ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কচুতে ভিটামিন এ এবং প্রচুর পরিমানে লৌহ থাকে। বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই কমবেশি কচুর চাষ হয়। যে সমস্ত কচু দাড়াঁনো পানিতে চাষ করা যায় তাকে পানি কচু বলে। আমাদের দেশে কচু একটি সুস্বাদু সবজি হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের পানি কচুর বিভিন্ন নাম রয়েছে যেমন নারিকেল কচু, জাত কচু, বাশঁ কচু ইত্যাদি। আসুন জেনে নিই লতিরাজ কচুর চাষ পদ্ধতি।

পানি কচু চাষের জন্য উপযুক্ত পলি দোআঁশ ও এটেল মাটি । লতিরাজ বা পানি কচুর বৈশিষ্ট্য হলো লতি লম্বায় ৯০-১০০ সেমি. সামান্য চেপ্টা, সবুজ । লতি সিদ্ধ করলে সমানভাবে সিদ্ধ এবং গলা চুলকানি মুক্ত হয়। বোঁটা এবং পাতার সংযোগস্থলের উপরিভাগের রং বেগুনি। জীবনকাল ১৮০-২১০ দিন। বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই এর চাষাবাদ করা যায়।

এর লতি ফলন হেক্টর প্রতি : ২৫-৩০ টন হয়ে থাকে। কান্ড সাধারণত ১৮-২ মিটার লম্বা হয়। বাজারে ৫০০ গ্রাম অথবা সুবিধেজনকভবে আঁটি করে বিক্রি করা হয়। প্রতি কেজি ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। রোপণের ২ মাস পর থেকে ৭ মাস পর্যন্ত লতি হয়ে থাকে।

চারা রোপণ:
আগাম ফসলের জন্য কার্তিক (মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য নভেস্বর)| নাবী ফসলের জন্য মধ্য ফাল্গুন থেকে মধ্য বৈশাখ (মার্চ-এপ্রিল) মাসে লাগানো যায়। দক্ষিণাঞ্চলে বৎসরের যেকোন সময় লাগানো যায়। প্রতি শতকে প্রায় ১৫০টি লতা রোপণের জন্য প্রয়োজন। জমি ভালভাবে তৈরি করে লাইন থেকে লাইন ২ ফুট (৬০ সে.মি) এবং গাছ থেকে গাছ ১.৫ ফুট (৪৫ সে.মি) রাখতে হবে।

সার ব্যবস্থাপনা:
সারের নাম সারের পরিমাণ ( প্রতি শতকে)
ইউরিয়া ৬০০ গ্রাম
টিএসপি ৫০০ গ্রাম
এমওপি ৭৫০ গ্রাম
গোবর ৫০ কেজি

গোবর, টিএসপি এবং এমওপি সার জমি তৈরির শেষ সময়ে প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া ২-৩ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হয়, তবে প্রথম কিস্তি রোপণের ২০-২৫ দিনের মধ্যে প্রয়োগ করা দরকার।

সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা:
পানি কচুর গোড়ায় দাড়াঁনো পানি রাখতে হবে এবং দাঁড়ানো পানি মাঝে মাঝে নাড়িয়ে দিতে হবে। লতিরাজ জাতের জন্য দাঁড়ানো পানির গভীরতা ৮-১০ সে.মি হওয়া দরকার।

আরোও পড়ুন: উন্নতজাতের অধিক ফলনশীল নেপিয়ার ঘাস চাষ পদ্ধতি

যেভাবে মানুষের শরীর থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করা হয়

রোগ ব্যবস্থাপনা:
কচুর পাতার মড়ক রোগ

ক্ষতির নমুনা:
পাতার উপর বেগুনি থেকে বাদামি রংয়ের গোলাকার দাগ পড়ে। পরবর্তীতে এ সমস্ত দাগ আকারে বেড়ে একত্রিত হয়ে যায় এবং পাতা ঝলসে যায়। পরে তা কচু ও কন্দে বিস্তার লাভ করে।

অনুকূল পরিবেশ:

উচ্চ তাপমাত্রা, আর্দ্র আবহাওয়া ও পর পর ৩-৪ দিন বৃষ্টি থাকলে এ রোগের মাত্রা খুব বেড়ে যায়।

ব্যবস্থাপনা:
রোগ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম রিডোমিল এম জেড-৭২ ডব্লিউ অথবা ডাইথেন এম ৪৫ মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ৩ থেকে ৪ বার প্রয়োগ করতে হবে। প্রয়োগ করার আগে ট্রিকস মিশিয়ে নিতে হয়।

পানি কচু বা লতিরাজ কচুর চাষ পদ্ধতি শিরোনামে সংবাদের তথ্য কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।