিস সি, জন্ডিস ও অন্যান্য লিভারের অসুখে বেশ ভালো কাজ দেয় নারিকেলের দুধ।

শক্তি যোগায়: নারিকেলে অতিরিক্ত ক্যালরি থাকায় তাৎক্ষনিকভাবে শরীরে শক্তি যোগায়। তাই কাজের মাঝে ক্লান্তি আসলে বা হালকা ক্ষুধা পেলে নারিকেল খান, সাথে সাথে কর্মউদ্দীপনা জেগে উঠবে।

চুল ভালো রাখে: চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে নারিকেল। নিয়মিত নারিকেল খেলে মাথায় খুশকি ও শুষ্কতা দূর হয় এবং চুল পড়া বন্ধ হয়।

ওজন কমায়: নারিকেল অতিরিক্ত ওজন কমাতে সহায়তা করে। এটি খুব অল্প ক্যালোরিতেই মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে শরীরে শক্তি যোগায়। নারিকেল খেলে সহসা ক্ষুধাও লাগে না তাই ওজন কমে।

হার্ট সুস্থ রাখে: নারিকেল রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে হার্টের সমস্যা দূর করে। নারিকেলে যে ফ্যাটি এসিডের চেইনগুলো আছে সেগুলো কোলেস্টেরল বাড়ায় না বরং আথেরোসক্লেরোসিসের ঝুঁকি কমিয়ে হার্ট ভালো রাখতে সহায়তা করে।

ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণ: নারিকেল রক্তের ইন্সুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে এবং ডায়াবেটিস জনিত কারণে শরীরের ক্ষতি রোধ করে।

ত্বক কোমল করে: ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রেখে ত্বককে নরম রাখতে সাহায্য করে নারিকেল। নিয়মিত নারিকেল খেলে ত্বক কোমল ও সুন্দর হয়। এছাড়াও নারিকেল ত্বকে সহজে বয়সজনিত বলিরেখা পড়েতে দেয় না।

আরও পড়ুন: মসুর ডালের অবিশ্বাস্য গুণ

ক্যান্সার দূরে রাখে: নিয়মিত নারিকেল খেলে ব্রেস্ট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার ও অন্যানো আরো কিছু ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায় অনেকখানি।

দাঁত ও হাড় মজবুত করে: হাড়ে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম শোষণ করতে সাহায্য করে নারিকেল। এটি দাঁত ও হাড়ের গঠনে ভূমিকা রাখে। অস্ট্রিওপোরেসিস, অস্ট্রিও আর্থারাইটিস, যে কোনও হাড় সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসায় নারকেল ঔষধ হিসেবে কাজ করে।

হজমশক্তি বাড়ায়: নারিকেল হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে এবং বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেল ও এমাইনো এসিড শোষন করে নিতে সহায়তা করে।

নারিকেলের ভেষজ গুণ ও উপকারিতা শিরোনামে লেখাটি কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার / এমবি