মৎস্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: শোল মাছ সাধারণত খালে-বিলে পাওয়া যায়। বর্তমানে বিলের মাছ হিসেবে শোল বিলুপ্তপ্রায়। তাই বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিউট বলছে পুকুরে শোল মাছ চাষ করতে পারেন চাষিরা। কেজিপ্রতি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পাওয়ায় মাছচাষিরা পুকুরে শোল মাছ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

শোল মাছ সম্পর্কে কিছু তথ্য জানা প্রয়োজন। মা শোল মাছই নিজেদের মতো করে ডিম নার্সিং ও পোনা লালন করে। শত্রু মাছের কবল থেকে নিজেই ঠেকায়। পুকুরে শোল মাছ চাষের ক্ষেত্রে প্রতি শতাংশে ২০ থেকে ৩০ টি শোল মাছের পোনা দেওয়া যেতে পারে। খাদ্যের গুনগত মানের উপর ভিত্তি করে শোল মাছ ৫ থেকে ৭ মাসে বিক্রয়ের উপযোগি হয়। শোল (বৈজ্ঞানিক নাম: Channa striata) (ইংরেজি: snakehead murrel) হচ্ছে Channidae পরিবারের Channa গণের একটি স্বাদুপানির মাছ।

শোল মাছের পুকুর প্রস্তুতি
এ মাছ যে কোন পুকুরেই চাষ করা সম্ভব। উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে দিবার জন্য যে পুকুরে শোল মাছ চাষ করবেন সে পুকুরে কচুরি পানা ও কমলি লতা থাকতে হবে। শোল মাছের পুকুরে কচুরিপান দিলে ভাল। খেয়াল রাখতে হবে কচুরি পানা যেন পুকুরে ভরে না যায় এজন্য পুকুরের তিন ভাগের এক ভাগ কচুরি পানা থাকবে। েশোল মাছের পুকুরের চার পাশে কমপক্ষে ৫ ফুট উচ্চতা করে জাল দিয়ে বেড়া দিতে হবে। কারন বর্ষার সময় শোল মাছ লাফ দিয়ে পুকুর থেকে বের হয়ে যেতে পারে।

পোনা মজুত
বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে শোল মাছ চাষ না হওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে সংগ্রহের ওপর জোর দিতে হবে। বৈশাখ মাস শোল মাছের প্রজনন মৌসুম। বৈশাখ মাসের প্রথম থেকে শোল মাছ বাচ্চা দিতে শুরু করে। বাচ্চাগুলো এক ঝাঁকে থাকে। সেই সময় হাওর-বাঁওড়, পুকুর থেকে সপ্তাহখানেক বয়সের বাচ্চা সংগ্রহ করতে হবে। পোনা পাওয়া না গেলে বড় শোল মাছ সংগ্রহ করে পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে। এককভাবে প্রতি শতাংশে ১০টি দেয়া যেতে পারে। মিশ্র পদ্ধতিতে চাষের জন্য প্রতি শতাংশে ৪টি। একটি প্রাপ্তবয়স্ক শোল মাছ লম্বায় ২.৫-৩ ফুট হতে পারে।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

৩০ বিঘা জমিতে চাষ হচ্ছে রঙিন মাছ

টাকি-শোল মাছের পোনা ধরলে জেল জরিমানা

পুকুরে মাছের ক্ষত রোগ দেখা দিয়েছে, কী করবেন?

মাছ ছাড়ার আগে পুকুর প্রস্তুতির ৯ ধাপ ও কয়েকটি সতর্কতা

খাদ্য
শোল মাছ সাধারণত খৈল বা কুড়া দিয়ে বানানো খাবার খায় না। ছোট মাছই এর প্রধান খাদ্য। পোনা মাছের প্রিয় খাদ্য শুঁটকির গুঁড়া। সেজন্য পোনা মাছকে খাবার হিসেবে চিংড়ি শুঁটকির গুঁড়া ভালোভাবে পিষে দিতে হবে। এভাবে ১৫ দিন খাওয়ানোর পর পোনাগুলো প্রায় ২/৩ ইঞ্চি হবে। ২/৩ ইঞ্চি পোনা মজুদের পর খাদ্য হিসেবে কার্পজাতীয় মাছের ধানীপোনা দেয়া যেতে পারে; সঙ্গে ছোট ছোট ব্যাঙ বা ব্যাঙাচি দেয়া যেতে পারে। আর বড় মাছের জন্য ছোট ছোট মাছ, তবে মরা টাটকা মাছ খেতে দিলে এরা খুব খায়।

মিশ্র চাষ
আমাদের দেশে শোল মাছের একক চাষের সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ এত কাঁচা মাছ, শুঁটকি, ব্যাঙ বা ব্যাঙাচি জোগান দেয়া সম্ভব নয়। তাই মিশ্র মাছের সঙ্গে শোল মাছের চাষ করা যেতে পারে। ৬ মাসে একেকটি শোল মাছের ওজন ৭০০-১০০০ গ্রাম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়া পুকুরে চাষ করার কারণে এ দামী শোল মাছ চুরির সম্ভাবনা থাকে। তাই নিয়মিত পাহারার ব্যবস্থা করতে হবে। রোগ বালাইয়ের দেখা দিলে মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ নিতে হবে। পুকুরে চাষ করুন দামী শোল মাছ সংবাদের তথ্য কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ